০৭:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার গিলে খাচ্ছে আরডি কবির সিন্ডিকেট

এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার
  • সময় ১১:৩৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
  • / 52

কক্সবাজার বেতার কেন্দ্র গিলে খাচ্ছে আরডি কবির সিন্ডিকেট

কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক (আরডি) মোহাম্মদ আশরাফ কবির সিন্ডিকেট গিলে খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের হাতে জিম্মি বেতার কেন্দ্রের সাধারণ স্টাফরা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নিকটাত্মীয় পরিচয়ে নোয়াখালী বসুরহাট এলাকার অধিবাসী আশরাফ কবির ঠাকুরগাঁও থেকে কক্সবাজারে বদলী হয়ে আসেন ২০২১ সালে । তিনি কক্সবাজারে আসার সাথে সাথে জড়িয়ে পড়েন নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন কালীন সাবেক মন্ত্রী ড.হাসান মাহমুদের সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন বলে দাবী করা আশরাফ কবির ৫ আগষ্টের পর সুর পাল্টানোর মাধ্যমে নিজেকে নিরাপদ রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে কক্সবাজার বেতারে বিএনপি জামাতের কাউকে প্রোগ্রাম দেয়া তো দূরের কথা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দিতেন না এই আশরাফ কবির।

তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মে প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। বিগত দুই তিন বছরে ভুয়া বিল-ভাউচারসহ একাধিক খাতে আরডি আশরাফ কবির এসব অনিয়ম দুর্নীতি করেন বলে অভিযোগ শিল্পী সমন্বয় পরিষদের। এসব অনিয়ম দুর্নীতিতে আঞ্চলিক পরিচালককের মূখ্য সহযোগী অনুষ্ঠান বিভাগের ক্যাজুয়াল স্টাফ (হিসাব রক্ষক) নুরুল আজিম, সংগীত সংকলক (৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী,)আরডির কথিত পিএ মোসলেম উদ্দিনকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আঞ্চলিক পরিচালকের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে খুব শিগগির আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন শিল্পীরা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজার জেলার ছাত্র প্রতিনিধি শাহাব উদ্দিনসহ আরো অনেকে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার বেতার শিল্পী সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান আরডির আর্থিক অনিয়ম অতীতে বেতারের সব ধরনের অনিয়মকে ছাড়িয়ে গেছে। নেতৃবৃন্দ আরো জানান, আরডি আশরাফ কবির যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন। এর সিংহভাগই শিল্পীদের টাকা। এসব অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে ও আরডিসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তির দাবিতে খুব শিগগির তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্ঠা , বেতারের মহাপরিচালক, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।

বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার
বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার

আরডি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে গেলে চাঞ্চল্যকর তথ্য ও একাধিক ঘটনা বেরিয়ে আসে। জানা যায়, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে চলতি অর্থ বছর বেতার থেকে জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে পাঠানো শিল্পীসম্মানীসহ বিভিন্ন প্রোগামের তালিকার টাকার অংক আর বাস্তবতার সাথে মিল নেই । বিভিন্ন জনকে দিয়ে ভুয়া প্রোগ্রাম দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাইচারে উত্তোলন করা হয়েছে লাখ লাখ টাকা । এ যেন ভুয়া বিলের মাধ্যমে অর্থ অত্মসাতের মহোৎসব। শুধু ভুয়া বিল নয় শিল্পী ও বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নেয়া সম্পদ ও ব্যক্তিদের সম্মানীভাতাসহ আত্মসাৎ করা হয়েছে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিল্পী জানিয়েছেন অতীতেও এ ধরনের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে শিল্পীরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে অতীতের সকল অনিয়মকে হার মানাবে আরডি আশরাফ কবির। শুধু শিল্পী সম্মানী নয়, বিভিন্ন ভুয়া প্রেগ্রাম , ক্রয়খাত, শিল্পীখাতসহ বিভিন্ন খাতওয়ারী আরডির মাসিক অবৈধ আয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা বলে জানিয়েছেন বেতারের একাধিক স্টাফ। এ টাকার বেশিরভাগ নেয় আরডি আর অল্প কিছু ভাগ পায় পিএ মোসলেম উদ্দিন ও অনিয়মিত শিল্পী (হিসাব রক্ষক) নুরুল আজিম। আরডির কথিত পিএ ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী মোসলেম উদ্দিনের সাথে সম্পর্ক না থাকলে ভাল মানের শিল্পী হলেও প্রোগ্রাম দেয়া হয় না এমন অভিযোগও উঠেছে।

অন্যদিকে শিল্পী সম্মানী রেজিস্টারে দেখা গেছে, বিভিন্ন জনের নামে ভুয়া বিল করা হলেও টাকার অংকে ঘসামাজা করা হয়েছে। নুরুল আজিম, মোসলেম উদ্দিন ঘসামাজা করে টাকা উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে । মোসলিম উদ্দিন ও নুরুল আজিমের স্বাক্ষর করা স্বহস্থে লিখিত বিভিন্ন ক্রয় ভাইচারে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মোসলেম উদ্দিন বলেন, অফিসার বললে বিল ভাইচার গুলো তৈরি করে দেয়া হয়। এতে আমার কোন দোষ নেই।
বিভিন্নভাবে কেবল অনুষ্ঠান খাত থেকেই গত দুই তিন বছরে আনুমানিক বিশ থেকে ত্রিশ লাখ লাখ টাকার মতো আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে সুনিদিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

কক্সবাজার বেতার শিল্পী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও নাট্য প্রযোজক স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, এর আগে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে নানা অনিয়মের অভিযোগে শিল্পীদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক পরিচালক মো. হাবিবুর রহমানকে স্ট্যান্ড-রিলিজ করা হয়। কথিত আরডির পিএ মোসলেম উদ্দিনকে বরিশাল কেন্দ্রে বদলি করা হয় । পরে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মোসলেম উদ্দিন সাবেক এমপি কমলের আস্তাভাজন হওয়ায় ডিও লেটার নিয়ে পূনরায় বদলি হয়ে আসেন কক্সবাজার কেন্দ্রে । এসব অবহেলার কারণেই আশরাফ কবির আরও বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম ও দূর্নীতির সাহস পেয়েছেন।
হিসাব রক্ষণ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২, ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪, তিন অর্থবছরে কক্সবাজার বেতারের অনুষ্ঠান, শিল্পী সম্মানী খাতে সাড়ে ৩ কোটি টাকার মত বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া বাজেট, বিল ও অনুষ্ঠান পরিকল্পনা থেকে জানা গেছে, কক্সবাজার বেতারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউনিসেফের সহযোগীতায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সচেতনতামূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাস্তবায়নে বিগত ২০২১ থেকে ২০২৪ তিন অর্থ বছরসহ চলতি বছর মিলে ৮ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইউনিসেফের অর্থায়নে কক্সবাজার বেতারে যে সকল প্রোগ্রাম হয় বেশির ভাগ ভুয়া ও লোক দেখানো। এসব প্রোগ্রামের মান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন ।

শিল্পীসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আরডি আশরাফ কবির যোগদানের পর থেকে শিল্পী খাত ও ইউনিসেফের প্রকল্প থেকে ২ কোটি টাকারও বেশি অনিয়ম করেছেন। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে।
বহিরাঙ্গন বা মিউজিক্যাল শো , ‘জীবনের জন্য’, ‘জীবনের জন্য ফোন-ইন’, ‘সোনালী জীবন’, নিসর্গ‘ সাগরপাড়ের জীবন’টেকশই বাংলাদেশ সহ নিয়মিত প্রায় ১৫টি অনুষ্ঠানে আর্থিক অনিয়ম করা হয় বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।
কক্সবাজার বেতারে অনুষ্টান, প্রকৌশল ও বার্তা বিভাগে নেই কোন সমন্বয়। ফলে নিয়মিত প্রচার হচ্ছে নিম্ন মানের প্রোগ্রাম। পুরোনো অনুষ্ঠানের রেকর্ড বাজিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা। একই প্রোগ্রাম বার বার প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিভিন্ন অডিশনে অংশ গ্রহণকারী শিল্পীরা।

অনিয়মিত শিল্পী (হিসাব রক্ষক) নুরুল আজিম, আঞ্চলিক পরিচালকের পিএ ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী সংগীত সংকলক মোসলেম উদ্দীন, অনিয়মিত শিল্পী পিয়ন লুৎফর রহমান, আঞ্চলিক পরিচালকের বাবুর্চি মুবিন উদ্দিনের দাপটে ক্যাজুয়াল স্টাফ ও বেতারের রাজস্বখাতভূক্ত কর্মকর্তা কর্মচারী একেবারে জিম্মি অবস্থায় আছেন বলে জানা গেছে। প্রায় ২০ একর বেতার কেন্দ্রের এরিয়ার মধ্যে ২ একর জমিতে নিয়মিত চাষাবাদ করেন তারা। সেচকাজে ব্যবহার করা হয় সেচযন্ত্র অথচ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় বেতারের সরকারী বিদ্যুৎ লাইন থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জমি লাগিয়তের একটি কানাকড়ি ও সরকারী কোষাগারে জমা হয়নি। সেখানে তারা গরুর খামারও গড়ে তুলেছেন। আঞ্চলিক পরিচালকের নানা অনিয়মের সহযোগী হওয়ায় তাদেরকে মৌখিকভাবে চাষাবাদ ও গরুর খামার করার অনুমতি দিয়েছেন তিনি। অথচ কেপিআই এলাকায় চাষাবাদ কিংবা গরুর খামার করার কোন নিয়ম নেই।

কক্সবাজার বেতার কেন্দ্র
কক্সবাজার বেতার কেন্দ্র

আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য আরডির বাবুর্চি মুবিনের বেতন দেয়া হয় সরকারী ফান্ড থেকে । এই মুবিনকে আরো সুবিধা দিতে গিয়ে বেতার বিদ্যুৎ লাইন থেকে অটোরিকশা বা টমটমের গ্যারেজ খুলে দিলেন আরডি। সেই গ্যারেজ থেকে গত ২০ জানুয়ারী একটি টমটম বা বিদ্যুৎ চালিত অটোরিকশা চুরি হয়। এর জন্য আরডি দায়ী করে বসেন ড্রাইভার মিনহাজুল ইসলাম নামের এক কর্মচারীকে। কোন প্রকার তথ্য প্রমাণ ছাড়া দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে চাকুরীরত মিনহাজুল ইসলামকে টমটম চোর দাবী করে ফায়সালার নামে মোটা আংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন আরডির বাবুর্চি মুবিন উদ্দিন , মোসলেম উদ্দিন, নুরুল আজিম ও লুৎফুর রহমান। তারা সালিশের নামে চাল পড়া খাওয়ায়ে নানাভাবে নাজেহাল করে ক্লান্ত নয় সর্বশেষ বেতন বন্ধ রেখে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কাজে আরডি তাদের সহযোগিতা করছেন। মিনহাজের বেতন বন্ধ রেখেছে ২ মাস ধরে। ড্রাইভার মিনহাজকে বাবুর্চি মুবিন উদ্দিন বিভিন্ন মানুষ দিয়ে নানা ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছেন।

এ ব্যাপারে ড্রাইভার মিনহাজ বার বার আরডির কাছে গেলেও কোন সুরাহা না করে ডিআরডি নাজমুল হাসানের কাছে পাঠান, নাজমুল হাসান মিনহাজকে উল্টো বাবুর্চ মুবিনের সাথে বসে ফায়সালা করার কথা বলেন। এভাবে দুই মাস অতিবাহিত হলেও কোন সুরাহা হয়নি। দুই মাস ধরে বেতন ভাতা বন্ধ রাখায় মিনহাজ বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে রমজান মাসে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হাতে পায়ে ধরেও ডাইভার মিনহাজ আরডির মন গলাতে পারছেন না বলে একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আরডির সহযোগিতায় মোসলেম উদ্দিন ও নুরুল আজিম মিনহাজকে মারমুখী আচরনসহ বিভিন্নভাবে নাজেহাল এবং সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করছেন বলে অভিযোগ মিনহাজের।

২০০১ সাল থেকে এক কেন্দ্রে চাকুরীরত মোসলেম উদ্দিন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজেকে আওয়ামী লীগ দাবী করে নানাভাবে কর্মচারীদের হয়রানি করত । তার বিরুদ্ধে অফিসারের গায়ে হাত তোলারও অভিযোগ রয়েছে। মোসলেম উদ্দিন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হলেও অন্যান্য কর্মচারীদের তাকে স্যার ডাকতে বাধ্য করেন। আরডির সাথে সখ্যতা থাকায় ডিউটি অফিসারের দায়িত্বও পালন করেন মোসলেম উদ্দিন । এতে একজন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীকে ডিউটি অফিসারের চেয়ারে বসানোর ফলে বেতারের ঘোষক ঘোষিকাসহ অন্যান্য স্টাফদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সাবেক এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের সহযোগিতায় সুদূর বরিশাল থেকে বান্দরবান , বান্দরবান থেকে পূনরায় কক্সবাজারে বদলীকৃত স্টাফ মোসলেম উদ্দীনকে কক্সবাজার বেতারে স্বপদে পূণর্বহাল করেছেন এই আরডি। উল্লেখ্য ওই মোসলেম উদ্দীন চিকিৎসার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ৫ লক্ষ টাকার অনুদানও নিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আরডির সহযোগিতায় বদলি বানিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন মুসলেম উদ্দিন। ৫ আগষ্টের পর সরকারের পতন হওয়ার সাথে সাথে মোসলেম উদ্দিন নিজেকে বিএনপির নেতা হিসেবে, নুরুল আজিম জামাতের নেতা পরিচয় দিয়ে পুরো কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করছেন। অনেক কর্মচারীদের কাছ থেকে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। অনেকে চাহিদা মত টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আরডির মাধ্যমে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা গেছে ২০ বছর ধরে কর্মরত ক্যাজুয়াল স্টাফ কি-বোর্ড বাদক ফরমান উল্লাহ, ২৪ বছর ধরে কর্মরত অফিস সহায়ক ওসমানগণি, ডাবিং এডিটিং কাজের মাসুদ, মংখিও মারমা, মো: জাহেদেুল ইসলাম, আরাফাত রহমান সানি, নিরাপত্তা প্রহরী ওমর ফারুক, তবলা বাদক অনুপ নন্দী, বাঁশি বাদক রেজাউল করিম, সর্বশেষ বশির আহমদসহ প্রায় ডজন খানেক কর্মচারীকে কোন কারণ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন জানিয়েছেন আমরা কেউ স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেয়নি। আরডি আশরাফ কবির আমাদের সাথে এমন খারাপ আচরণ করেন যাতে আমরা চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের থেকে জোর করে স্বেচ্চায় চাকরি ছাড়ার ডকুমেন্ট দিতে হয়েছে। এখানেই শেষ নয় বর্তমানে কর্মরত ক্যাজুয়াল স্টাফ বিশেষ করে যন্ত্রীদের সদর দপ্তর কর্তৃক দৈনিক ১ হাজার টাকা করে ২১ দিনের চুক্তি দিলেও আরডি আশরাফ কবিরের সাথে যাদের সখ্যতা রয়েছে তারা ছাড়া বাকি সবাইকে ১৪/১৫ দিনের সম্মানি ধরিয়ে দেয়। এতে ক্যাজুয়েল স্টাফদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। নুরুল আজিম ও মোসলেম উদ্দীনের ক্ষমতার দাপট এতই জোরালো যে, কক্সবাজার বেতারের সকল অনিয়ম ও দূর্নীতি আরডি তাদের মাধ্যমে সম্পাদন করেন। যার কারণে তারা আরডির মাধ্যমে যে কাউকে যে কোন সময় হেনস্থা করেন এমনকি মতের বিরুদ্ধে গেলে রুমে তালা লাগিয়ে হয়রানী করারও অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দ করতে পারে না। প্রতিবাদ করলে কথায় কথায় হাত তুলেন মোসলেম উদ্দিন । সাম্প্রতিক সময়ে অফিসের রাজস্ব খাতের একজন উচ্চমান সহকারীকে উপ আঞ্চলিক প্রকৌশলীর কক্ষে কলোনী সংক্রান্ত বৈঠক চলাকালীন সবার সামনে মোসলেম উদ্দিন মারমুখি আচরণসহ প্রকাশ্যে চোখ তুলে ফেলার হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে । পরে ঘটনাটি আরডি আশরাফ কবির আঞ্চলিক প্রকৌশলীর মাধ্যমে ধামাচাপা দিয়ে মোসলেম উদ্দিনকে সেইভ করেছেন বলে জানা গেছে।

বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার
বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার

ববিতা রানী নামের এক কর্মচারী প্রোগ্রামের মানোয়নের জন্য ডিজির কাছে একটি কম্পিউটার চেয়েছিলেন। একারণে তার বেতনভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, কোন কারণ ছাড়া শাহ আলম নামের আরেক কর্মচারীর বেতন বন্ধ করে দিয়েছিলেন আরডি। পরে আবার বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে বেতন পায়। আরডি ও তার অনুগত মোসলেম উদ্দীন ও নুরুল আজিমের আচরণের ফলে বেতারে কর্মকর্তা কর্মচারীরা রীতিমতো অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।
বেতারের ডরমিটরিতে আশরাফ কবির থাকেন তবে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দেয়া হয়না বলেও জানা গেছে। আরডি আশরাফ কবির ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইউনিসেফ প্রকল্পে কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে কক্সবাজার জেলার বাইরের ও নিজ এলাকার পছন্দের লোক নিয়োগ করেছেন। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দকৃত কোটা মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

বেতারের স্টাফ না হয়েও ইউনিসেফের লোকজন বেতারের সরকারী কোয়াটারে থাকেন আরডির একক ক্ষমতা বলে। সরকারী বাসা দেখাশুনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব আঞ্চলিক প্রকৌশলীর থাকলেও আরডির ক্ষমতার কাছে আঞ্চলিক প্রকৌশলী অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে দাবী করেছেন কর্মচারীরা। সংরক্ষিত কেপিআই এলাকা কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রের অভ্যন্তরে এত অনিয়ম দূর্নীতি কিভাবে হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফ কবির এ প্রতিবেদকে বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি সরকারী রীতিনীতি মেনেই কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করছি। তার কাছে প্রশ্ন ছিল বিনা টেন্ডারে ভাড়া করা গাড়িতে মাসে কত টাকা দিতে হয়, এর কোন উত্তর না দিয়ে তিনি নুরুল আজিমকে ফোন ধরিয়ে দেন। নুরুল আজিম এ প্রতিবেদককে বলেন, মাসে ৭০ হাজার টাকা। তাকে প্রশ্ন করা হলে গাড়ির মালিক মাসে ৪০ হাজার টাকা পায়। বাকী টাকা কার পকেটে ঢুকে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাকী টাকা ভ্যাট কাটা হয়। অথচ সরকারীভাবে গাড়ি ভাড়া বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। বেতারের স্টাফদের অভিযোগ বেতারের বিশাল এলাকাজুড়ে প্রচুর নারকেল গাছ, কাঠাল ও আম গাছ থেকে বছরে ১/২ লক্ষ টাকার যে ফল পাওয়া যায় সব ফল একত্রিত করে বিক্রি করেন আরডি নিজেই । আরডি আশরাফ কবির ট্রাক ভর্তি করে আম কাঁঠাল নোয়াখালীর গ্রামের বাড়িতেও নিয়ে যান বলে স্টাফেরা জানিয়েছেন। । এসব অভিযোগের ব্যাপারে আরডি আশরাফ কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব অনিয়মের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি অফিসের বাইরে আছি একদিন অফিসে আসেন কথা হবে।
আরডির দুর্নীতিতে সহযোগিতার অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে বেতারের ক্যাজুয়াল স্টাফ নুরুল আজিম ও মোসলেম উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারা বলেন, কোনো ধরনের অনিয়ম করিনি। একটি মহল আমাদের নামে এসব মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। লুৎফর রহমান ও মুবিন বলেন আমরা আরডির অনুমতি নিয়ে চাষাবাদ করছি। নিজেরা টাকা খরচ করে পাম্প বসিয়ে জমি চাষ করছি।

বিগত স্বৈরাচার সরকারের দোসর আরডি আশরাফ কবির ও তার অনুগত কর্মচারী মোসলেম উদ্দিন ও নুরুল আজিমসহ আরো কয়েকজন কর্মচারীর অনিয়ম, দূর্নীতি, লোপাট, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলছে কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রে। সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক অভিযুক্ত আরডিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বেতার শিল্পী পরিষদ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিসহ অন্যান্য কর্মচারীগণ কঠোর আন্দোলনে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন

শেয়ার করুন

বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার গিলে খাচ্ছে আরডি কবির সিন্ডিকেট

সময় ১১:৩৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক (আরডি) মোহাম্মদ আশরাফ কবির সিন্ডিকেট গিলে খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের হাতে জিম্মি বেতার কেন্দ্রের সাধারণ স্টাফরা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নিকটাত্মীয় পরিচয়ে নোয়াখালী বসুরহাট এলাকার অধিবাসী আশরাফ কবির ঠাকুরগাঁও থেকে কক্সবাজারে বদলী হয়ে আসেন ২০২১ সালে । তিনি কক্সবাজারে আসার সাথে সাথে জড়িয়ে পড়েন নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন কালীন সাবেক মন্ত্রী ড.হাসান মাহমুদের সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন বলে দাবী করা আশরাফ কবির ৫ আগষ্টের পর সুর পাল্টানোর মাধ্যমে নিজেকে নিরাপদ রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে কক্সবাজার বেতারে বিএনপি জামাতের কাউকে প্রোগ্রাম দেয়া তো দূরের কথা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দিতেন না এই আশরাফ কবির।

তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মে প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। বিগত দুই তিন বছরে ভুয়া বিল-ভাউচারসহ একাধিক খাতে আরডি আশরাফ কবির এসব অনিয়ম দুর্নীতি করেন বলে অভিযোগ শিল্পী সমন্বয় পরিষদের। এসব অনিয়ম দুর্নীতিতে আঞ্চলিক পরিচালককের মূখ্য সহযোগী অনুষ্ঠান বিভাগের ক্যাজুয়াল স্টাফ (হিসাব রক্ষক) নুরুল আজিম, সংগীত সংকলক (৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী,)আরডির কথিত পিএ মোসলেম উদ্দিনকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আঞ্চলিক পরিচালকের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে খুব শিগগির আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন শিল্পীরা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজার জেলার ছাত্র প্রতিনিধি শাহাব উদ্দিনসহ আরো অনেকে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার বেতার শিল্পী সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান আরডির আর্থিক অনিয়ম অতীতে বেতারের সব ধরনের অনিয়মকে ছাড়িয়ে গেছে। নেতৃবৃন্দ আরো জানান, আরডি আশরাফ কবির যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন। এর সিংহভাগই শিল্পীদের টাকা। এসব অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে ও আরডিসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তির দাবিতে খুব শিগগির তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্ঠা , বেতারের মহাপরিচালক, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।

বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার
বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার

আরডি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে গেলে চাঞ্চল্যকর তথ্য ও একাধিক ঘটনা বেরিয়ে আসে। জানা যায়, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে চলতি অর্থ বছর বেতার থেকে জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে পাঠানো শিল্পীসম্মানীসহ বিভিন্ন প্রোগামের তালিকার টাকার অংক আর বাস্তবতার সাথে মিল নেই । বিভিন্ন জনকে দিয়ে ভুয়া প্রোগ্রাম দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাইচারে উত্তোলন করা হয়েছে লাখ লাখ টাকা । এ যেন ভুয়া বিলের মাধ্যমে অর্থ অত্মসাতের মহোৎসব। শুধু ভুয়া বিল নয় শিল্পী ও বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নেয়া সম্পদ ও ব্যক্তিদের সম্মানীভাতাসহ আত্মসাৎ করা হয়েছে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিল্পী জানিয়েছেন অতীতেও এ ধরনের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে শিল্পীরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে অতীতের সকল অনিয়মকে হার মানাবে আরডি আশরাফ কবির। শুধু শিল্পী সম্মানী নয়, বিভিন্ন ভুয়া প্রেগ্রাম , ক্রয়খাত, শিল্পীখাতসহ বিভিন্ন খাতওয়ারী আরডির মাসিক অবৈধ আয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা বলে জানিয়েছেন বেতারের একাধিক স্টাফ। এ টাকার বেশিরভাগ নেয় আরডি আর অল্প কিছু ভাগ পায় পিএ মোসলেম উদ্দিন ও অনিয়মিত শিল্পী (হিসাব রক্ষক) নুরুল আজিম। আরডির কথিত পিএ ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী মোসলেম উদ্দিনের সাথে সম্পর্ক না থাকলে ভাল মানের শিল্পী হলেও প্রোগ্রাম দেয়া হয় না এমন অভিযোগও উঠেছে।

অন্যদিকে শিল্পী সম্মানী রেজিস্টারে দেখা গেছে, বিভিন্ন জনের নামে ভুয়া বিল করা হলেও টাকার অংকে ঘসামাজা করা হয়েছে। নুরুল আজিম, মোসলেম উদ্দিন ঘসামাজা করে টাকা উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে । মোসলিম উদ্দিন ও নুরুল আজিমের স্বাক্ষর করা স্বহস্থে লিখিত বিভিন্ন ক্রয় ভাইচারে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মোসলেম উদ্দিন বলেন, অফিসার বললে বিল ভাইচার গুলো তৈরি করে দেয়া হয়। এতে আমার কোন দোষ নেই।
বিভিন্নভাবে কেবল অনুষ্ঠান খাত থেকেই গত দুই তিন বছরে আনুমানিক বিশ থেকে ত্রিশ লাখ লাখ টাকার মতো আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে সুনিদিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

কক্সবাজার বেতার শিল্পী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও নাট্য প্রযোজক স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, এর আগে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে নানা অনিয়মের অভিযোগে শিল্পীদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক পরিচালক মো. হাবিবুর রহমানকে স্ট্যান্ড-রিলিজ করা হয়। কথিত আরডির পিএ মোসলেম উদ্দিনকে বরিশাল কেন্দ্রে বদলি করা হয় । পরে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মোসলেম উদ্দিন সাবেক এমপি কমলের আস্তাভাজন হওয়ায় ডিও লেটার নিয়ে পূনরায় বদলি হয়ে আসেন কক্সবাজার কেন্দ্রে । এসব অবহেলার কারণেই আশরাফ কবির আরও বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম ও দূর্নীতির সাহস পেয়েছেন।
হিসাব রক্ষণ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২, ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪, তিন অর্থবছরে কক্সবাজার বেতারের অনুষ্ঠান, শিল্পী সম্মানী খাতে সাড়ে ৩ কোটি টাকার মত বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া বাজেট, বিল ও অনুষ্ঠান পরিকল্পনা থেকে জানা গেছে, কক্সবাজার বেতারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউনিসেফের সহযোগীতায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সচেতনতামূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাস্তবায়নে বিগত ২০২১ থেকে ২০২৪ তিন অর্থ বছরসহ চলতি বছর মিলে ৮ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইউনিসেফের অর্থায়নে কক্সবাজার বেতারে যে সকল প্রোগ্রাম হয় বেশির ভাগ ভুয়া ও লোক দেখানো। এসব প্রোগ্রামের মান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন ।

শিল্পীসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আরডি আশরাফ কবির যোগদানের পর থেকে শিল্পী খাত ও ইউনিসেফের প্রকল্প থেকে ২ কোটি টাকারও বেশি অনিয়ম করেছেন। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে।
বহিরাঙ্গন বা মিউজিক্যাল শো , ‘জীবনের জন্য’, ‘জীবনের জন্য ফোন-ইন’, ‘সোনালী জীবন’, নিসর্গ‘ সাগরপাড়ের জীবন’টেকশই বাংলাদেশ সহ নিয়মিত প্রায় ১৫টি অনুষ্ঠানে আর্থিক অনিয়ম করা হয় বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।
কক্সবাজার বেতারে অনুষ্টান, প্রকৌশল ও বার্তা বিভাগে নেই কোন সমন্বয়। ফলে নিয়মিত প্রচার হচ্ছে নিম্ন মানের প্রোগ্রাম। পুরোনো অনুষ্ঠানের রেকর্ড বাজিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা। একই প্রোগ্রাম বার বার প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিভিন্ন অডিশনে অংশ গ্রহণকারী শিল্পীরা।

অনিয়মিত শিল্পী (হিসাব রক্ষক) নুরুল আজিম, আঞ্চলিক পরিচালকের পিএ ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী সংগীত সংকলক মোসলেম উদ্দীন, অনিয়মিত শিল্পী পিয়ন লুৎফর রহমান, আঞ্চলিক পরিচালকের বাবুর্চি মুবিন উদ্দিনের দাপটে ক্যাজুয়াল স্টাফ ও বেতারের রাজস্বখাতভূক্ত কর্মকর্তা কর্মচারী একেবারে জিম্মি অবস্থায় আছেন বলে জানা গেছে। প্রায় ২০ একর বেতার কেন্দ্রের এরিয়ার মধ্যে ২ একর জমিতে নিয়মিত চাষাবাদ করেন তারা। সেচকাজে ব্যবহার করা হয় সেচযন্ত্র অথচ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় বেতারের সরকারী বিদ্যুৎ লাইন থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জমি লাগিয়তের একটি কানাকড়ি ও সরকারী কোষাগারে জমা হয়নি। সেখানে তারা গরুর খামারও গড়ে তুলেছেন। আঞ্চলিক পরিচালকের নানা অনিয়মের সহযোগী হওয়ায় তাদেরকে মৌখিকভাবে চাষাবাদ ও গরুর খামার করার অনুমতি দিয়েছেন তিনি। অথচ কেপিআই এলাকায় চাষাবাদ কিংবা গরুর খামার করার কোন নিয়ম নেই।

কক্সবাজার বেতার কেন্দ্র
কক্সবাজার বেতার কেন্দ্র

আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য আরডির বাবুর্চি মুবিনের বেতন দেয়া হয় সরকারী ফান্ড থেকে । এই মুবিনকে আরো সুবিধা দিতে গিয়ে বেতার বিদ্যুৎ লাইন থেকে অটোরিকশা বা টমটমের গ্যারেজ খুলে দিলেন আরডি। সেই গ্যারেজ থেকে গত ২০ জানুয়ারী একটি টমটম বা বিদ্যুৎ চালিত অটোরিকশা চুরি হয়। এর জন্য আরডি দায়ী করে বসেন ড্রাইভার মিনহাজুল ইসলাম নামের এক কর্মচারীকে। কোন প্রকার তথ্য প্রমাণ ছাড়া দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে চাকুরীরত মিনহাজুল ইসলামকে টমটম চোর দাবী করে ফায়সালার নামে মোটা আংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন আরডির বাবুর্চি মুবিন উদ্দিন , মোসলেম উদ্দিন, নুরুল আজিম ও লুৎফুর রহমান। তারা সালিশের নামে চাল পড়া খাওয়ায়ে নানাভাবে নাজেহাল করে ক্লান্ত নয় সর্বশেষ বেতন বন্ধ রেখে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কাজে আরডি তাদের সহযোগিতা করছেন। মিনহাজের বেতন বন্ধ রেখেছে ২ মাস ধরে। ড্রাইভার মিনহাজকে বাবুর্চি মুবিন উদ্দিন বিভিন্ন মানুষ দিয়ে নানা ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছেন।

এ ব্যাপারে ড্রাইভার মিনহাজ বার বার আরডির কাছে গেলেও কোন সুরাহা না করে ডিআরডি নাজমুল হাসানের কাছে পাঠান, নাজমুল হাসান মিনহাজকে উল্টো বাবুর্চ মুবিনের সাথে বসে ফায়সালা করার কথা বলেন। এভাবে দুই মাস অতিবাহিত হলেও কোন সুরাহা হয়নি। দুই মাস ধরে বেতন ভাতা বন্ধ রাখায় মিনহাজ বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে রমজান মাসে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হাতে পায়ে ধরেও ডাইভার মিনহাজ আরডির মন গলাতে পারছেন না বলে একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আরডির সহযোগিতায় মোসলেম উদ্দিন ও নুরুল আজিম মিনহাজকে মারমুখী আচরনসহ বিভিন্নভাবে নাজেহাল এবং সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করছেন বলে অভিযোগ মিনহাজের।

২০০১ সাল থেকে এক কেন্দ্রে চাকুরীরত মোসলেম উদ্দিন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজেকে আওয়ামী লীগ দাবী করে নানাভাবে কর্মচারীদের হয়রানি করত । তার বিরুদ্ধে অফিসারের গায়ে হাত তোলারও অভিযোগ রয়েছে। মোসলেম উদ্দিন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হলেও অন্যান্য কর্মচারীদের তাকে স্যার ডাকতে বাধ্য করেন। আরডির সাথে সখ্যতা থাকায় ডিউটি অফিসারের দায়িত্বও পালন করেন মোসলেম উদ্দিন । এতে একজন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীকে ডিউটি অফিসারের চেয়ারে বসানোর ফলে বেতারের ঘোষক ঘোষিকাসহ অন্যান্য স্টাফদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সাবেক এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের সহযোগিতায় সুদূর বরিশাল থেকে বান্দরবান , বান্দরবান থেকে পূনরায় কক্সবাজারে বদলীকৃত স্টাফ মোসলেম উদ্দীনকে কক্সবাজার বেতারে স্বপদে পূণর্বহাল করেছেন এই আরডি। উল্লেখ্য ওই মোসলেম উদ্দীন চিকিৎসার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ৫ লক্ষ টাকার অনুদানও নিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আরডির সহযোগিতায় বদলি বানিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন মুসলেম উদ্দিন। ৫ আগষ্টের পর সরকারের পতন হওয়ার সাথে সাথে মোসলেম উদ্দিন নিজেকে বিএনপির নেতা হিসেবে, নুরুল আজিম জামাতের নেতা পরিচয় দিয়ে পুরো কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করছেন। অনেক কর্মচারীদের কাছ থেকে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। অনেকে চাহিদা মত টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আরডির মাধ্যমে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা গেছে ২০ বছর ধরে কর্মরত ক্যাজুয়াল স্টাফ কি-বোর্ড বাদক ফরমান উল্লাহ, ২৪ বছর ধরে কর্মরত অফিস সহায়ক ওসমানগণি, ডাবিং এডিটিং কাজের মাসুদ, মংখিও মারমা, মো: জাহেদেুল ইসলাম, আরাফাত রহমান সানি, নিরাপত্তা প্রহরী ওমর ফারুক, তবলা বাদক অনুপ নন্দী, বাঁশি বাদক রেজাউল করিম, সর্বশেষ বশির আহমদসহ প্রায় ডজন খানেক কর্মচারীকে কোন কারণ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন জানিয়েছেন আমরা কেউ স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেয়নি। আরডি আশরাফ কবির আমাদের সাথে এমন খারাপ আচরণ করেন যাতে আমরা চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের থেকে জোর করে স্বেচ্চায় চাকরি ছাড়ার ডকুমেন্ট দিতে হয়েছে। এখানেই শেষ নয় বর্তমানে কর্মরত ক্যাজুয়াল স্টাফ বিশেষ করে যন্ত্রীদের সদর দপ্তর কর্তৃক দৈনিক ১ হাজার টাকা করে ২১ দিনের চুক্তি দিলেও আরডি আশরাফ কবিরের সাথে যাদের সখ্যতা রয়েছে তারা ছাড়া বাকি সবাইকে ১৪/১৫ দিনের সম্মানি ধরিয়ে দেয়। এতে ক্যাজুয়েল স্টাফদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। নুরুল আজিম ও মোসলেম উদ্দীনের ক্ষমতার দাপট এতই জোরালো যে, কক্সবাজার বেতারের সকল অনিয়ম ও দূর্নীতি আরডি তাদের মাধ্যমে সম্পাদন করেন। যার কারণে তারা আরডির মাধ্যমে যে কাউকে যে কোন সময় হেনস্থা করেন এমনকি মতের বিরুদ্ধে গেলে রুমে তালা লাগিয়ে হয়রানী করারও অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দ করতে পারে না। প্রতিবাদ করলে কথায় কথায় হাত তুলেন মোসলেম উদ্দিন । সাম্প্রতিক সময়ে অফিসের রাজস্ব খাতের একজন উচ্চমান সহকারীকে উপ আঞ্চলিক প্রকৌশলীর কক্ষে কলোনী সংক্রান্ত বৈঠক চলাকালীন সবার সামনে মোসলেম উদ্দিন মারমুখি আচরণসহ প্রকাশ্যে চোখ তুলে ফেলার হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে । পরে ঘটনাটি আরডি আশরাফ কবির আঞ্চলিক প্রকৌশলীর মাধ্যমে ধামাচাপা দিয়ে মোসলেম উদ্দিনকে সেইভ করেছেন বলে জানা গেছে।

বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার
বেতার কেন্দ্র কক্সবাজার

ববিতা রানী নামের এক কর্মচারী প্রোগ্রামের মানোয়নের জন্য ডিজির কাছে একটি কম্পিউটার চেয়েছিলেন। একারণে তার বেতনভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, কোন কারণ ছাড়া শাহ আলম নামের আরেক কর্মচারীর বেতন বন্ধ করে দিয়েছিলেন আরডি। পরে আবার বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে বেতন পায়। আরডি ও তার অনুগত মোসলেম উদ্দীন ও নুরুল আজিমের আচরণের ফলে বেতারে কর্মকর্তা কর্মচারীরা রীতিমতো অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।
বেতারের ডরমিটরিতে আশরাফ কবির থাকেন তবে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দেয়া হয়না বলেও জানা গেছে। আরডি আশরাফ কবির ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইউনিসেফ প্রকল্পে কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে কক্সবাজার জেলার বাইরের ও নিজ এলাকার পছন্দের লোক নিয়োগ করেছেন। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দকৃত কোটা মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

বেতারের স্টাফ না হয়েও ইউনিসেফের লোকজন বেতারের সরকারী কোয়াটারে থাকেন আরডির একক ক্ষমতা বলে। সরকারী বাসা দেখাশুনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব আঞ্চলিক প্রকৌশলীর থাকলেও আরডির ক্ষমতার কাছে আঞ্চলিক প্রকৌশলী অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে দাবী করেছেন কর্মচারীরা। সংরক্ষিত কেপিআই এলাকা কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রের অভ্যন্তরে এত অনিয়ম দূর্নীতি কিভাবে হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফ কবির এ প্রতিবেদকে বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি সরকারী রীতিনীতি মেনেই কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করছি। তার কাছে প্রশ্ন ছিল বিনা টেন্ডারে ভাড়া করা গাড়িতে মাসে কত টাকা দিতে হয়, এর কোন উত্তর না দিয়ে তিনি নুরুল আজিমকে ফোন ধরিয়ে দেন। নুরুল আজিম এ প্রতিবেদককে বলেন, মাসে ৭০ হাজার টাকা। তাকে প্রশ্ন করা হলে গাড়ির মালিক মাসে ৪০ হাজার টাকা পায়। বাকী টাকা কার পকেটে ঢুকে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাকী টাকা ভ্যাট কাটা হয়। অথচ সরকারীভাবে গাড়ি ভাড়া বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। বেতারের স্টাফদের অভিযোগ বেতারের বিশাল এলাকাজুড়ে প্রচুর নারকেল গাছ, কাঠাল ও আম গাছ থেকে বছরে ১/২ লক্ষ টাকার যে ফল পাওয়া যায় সব ফল একত্রিত করে বিক্রি করেন আরডি নিজেই । আরডি আশরাফ কবির ট্রাক ভর্তি করে আম কাঁঠাল নোয়াখালীর গ্রামের বাড়িতেও নিয়ে যান বলে স্টাফেরা জানিয়েছেন। । এসব অভিযোগের ব্যাপারে আরডি আশরাফ কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব অনিয়মের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি অফিসের বাইরে আছি একদিন অফিসে আসেন কথা হবে।
আরডির দুর্নীতিতে সহযোগিতার অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে বেতারের ক্যাজুয়াল স্টাফ নুরুল আজিম ও মোসলেম উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারা বলেন, কোনো ধরনের অনিয়ম করিনি। একটি মহল আমাদের নামে এসব মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। লুৎফর রহমান ও মুবিন বলেন আমরা আরডির অনুমতি নিয়ে চাষাবাদ করছি। নিজেরা টাকা খরচ করে পাম্প বসিয়ে জমি চাষ করছি।

বিগত স্বৈরাচার সরকারের দোসর আরডি আশরাফ কবির ও তার অনুগত কর্মচারী মোসলেম উদ্দিন ও নুরুল আজিমসহ আরো কয়েকজন কর্মচারীর অনিয়ম, দূর্নীতি, লোপাট, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলছে কক্সবাজার বেতার কেন্দ্রে। সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক অভিযুক্ত আরডিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বেতার শিল্পী পরিষদ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিসহ অন্যান্য কর্মচারীগণ কঠোর আন্দোলনে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন