কেড়ে নেয়া হয়েছিল এজহারের কপি
মামলা করতে গিয়ে টার্গেট মুক্তিযোদ্ধা কানুর ছেলে
- সময় ১০:৫৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 23
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে (কানু) (বীর প্রতীক) গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনার পর তার ছেলেকেও টার্গেট করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে সেই মামলার কপি আদালত প্রাঙ্গনেই কেড়ে নিয়েছিল দুর্বৃত্তরা এমন অভিযোগ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কানুর ছেলে বাতিসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বিপ্লব।
তবে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে অভিযোগ গ্রহণ করে নথিভুক্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তার-উজ-জামান।
ওসি বলেন, ‘মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি আবুল হাশেম (পলাতক), দ্বিতীয় নম্বর আসামি অহিদুর রহমান ও তৃতীয় নম্বর আসামি স্থানীয় রাসেল মজুমদার।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে পুলিশ যে পাঁচ জনকে আটক করেছে, তাদের মধ্যে ইসমাইল হোসেন মজুমদারকে (৪৩) মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। জামাল উদ্দিন মজুমদার ও ইলিয়াছ ভূঁইয়াকে সাক্ষী করা হয়েছে। বাকি দুজনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে মামলার প্রধান আসামিসহ বাকিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘মামলার এজাহারে তিনি ১০০ কোটি টাকার মানহানির অভিযোগ তুলেছেন। আমরা তা গ্রহণ করেছি। এই বিষয়ে এখনই আর বেশি বলা যাচ্ছে না।’
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর ছেলে ও বাতিসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বিপ্লব মোবাইল ফোনে বলেন, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) আমরা ফেনী আদালতে মামলা করতে যাই। আমাদের সঙ্গে আমাদের আইনজীবী ছিলেন। সেখানে আমাদের কাছ থেকে হামলা করে মামলার এজাহারের কপি নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর চৌদ্দগ্রামের ওসিকে জানালে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে এজাহার পাঠাতে বলেন। পরে রাতে হোয়াটসঅ্যাপে এজাহার পাঠিয়েছি। আজ চৌদ্দগ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধিদল ও স্বজনদের মাধ্যমে মামলার অনুলিপি থানায় পাঠিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ঘটনায় জড়িত তাদের আমরা চিনি। তাদের নামই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। কাউকে অযথা আমরা হয়রানি করতে চাই না। এরা আমাদের প্রতিবেশী।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ পাঁচ জনকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে ইসমাইল হোসেন লাঞ্ছনাকারীদের সঙ্গে ছিলেন। জামাল উদ্দিন মজুমদার ও ইলিয়াছ ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে ছিলেন। তবে তারা এ ঘটনায় জড়িত নয়। তাই মামলায় তাদের সাক্ষী করা হয়েছে। বাকি দুজনের বিষয়ে আমরা জানি না।’
উল্লেখ্য, রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষক লীগ নেতা আবদুল হাই কানু বাজার করতে বের হন। এ সময় তাকে স্থানীয় কয়েকজন ধরে নিয়ে যায় কুলিয়ারা হাইস্কুলের সামনে। সেখানে তারা তার গলায় জুতার মালা পরায় এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করে। এ ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পালিয়েছেন। ঘটনার পর দেশজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
তারা হলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা গ্রামের ইসমাইল হোসেন মজুমদার, মো. জামাল উদ্দিন মজুমদার (৫৮), ইলিয়াছ ভূঁইয়া (৫৮), স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও পাশের নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (৪৮) এবং চাঁদপুর সদরের মইশাদী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে ইমতিয়াজ আবদুল্লাহ সাজ্জাদ (১৯)।