ঢাকা ০২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন শাহরিয়ার

সিনিয়র প্রতিবেদক, কক্সবাজার
  • সময় ১০:৫৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 5

মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন শাহরিয়ার

কক্সবাজারে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী হত্যা মামলার তিন আসামি আদালতে দায় স্বীকার করেছেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া আসামিরা বলেন, গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা। কক্সবাজার হোটেল সিগাল পয়েন্টের সামনের বালুচরে সৈকতে বসানো চেয়ারে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের সদ্য অপসারিত কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী ওরফে টিপু (৫৪) এবং ঋতু নামের এক তরুণী। রাত ৮টার দিকে চেয়ার ছেড়ে তারা দু’জন সৈকত থেকে হেঁটে সিগাল হোটেলের দিকে যাচ্ছিলেন। ঋতু রব্বানীর আগে আগে আগে হাঁটছিলেন। পেছনে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে হাঁটছিলেন গোলাম রব্বানী।

জবানবন্দিতে তারা বলেন, ঋতুর ইশারায় আগ থেকেই গোলাম রব্বানীকে নজরদারিতে রাখেন শেখ শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পুসহ চারজন। সৈকত থেকে পাকা সড়কে ওঠার জন্য গোলাম রব্বানী যখন ঝাউবাগানের ভেতরে চলে আসেন, তখন সামনে এগিয়ে যান শেখ শাহরিয়ার। তারপর রাতের অন্ধকার থেকে পেছন দিক থেকে রাব্বানীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে একটি গুলি করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটে পড়েন রব্বানী। এরপর গোলাম রসুলকে (২৫) সঙ্গে নিয়ে শেখ শাহরিয়ার রিকশায় উঠে চলে যান কক্স কুইন রিসোর্টে। আর ঋতু ও রিয়াজ নামের অপর দুজন সরে পড়েন অন্যদিকে।

প্রাণ গেল সাবেক কমিশনারের
প্রাণ গেল সাবেক কমিশনারের

জবানবন্দি দেওয়া তিনজন হলেন ঋতু (২৪), শেখ শাহরিয়ার ইসলাম (২৭) ও গোলাম রসুল (২৫)। আসামিরা সবাই খুলনার বাসিন্দা।

এর আগে গত সোমবার রাতে মৌলভীবাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় তাদের আদালতে তোলা হয়।

গত বুধবার কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে জানান, চাচা শহীদুলের হত্যার প্রতিশোধ নিতে শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পু সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানীকে হত্যা করেছেন। অন্য দুই আসামি ঋতু ও গোলাম রসুলও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছেন। হত্যার জন্য আসামিরা কক্সবাজারকে উপযুক্ত স্থান হিসেবে বেছে নেন।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ঋতু সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজিনের আদালতে, শাহরিয়ার ইসলাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদের আদালতে এবং গোলাম রসুল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া জবানবন্দি শেষ হয় রাত ৯টায়।

জবানবন্দি দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান। তিনি বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।’

উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারি রাতে কক্সবাজার সৈকতে সিগাল হোটেলের সামনে ঝাউবাগানে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় রব্বানীকে। তাঁর বাড়ি খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকার দৌলতপুরে। তিনি খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি।

শেয়ার করুন

মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন শাহরিয়ার

সময় ১০:৫৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

কক্সবাজারে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী হত্যা মামলার তিন আসামি আদালতে দায় স্বীকার করেছেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া আসামিরা বলেন, গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা। কক্সবাজার হোটেল সিগাল পয়েন্টের সামনের বালুচরে সৈকতে বসানো চেয়ারে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের সদ্য অপসারিত কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী ওরফে টিপু (৫৪) এবং ঋতু নামের এক তরুণী। রাত ৮টার দিকে চেয়ার ছেড়ে তারা দু’জন সৈকত থেকে হেঁটে সিগাল হোটেলের দিকে যাচ্ছিলেন। ঋতু রব্বানীর আগে আগে আগে হাঁটছিলেন। পেছনে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে হাঁটছিলেন গোলাম রব্বানী।

জবানবন্দিতে তারা বলেন, ঋতুর ইশারায় আগ থেকেই গোলাম রব্বানীকে নজরদারিতে রাখেন শেখ শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পুসহ চারজন। সৈকত থেকে পাকা সড়কে ওঠার জন্য গোলাম রব্বানী যখন ঝাউবাগানের ভেতরে চলে আসেন, তখন সামনে এগিয়ে যান শেখ শাহরিয়ার। তারপর রাতের অন্ধকার থেকে পেছন দিক থেকে রাব্বানীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে একটি গুলি করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটে পড়েন রব্বানী। এরপর গোলাম রসুলকে (২৫) সঙ্গে নিয়ে শেখ শাহরিয়ার রিকশায় উঠে চলে যান কক্স কুইন রিসোর্টে। আর ঋতু ও রিয়াজ নামের অপর দুজন সরে পড়েন অন্যদিকে।

প্রাণ গেল সাবেক কমিশনারের
প্রাণ গেল সাবেক কমিশনারের

জবানবন্দি দেওয়া তিনজন হলেন ঋতু (২৪), শেখ শাহরিয়ার ইসলাম (২৭) ও গোলাম রসুল (২৫)। আসামিরা সবাই খুলনার বাসিন্দা।

এর আগে গত সোমবার রাতে মৌলভীবাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় তাদের আদালতে তোলা হয়।

গত বুধবার কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে জানান, চাচা শহীদুলের হত্যার প্রতিশোধ নিতে শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পু সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানীকে হত্যা করেছেন। অন্য দুই আসামি ঋতু ও গোলাম রসুলও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছেন। হত্যার জন্য আসামিরা কক্সবাজারকে উপযুক্ত স্থান হিসেবে বেছে নেন।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ঋতু সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজিনের আদালতে, শাহরিয়ার ইসলাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদের আদালতে এবং গোলাম রসুল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া জবানবন্দি শেষ হয় রাত ৯টায়।

জবানবন্দি দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান। তিনি বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।’

উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারি রাতে কক্সবাজার সৈকতে সিগাল হোটেলের সামনে ঝাউবাগানে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় রব্বানীকে। তাঁর বাড়ি খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকার দৌলতপুরে। তিনি খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি।