বেড়েছে খেলাপি ঋণ, সব ব্যাংক বাঁচানো যাবে না

- সময় ০৬:০৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 63
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২০.২০ শতাংশ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ শতাংশ। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা।
আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এ সময় ডেপুটি গভর্নরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, খেলাপি ঋণ বেড়েছে এবং আগামীতে আরও বাড়তে পারে। তবে এর সমাধানে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন আইন কঠোর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সিপিডি আয়োজিত এক সম্মেলনে বলেছেন, ব্যাংক খাতের সমস্যাগুলো সবার জানা। সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যাংক পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। তবে জোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ব্যাংক বাঁচানো যাবে না। কারণ, কোনো কোনো ব্যাংক থেকে ঋণের ৮৭ শতাংশই নিয়ে গেছে একটি পরিবার। এসব ঋণ আর ফেরত আসার সম্ভাবনা নেই।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, সুশাসনের অভাবের কারণে যেসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও ইউসিবির উন্নতি হয়েছে। ধীরে ধীরে এসব ব্যাংকের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে। আকার বিবেচনায় এই দুটি ব্যাংকের পুনরুদ্ধার মানে বেসরকারি খাতের সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকের ৬০ শতাংশ সমস্যার সমাধান।
তিনি আরও জানান, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণগত মান যাচাই করা হচ্ছে। আগামী এপ্রিলের মাঝামাঝি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, যা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। প্রত্যেক আমানতকারীকে অর্থ ফেরতের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, এজন্য আমানত বীমা স্কিমের আওতায় অর্থ ফেরতের পরিমাণ ১ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কয়েকটি ব্যাংকে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, যা আমানত বীমা তহবিলের অধীনে এক ধরনের অগ্রিম পরিশোধ।
গভর্নর বলেন, “নতুন আইনে এমন কিছু শর্ত যুক্ত করা হচ্ছে, যাতে ঋণখেলাপি কোম্পানিগুলোর পরিচালনা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ক্ষমতা ব্যাংকের হাতে থাকবে। এর ফলে বড় ব্যবসায়ীরা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হবেন। পাশাপাশি অর্থঋণ আদালতের সংখ্যা বাড়ানো ও রিট কমানোর বিষয়েও আলোচনা চলছে।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। এছাড়া আপাতত ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।