ভারত মহাসাগরে শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, টার্গেট ইরান!

- সময় ০২:২৬:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
- / 43
যেকোনো সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা করে বসতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন সময়ের হুমকিতে এমন বার্তাই প্রকাশ পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে ভারত মহাসাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি সেই শঙ্কাকে আরও উসকে দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ইরানে হামলার আগে নিজেদের যুদ্ধ সক্ষমতা ঝালিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য ইরানের মিত্র ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে একের পর এক হামলাও চালাচ্ছে ওয়াশিংটন।
লন্ডনভিত্তিক ইরানি গণমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ভারত মহাসাগরের কৌশলগত বিমানঘাঁটি ডিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সঙ্গে বাগযুদ্ধ আর ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মার্কিন অ্যাকশনের মধ্যেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।
ব্রিটিশ এই অঞ্চলটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানেই গেল দুই দিনে বি-টু স্টেলথ বম্বার, সি-১৭ কার্গো বিমান ও ১০টি অ্যারিয়াল রিফুয়েলিং ট্যাংকার মোতায়েন করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র যে সেখানে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, তার খবর প্রকাশ্যে এনেছে প্রতিরক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ারজোনও।
ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, ডিয়েগো গার্সিয়ায় যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। অতীতে একাধিকবার মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন হামলার সময় এই ঘাঁটি ব্যবহার করেছে ওয়াশিংটন। এমনকি ২০০১ সালে আফগানিস্তান ও ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের সূচনাও এই ঘাঁটি থেকেই করা হয়েছিল। এখন এই ঘাঁটিতে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি যুদ্ধের আশঙ্কাকে তীব্র করছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডাটা ও স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে এই ঘাঁটিতে অন্তত পাঁচটি বি-টু স্পিরিট স্টেলথ বম্বারস পৌঁছানো বা ট্রানজিটের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই বোমারু বিমান ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকার বাস্টার বোমার বহনে উপযুক্ত। মাটির খুব গভীরে কিংবা সুরক্ষিত জায়গায় তাণ্ডব চালাতে পারে এই বোমা। এছাড়া ২০ হাজার পাউন্ড ওজনের মাদার অব অল বম্ব বহনের সক্ষমতাও রয়েছে এই বোমারু বিমানের।
এমন এক সময় ট্রাম্প প্রশাসন তার সামরিক বাহিনীকে এই ঘাঁটিতে জড়ো করছে, যখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের সম্পর্কে আরও টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে লোহিত সাগরে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের চলমান হামলা এবং ইরানের পরমাণু উচ্চাভিলাষ নিয়ে শঙ্কায় আছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি শোনা যাচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে ইরানকে দুই মাসের সময়ও বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এই সময়ের মধ্যে ইরান নিজেদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হলে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে এত কিছুর মধ্যেও থেমে নেই ইরান। নতুন আরেকটি মিসাইল সিটি প্রকাশ্যে এনেছে দেশটি। ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের মিসাইল সক্ষমতা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে বলেও জানিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী।
এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বললেও ওয়াশিংটনের পদক্ষেপ বলে দিচ্ছে, তারা সামরিকভাবেও প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ কারো জন্যই ভালো হবেনা বলে সতর্ক করছেন বিশ্লেষকরা।