ঢাকা ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হাইব্রিড মডেল নাকি পাকিস্তানের জেদ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের দামামা!

ক্রীড়া ডেস্ক
  • সময় ০১:৩৭:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪
  • / 100

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ

শিরোনাম শুনেই মনে হতে পারে, এই বুঝি আবারও ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের দামামা শুরু হতে যাচ্ছে। সত্যিকার অর্থেই দুই চিরপ্রতিদ্বন্ধী দুই দেশের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে উত্তেজনা বিরাজমান। সীমান্ত সমস্যা, কাশ্মির ইস্যু, জঙ্গিবাদ নিয়ে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি না।

তবে এবারের যুদ্ধটা ব্যতিক্রম। বলা হচ্ছে ক্রিকেট যুদ্ধের কথা। ভারতের বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) খবর সত্যি হলে ২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ‘হাইব্রিড’ মডেলেই হচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম সামাটিভি বলছে, হাইব্রিড মডেলের খবর ভিত্তিহীন। খেলা হবে পাকিস্তানেই।

২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অফিশিয়াল আয়োজক পাকিস্তান। ভারত টুর্নামেন্টটি খেলতে পাকিস্তানে যাবে কি না, তা অনিশ্চিত হলেও পিসিবি (পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড) চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিজেদের দেশেই আয়োজন করতে চায়। সে জন্য ম্যাচ খেলে সেদিনই ভারতের ক্রিকেট দলকে দেশে ফেরার প্রস্তাবও দিয়েছে পিসিবি। এমনকি ভারতের দর্শকদের দ্রুত ভিসার ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দিয়েছেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি।

পিটিআই জানিয়েছে, ভারতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে চায় পিসিবি। আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ভারতের ম্যাচগুলো দুবাই ও শারজায় খেলাতে চায় পিসিবি।

ভারত-পাকিস্তান
ভারত-পাকিস্তান

তবে সামাটিভির খবরে একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, পাকিস্তান হাইব্রিড মডেলের কথা ভাবছে না। সূত্রটি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুধু পাকিস্তানই আয়োজন করবে। ভারতের ম্যাচ দুবাই ও শারজায় হওয়ার খবর ভিত্তিহীন।’

পিসিবি মনে করে ভারতের সরকার (ভারত ক্রিকেট দলকে) পাকিস্তান সফরের ছাড়পত্র না দিলেও সূচিতে কিছুটা সমন্বয়ের সুযোগ থাকছে। দুবাই ও শারজায় ভারতের ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা আছে।
পিটিআইকে পিসিবির একটি সূত্র ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এর আগে জানিয়েছে, পাকিস্তান সফরের বিষয়ে তারা সরকারের যেকোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত মেনে নেবে।
রাজনৈতিকভাবে বৈরি সম্পর্ক এবং নিরাপত্তার কারণে ২০০৮ মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর আর কখনো পাকিস্তান সফর করেনি ভারত ক্রিকেট দল। তবে আইসিসির টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হয় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। গত বছরের এশিয়া কাপও হয়েছে হাইব্রিড মডেলে। বিসিসিআই পাকিস্তানে দল পাঠাতে অস্বীকৃতি জানালে শেষ পর্যন্ত ভারতের ম্যাচগুলো শ্রীলঙ্কায় আয়োজন করা হয়। পাকিস্তানে আয়োজন করা হয় টুর্নামেন্টের শুরুর দিকের ৪টি ম্যাচ।
গত মাসে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) ইঙ্গিত দিয়েছিল, ভারত ক্রিকেট দল এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে পাকিস্তানে না গেলে টুর্নামেন্টটি ‘হাইব্রিড মডেলে’ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ানস ট্রফি
আইসিসি চ্যাম্পিয়ানস ট্রফি

ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি কোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে তাদের সরকারের নীতিমালার বিরুদ্ধে পরিচালিত করতে পারে না। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে ভারত পাকিস্তানে যাবে কি না, সে বিষয়ে বিসিসিআই আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানায়নি। ওদিকে পিসিবি আগামী সপ্তাহের মধ্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি ঘোষণা করতে তাগাদা দিচ্ছে আইসিসিকে। আগামী সপ্তাহে লাহোর সফরে যাবেন আইসিসির কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

সেই সূত্র আরও বলেছে, ‘কয়েক মাস আগে যে অস্থায়ী সূচি পাঠানো হয়েছে, সেটা নিয়ে আইসিসির সঙ্গে আলোচনা করেছে পিসিবি। তারা চায় ১১ নভেম্বর (চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য) একই সূচি ঘোষণা করা হোক। আইসিসিকে তারা বলেছে, বাজেট সংশোধন করে বিকল্প পরিকল্পনা যেহেতু প্রস্তুত আছে, তাই অস্থায়ী সূচি প্রকাশে দেরি করা অর্থহীন।’

বিসিসিআই পাকিস্তানে দল পাঠাবে কি না, তা নিশ্চিত করতে আইসিসিকেও তাগাদা দিয়েছে পিসিবি। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সূত্র বলেছে, ‘সরকারের অনুমতি পাওয়া কিংবা পাকিস্তানে দল পাঠাবে না-এ বিষয়ে বিসিসিআইয়ের কাছে লিখিত চায় পিসিবি।’

পিসিবির প্রস্তাবিত অস্থায়ী সূচি অনুযায়ী, আগামী বছর ১ মার্চ লাহোরে অনুষ্ঠিত হবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। টুর্নামেন্টটি শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং ৯ মার্চ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কারণে অস্থায়ী এই সূচিতে ভারতের সব কটি ম্যাচের ভেন্যু লাহোর।

প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী, ভারত, বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ‘এ’ গ্রুপে পড়েছে পাকিস্তান। ‘বি’ গ্রুপের চারটি দল ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান।

শেয়ার করুন

হাইব্রিড মডেল নাকি পাকিস্তানের জেদ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের দামামা!

সময় ০১:৩৭:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম শুনেই মনে হতে পারে, এই বুঝি আবারও ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের দামামা শুরু হতে যাচ্ছে। সত্যিকার অর্থেই দুই চিরপ্রতিদ্বন্ধী দুই দেশের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে উত্তেজনা বিরাজমান। সীমান্ত সমস্যা, কাশ্মির ইস্যু, জঙ্গিবাদ নিয়ে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি না।

তবে এবারের যুদ্ধটা ব্যতিক্রম। বলা হচ্ছে ক্রিকেট যুদ্ধের কথা। ভারতের বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) খবর সত্যি হলে ২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ‘হাইব্রিড’ মডেলেই হচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম সামাটিভি বলছে, হাইব্রিড মডেলের খবর ভিত্তিহীন। খেলা হবে পাকিস্তানেই।

২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অফিশিয়াল আয়োজক পাকিস্তান। ভারত টুর্নামেন্টটি খেলতে পাকিস্তানে যাবে কি না, তা অনিশ্চিত হলেও পিসিবি (পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড) চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিজেদের দেশেই আয়োজন করতে চায়। সে জন্য ম্যাচ খেলে সেদিনই ভারতের ক্রিকেট দলকে দেশে ফেরার প্রস্তাবও দিয়েছে পিসিবি। এমনকি ভারতের দর্শকদের দ্রুত ভিসার ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দিয়েছেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি।

পিটিআই জানিয়েছে, ভারতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে চায় পিসিবি। আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ভারতের ম্যাচগুলো দুবাই ও শারজায় খেলাতে চায় পিসিবি।

ভারত-পাকিস্তান
ভারত-পাকিস্তান

তবে সামাটিভির খবরে একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, পাকিস্তান হাইব্রিড মডেলের কথা ভাবছে না। সূত্রটি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুধু পাকিস্তানই আয়োজন করবে। ভারতের ম্যাচ দুবাই ও শারজায় হওয়ার খবর ভিত্তিহীন।’

পিসিবি মনে করে ভারতের সরকার (ভারত ক্রিকেট দলকে) পাকিস্তান সফরের ছাড়পত্র না দিলেও সূচিতে কিছুটা সমন্বয়ের সুযোগ থাকছে। দুবাই ও শারজায় ভারতের ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা আছে।
পিটিআইকে পিসিবির একটি সূত্র ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এর আগে জানিয়েছে, পাকিস্তান সফরের বিষয়ে তারা সরকারের যেকোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত মেনে নেবে।
রাজনৈতিকভাবে বৈরি সম্পর্ক এবং নিরাপত্তার কারণে ২০০৮ মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর আর কখনো পাকিস্তান সফর করেনি ভারত ক্রিকেট দল। তবে আইসিসির টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হয় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। গত বছরের এশিয়া কাপও হয়েছে হাইব্রিড মডেলে। বিসিসিআই পাকিস্তানে দল পাঠাতে অস্বীকৃতি জানালে শেষ পর্যন্ত ভারতের ম্যাচগুলো শ্রীলঙ্কায় আয়োজন করা হয়। পাকিস্তানে আয়োজন করা হয় টুর্নামেন্টের শুরুর দিকের ৪টি ম্যাচ।
গত মাসে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) ইঙ্গিত দিয়েছিল, ভারত ক্রিকেট দল এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে পাকিস্তানে না গেলে টুর্নামেন্টটি ‘হাইব্রিড মডেলে’ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ানস ট্রফি
আইসিসি চ্যাম্পিয়ানস ট্রফি

ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি কোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে তাদের সরকারের নীতিমালার বিরুদ্ধে পরিচালিত করতে পারে না। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে ভারত পাকিস্তানে যাবে কি না, সে বিষয়ে বিসিসিআই আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানায়নি। ওদিকে পিসিবি আগামী সপ্তাহের মধ্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি ঘোষণা করতে তাগাদা দিচ্ছে আইসিসিকে। আগামী সপ্তাহে লাহোর সফরে যাবেন আইসিসির কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

সেই সূত্র আরও বলেছে, ‘কয়েক মাস আগে যে অস্থায়ী সূচি পাঠানো হয়েছে, সেটা নিয়ে আইসিসির সঙ্গে আলোচনা করেছে পিসিবি। তারা চায় ১১ নভেম্বর (চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য) একই সূচি ঘোষণা করা হোক। আইসিসিকে তারা বলেছে, বাজেট সংশোধন করে বিকল্প পরিকল্পনা যেহেতু প্রস্তুত আছে, তাই অস্থায়ী সূচি প্রকাশে দেরি করা অর্থহীন।’

বিসিসিআই পাকিস্তানে দল পাঠাবে কি না, তা নিশ্চিত করতে আইসিসিকেও তাগাদা দিয়েছে পিসিবি। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সূত্র বলেছে, ‘সরকারের অনুমতি পাওয়া কিংবা পাকিস্তানে দল পাঠাবে না-এ বিষয়ে বিসিসিআইয়ের কাছে লিখিত চায় পিসিবি।’

পিসিবির প্রস্তাবিত অস্থায়ী সূচি অনুযায়ী, আগামী বছর ১ মার্চ লাহোরে অনুষ্ঠিত হবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। টুর্নামেন্টটি শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং ৯ মার্চ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কারণে অস্থায়ী এই সূচিতে ভারতের সব কটি ম্যাচের ভেন্যু লাহোর।

প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী, ভারত, বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ‘এ’ গ্রুপে পড়েছে পাকিস্তান। ‘বি’ গ্রুপের চারটি দল ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান।