বোমা হামলার হুমকি ট্রাম্পের, জবাবে প্রস্তুত ইরান?

- সময় ০৭:১৩:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
- / 4
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমঝোতায় না এলে ইরানে বোমা হামলা চানানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ইরান যদি চুক্তিতে না আসে, তাহলে বোমা হামলা হবে। তবে বিকল্প পন্থা হিসেবে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের সম্ভাবনার কথাও জানান তিনি।
ট্রাম্পের এই হুমকির পরদিনই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সোমবার (৩১ মার্চ) এক ভিডিও বক্তৃতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে তারা অবশ্যই একটি শক্তিশালী পাল্টা আক্রমণের মুখোমুখি হবে।’
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, প্রথমত, যদি কোনো বহির্শক্তি ইরানে হামলা করার মতো কোনোরকম অপকর্ম করে, যার সম্ভবনা খুবই কম, তাহলে তারা অবশ্যই শক্তিশালী পাল্টা আক্রমণের শিকার হবে। দ্বিতীয়ত, শত্রুরা যদি আগের বছরগুলোর মতো দেশের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রদ্রোহিতা সৃষ্টির কথা ভাবে তাহলে জাতি সেই আগের মতোই রাষ্ট্রদ্রোহীদের কঠোর জবাব দেবে ইরান।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। ওই চুক্তির আওতায় ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি বাতিল করার পর ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয়, ফলে দেশটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম আরও বাড়ায়।
তবে ইরানের দ্রুত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে আমেরিকা-ইসরায়েলসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে। ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই বারবার ইরানকে হুমকি দিচ্ছেন পরমাণু সমঝোতার। তবে তেহরান এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় রাজি হয়নি।

সম্প্রতি তৃতীয় একটি দেশের মাধ্যমে ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে চিঠি লেখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিঠিতে ট্রাম্প নতুন একটি পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ইরান প্রথমে চিঠি প্রাপ্তির কথা অস্বীকার করলেও পরে চিঠি পেয়েছে বলে জানায়। ইরানের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পাঠানো এক চিঠির জবাব দেওয়া হয়েছে, যা ওমানের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল।
পশ্চিমা দেশগুলো ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির গোপন পরিকল্পনার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। তারা বলছে, দেশটি যে মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তা বেসামরিক পারমাণবিক শক্তির প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি।
তবে ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং কেবল জ্বালানি উৎপাদনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। একইসঙ্গে নিজেদের পরমানু কর্মসূচির ওপর কোনো হামলা হলে তা শক্তভাবে মোকাবেলা করা প্রত্যয় ব্যক্ত করে আসছে ইরান। ফলে প্রশ্ন উঠছে যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই ইরানে হামলা চালায় তবে ইরান কি তার জবাবে প্রস্তুত আছে?