বৈসাবি উৎসবে মাতোয়ারা দীঘিনালা

- সময় ০২:০৭:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
- / 19
পাহাড়ি জনপদে শুরু হয়েছে বর্ষবরণ উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিজু উৎসব। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান—এই তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক উৎসব এটি।
চাকমাদের কাছে এটি পরিচিত ‘বিজু’ নামে, ত্রিপুরারা উদযাপন করে ‘বৈসু’ হিসেবে, তঞ্চঙ্গ্যাদের কাছে এটি ‘বিষু’ এবং মারমাদের ‘সাংগ্রাই’। ম্রো, চাক, বম, খুমী, খেয়াং, লুসাইসহ সমতলের আদিবাসীরাও ‘বৈসাবি’ নামে একত্রে পালন করে এই উৎসব। বৈসাবি উৎসবে মাতোয়ারা হয়েছে পুরো দীঘিনালা।
দীঘিনালা জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল ওমর ফারুক ও তাঁর সহধর্মিণী জানান, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কাছে এই উৎসব শুধুমাত্র আনন্দ-উল্লাসের উপলক্ষ নয়; বরং এটি তাদের সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।
ভোর থেকে শত শত নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে জড়ো হন দীঘিনালার মাঈনী নদীর তীরে। কলাপাতায় সাজানো ফুল হাতে, নদীর জলে ফুল বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তারা অতীতের সব দুঃখ-কষ্ট বিদায়ের প্রার্থণা করেন এবং নতুন বছরের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন মা গঙ্গা দেবীর কাছে।

চাকমা সম্প্রদায়ের তরুণী হ্যাপী চাকমা বলেন, “বছরজুড়ে আমরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। বিজু আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আনন্দের সম্মিলন।”
উৎসব কমিটির সদস্য অসীম চাকমা জানান, নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে বিজুর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এবছর বৃহৎ পরিসরে বিজু পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি—বর্ণাঢ্য র্যালি, বুদ্ধস্নান, বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা, ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব, বলী খেলা, তৈলাক্ত বাঁশে আরোহন ও দুইদিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মৈত্রীর জলকেলি।
সন্ধ্যায় দীঘিনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুরু হবে চাকমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ‘ঘিলা খেলা’। পরদিন থাকবে পাজন রান্না ও আতিথেয়তা। ঘরে ঘরে থাকবে উৎসবের রঙ আর প্রার্থনায় মুখর থাকবে প্রতিটি পরিবার।
দিঘীনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, উৎসব ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় সাদা পোশাকে টহল দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শেয়ার করুন
-
সর্বশেষ
-
সর্বাধিক
Devoloped By: InnoSoln Limited