ঢাকা ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমার সীমান্তে সতর্ক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, উখিয়া
  • সময় ১১:১৩:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 23

মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহীদের সাথে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে চলমান যুদ্ধের প্রভাবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে টহল তৎপরতা জোরদার করে চূড়ান্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে ( বিজিবি)। তবে এর প্রভাবে বিচ্ছিন্নভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।

এদিকে, সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক) মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন-২ বিজিবি এর দায়িত্বপূর্ণ বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত এলাকায় নাফ নদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। ২ বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৬ হতে বিআরএম-১০ পর্যন্ত নাফ নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সমূহে এবং বাংলাদেশের জলসীমায় অবস্থিত দ্বীপের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৌ টহল অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও সীমান্তের যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

এর আগে (৮ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি জানান, রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর পুরোপুরি এখন তারা দখলে নিয়েছে। এ বিষয়ে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি জোবায়ের বলেন, আরাকান আর্মি মংডু শহরও দখলে নিয়েছে বলে আমরাও বিভিন্ন ভাবে খবর পাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের মাঝে উদ্বেগ বিরাজ করছে।

বিজিবির টহল জোরদার
বিজিবির টহল জোরদার

বিষয়টি নিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরবর্তী সীমান্ত পুরোপুরি দখলে নিয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল থেকে নাফনদী সংলগ্ন তাদের জলসীমানায় সকল ধরনের নৌযান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই নাফ নদী সীমান্ত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এই পথে সকল ধরনের নৌযান চলাচল না করতে মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে, অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে অনেক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে জান্তা বাহিনীর অনেক সদস্য ও রোহিঙ্গাদেরকে আটক করে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ওপারে চলমান বিমান ও স্থল হামলায় বিকট শব্দে আতঙ্কে দিনযাপন করছে টেকনাফ সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা।

বিজিবি
বিজিবি

স্থানীয়রা জানান, গত কিছুদিন বন্ধ থাকার পর মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বাণিজ্যিক শহর মংডু টাউনশিপের দক্ষিণের কয়েকটি গ্রামে সরকারি বাহিনী নতুন করে বিমান হামলা চালাচ্ছে বলে জানান তারা। এতে হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে বিমান হামলা করা হচ্ছে বলে জানান, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন।

তিনি বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক শহর মংডু টাউনশিপ এখনো কোনো বাহিনী দখলে নিতে পারেনি বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে শহরটি দখলে নিতে যুদ্ধ আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। যার রেষ বাংলাদেশে এসে পড়ছে।

শেয়ার করুন

মিয়ানমার সীমান্তে সতর্ক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ

সময় ১১:১৩:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহীদের সাথে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে চলমান যুদ্ধের প্রভাবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে টহল তৎপরতা জোরদার করে চূড়ান্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে ( বিজিবি)। তবে এর প্রভাবে বিচ্ছিন্নভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।

এদিকে, সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক) মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন-২ বিজিবি এর দায়িত্বপূর্ণ বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত এলাকায় নাফ নদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। ২ বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৬ হতে বিআরএম-১০ পর্যন্ত নাফ নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সমূহে এবং বাংলাদেশের জলসীমায় অবস্থিত দ্বীপের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৌ টহল অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও সীমান্তের যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

এর আগে (৮ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি জানান, রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর পুরোপুরি এখন তারা দখলে নিয়েছে। এ বিষয়ে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি জোবায়ের বলেন, আরাকান আর্মি মংডু শহরও দখলে নিয়েছে বলে আমরাও বিভিন্ন ভাবে খবর পাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের মাঝে উদ্বেগ বিরাজ করছে।

বিজিবির টহল জোরদার
বিজিবির টহল জোরদার

বিষয়টি নিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরবর্তী সীমান্ত পুরোপুরি দখলে নিয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল থেকে নাফনদী সংলগ্ন তাদের জলসীমানায় সকল ধরনের নৌযান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই নাফ নদী সীমান্ত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এই পথে সকল ধরনের নৌযান চলাচল না করতে মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে, অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে অনেক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে জান্তা বাহিনীর অনেক সদস্য ও রোহিঙ্গাদেরকে আটক করে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ওপারে চলমান বিমান ও স্থল হামলায় বিকট শব্দে আতঙ্কে দিনযাপন করছে টেকনাফ সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা।

বিজিবি
বিজিবি

স্থানীয়রা জানান, গত কিছুদিন বন্ধ থাকার পর মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বাণিজ্যিক শহর মংডু টাউনশিপের দক্ষিণের কয়েকটি গ্রামে সরকারি বাহিনী নতুন করে বিমান হামলা চালাচ্ছে বলে জানান তারা। এতে হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে বিমান হামলা করা হচ্ছে বলে জানান, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন।

তিনি বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক শহর মংডু টাউনশিপ এখনো কোনো বাহিনী দখলে নিতে পারেনি বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে শহরটি দখলে নিতে যুদ্ধ আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। যার রেষ বাংলাদেশে এসে পড়ছে।