মসজিদের বিদ্যুৎ বিল মাসে ৪৮ কোটি টাকা!

- সময় ০৭:০৯:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
- / 40
বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান, মসজিদে হারাম। যেটি গ্র্যান্ড মসজিদ হিসেবেও পরিচিত। প্রতিদিন এখানে নামাজ আদায় করেন লাখো মুসল্লি। এই পবিত্র স্থান শুধু আধ্যাত্মিক কেন্দ্র নয়, বরং একটি বিস্ময়কর প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার নিদর্শনও।
এ মসজিদটি মুসলিমদের হজ্জ যাত্রাকালীন সফরের একটি স্থান, যা প্রত্যেক সামর্থবান মুসলমানের জন্য জীবনে কমপক্ষে একবার পালনীয়। এছাড়াও মুসলমানদের হজ্জের চেয়ে ছোট জিয়ারত “উমরাহের” একটি প্রধান অংশ হিসেবেও মুসলিমদের সেখানে ভ্রমণ করতে হয়।
২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ি, মসজিদে হারাম পৃথিবীর বৃহত্তম মসজিদ ও অষ্টম বৃহত্তম স্থাপনা হিসেবে অক্ষত রয়েছে।
সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত এই মসজিদ পরিচালনার জন্য প্রতি মাসে ৪৮ কোটি টাকারও বেশি বিদ্যুৎ বিল গুনতে হয়! প্রতিদিন প্রয়োজন পড়ে ১০০ মেগাভোল্ট অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ। এই বিশাল শক্তির চাহিদা পূরণ করতেই মসজিদের পরিচালন ব্যয় আকাশচুম্বী।
সম্প্রতি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণ প্রকল্পের পর, একসঙ্গে ২০ লাখেরও বেশি মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন। আধুনিক প্রযুক্তির বিশাল সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে ৮ হাজার স্পিকারের সাউন্ড সিস্টেম, ৮ হাজারের বেশি নজরদারি ক্যামেরা এবং ১ লাখ ২০ হাজার আলোকসজ্জার ইউনিট।
গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে মুসল্লিদের আরামের জন্য রয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন কুলিং সিস্টেম, ৮৮৩টি এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিট এবং ৪ হাজার ৩২৩টি বায়ু চলাচল ও মিস্টিং ফ্যান।
এছাড়া রয়েছে ৫১৯টি এসকেলেটর ও ১০০টি ইন্টারঅ্যাকটিভ স্ক্রিন, যা ১৬টি ভাষায় পরিচালিত হয়, যাতে সারা বিশ্বের মুসল্লিরা সহজেই তথ্য পেতে পারেন।

তবে, এই বিশাল ব্যয় সামলানো সহজ কাজ নয়। মক্কার হোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশেষ ফি আরোপের প্রস্তাব আসছে, যাতে মসজিদের আধুনিক সুবিধাগুলো দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখা যায়।
বিশেষ করে রমজান মাসে বিশ্বের নানা দেশ থেকে লাখো মুসল্লির আগমন ঘটে। মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সৌদি কর্তৃপক্ষকে বাড়তি ব্যবস্থা নিতে হয়।
গ্র্যান্ড মসজিদ শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি মুসলমানদের হৃদয়ের স্পন্দন। এই পবিত্র স্থান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নত হচ্ছে, যাতে আগামীর প্রজন্মও এখানে এসে স্বস্তি ও শান্তির সঙ্গে ইবাদত করতে পারেন।
মসজিদটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সুলতান, খলিফা ও রাজা-বাদশাহের তত্ত্বাবধানে ছিল এবং বর্তমান এটি সৌদি আরবের রাজার তত্ত্বাবধানে আছে, যাকে এ কারণে খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন পদবী প্রদান করা হয়।