ঢাকা ০১:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাতিয়া-কুতুবদিয়া-নিঝুমদ্বীপ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পে দুর্নীতি!

বিশেষ প্রতিনিধি
  • সময় ০৩:২৯:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪
  • / 362

হাতিয়া-কুতুবদিয়া-নিঝুমদ্বীপ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পে দুর্নীতি!

কক্সবাজার এবং নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, নিঝুমদ্বীপ ও কুতুবদিয়ায় শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে নেয়া প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি’র অভিযোগ উঠেছে। ২০২১ সালে নেয়া এই প্রকল্প এখনও চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ব্যয় ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৬৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ উচ্ছাস ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পটির অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় কুতুবদিয়াকে জাতীয় গ্রিডের সাথে যুক্ত করতে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে দুই লেনে ৬ কিলোমিটার সাবমেরিন কেবল বসানো হয়, প্রথম দিকে এই কাজের জন্য বাজেট ধরা হয়েছিল ছয় কোটি টাকার সামান্য বেশি। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেই বাজেট বেড়ে দাড়ায় ৭ কোটি টাকার বেশি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় নিঝুমদ্বীপ ও জাহাজমারা এলাকায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। সেগুলোর উপর দিয়ে নিয়মিত সাকো হিসেবে পাড়াপাড় করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান উদ্দিন জানান, ক্যাবলগুলো মাটি চাপা দেয়া হয়েছিল। নদীর পার হওয়ায় মাটি সরে গিয়েছে। আর পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় ক্যাবেলগুলো স্থায়ীভাবে ঢেকে দেয়া যায়নি।

দুর্নীতি

১২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন উপকেন্দ্রে ১৪৮৬ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়। হাতিয়াতে ১১৬৫ কি.মি. নিঝুমদ্বীপে ৮৭কি.মি. কুতুবদিয়া ২৩৪ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা কথা রয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে তিনটি সাবস্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে।

হাতিয়া থেকে ১১ কেভি সাবমেরিন লাইনের মাধ্যমে নিঝুম দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ সাইড এবং জাহাজমারা ঘাটের উভয় পার্শ্বের সুইচিং স্টেশনের মেশিন অকেজো হয়ে পরে আছে। অভিযোগ আছে, নিম্নমানের যন্ত্রাংশ দিয়ে সুইচিং স্টেশনের কাজ সম্পন্ন করেছে। শুধু তাই না; যে কোম্পানির কাছ থেকে মালামাল সরবরাহ করা হয়েছিল, সে কোম্পানি এখন আর তা চেইঞ্জ করে দিচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ঠিকাদার নতুন এক কোম্পানির মাধ্যমে সেসব মালামাল চেইঞ্জ করে দেয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান। তিনি জানান, ‘এজন্য ওই ঠিকাদারের বিল আটকে রাখা হয়েছে।

প্রকল্পের জন্য ইলেকট্রিক পোল বরাদ্দ ২৩ হাজার পিচ। হাতিয়ায় বিশ হাজার পিচ, কুতুবদিয়া তিন হাজার পিচ পোল বরাদ্দ রয়েছে। থিকনেস কম দিয়ে কোনো মতে রং করা ১২০ কোটি টাকার নিম্নমানের বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্রয় করে। এখানেও পছন্দের ঠিকাদারের সাথে ভাগবাটোয়ারাতে মেতে ওঠে। বছর না ঘুরতেই সেসব ইলেকট্রিক পোলের অধিকাংশ উপরে পড়েছে। যা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন স্থানীয়রা।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিয়া-কুতুবদিয়ার ৬০ শতাংশ বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে সিমেন্টের কোনো ঢালাই দেওয়া নাই। ৭০ শতাংশ খুঁটিতে কোন আর্থিং নাই। যা আছে তাও অকেজো, প্রতিনিয়ত গরু ছাগল মারা যাচ্ছে। কাজ শেষ না করেই তার বাল্য বন্ধু দুই ঠিকাদারকে ১০০ শতাংশ বিল প্রদান করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতি নিম্নমানের ৩ কোটি টাকার বৈদ্যুতিক দুই হাজার পিচ সার্কিট ব্রেকার ক্রয় করেন যা রোদবৃষ্টিতে ভিজে ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। ভাউচারে বেশি দাম দেখিয়ে কিনেছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার নিম্ন মানের ব্রেকার। কোনটাই ব্যবহার করতে পারে নাই। যা হাতিয়া কুতুবদিয়ায় এলোমেলো ভাবে ফেলে রেখেছেন। ১৫০ কোটি টাকার যেসব বৈদ্যুতিক ক্যাবল ক্রয় করেছেন তা যেনো সুভংকরের ফাঁকি। যাতে নিম্নমানের আয়রন মিশ্রিত এ্যালুমেনিয়াম ও কপার ব্যবহার করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের বোঝা সম্ভব নয়।

হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর মালিকানাধীন এম আলী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি বিল্ডিং করেছেন, যেগুলোতে পুরনো ব্রিজ ভাঙ্গা রড ব্যবহার করায় নতুন বিল্ডিং এর ছাঁদ ভেঙ্গে পানি পরছে। ভবন দুটিতে কোটি টাকার ফার্নিচার ক্রয় করেছে, যেগুলো কাঠের নয় একধরনের কাগজের তৈরি, নিম্নমানের সোফা, চেয়ার খাট।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান জানান, ছাদ থেকে পানি পড়ছে বিষয়টি সঠিক নয়; তবে ভবনের ছাদের এক কোনায় পলেস্তারা খসে গিয়েছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে পলেস্তারা খসে যাওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

অভিযোগ রয়েছে প্রকল্প পরিচালক ফারুক আহমেদ তার বাল্য বন্ধুর মালিকানাধীন ইন্টু করপোরেশন এবং ইস্ট্রান ইলেকট্রিক দুইটা কোম্পানি এই প্রকল্পের মালামাল সরবরাহের কাজ করেন। কাজ ৩০ শতাংশ অসম্পূর্ণ থাকা সত্বেও ১০০ শতাংশ বল প্রদান করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি টাঙ্গাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মকালীন সময়ে ২ ট্রাক সরকারি ইলেকট্রিক ক্যাবল ট্রান্সফরমার চুরি করে বিক্রির দায়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ইএডিতে মামলা হয়। শাস্তি হিসেবে তাঁর ইনক্রিমেন্ট ও সিনিয়রিটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সদ্য সাবেক বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ২ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে ইএনডি মামলা থেকে অব্যাহতি নিয়ে নেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রকল্প পরিচালক ফারুক আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালক্ষেপন করেন। কোন মন্তব্য করেননি।

দুর্নীতি
স্থানীয় সুশিল সমাজের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম

ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে স্থানীয় সুশিল সমাজের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম জানান, এখানে যে বিদ্যুৎ এসেছে তার সাথে সাধারণ মানুষের আবেগ জড়িত। কিন্তু বিদ্যুতের খুটি স্থাপন করা হয়েছে, সেটি যথেষ্ট মানসম্পন্ন হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। কারন, ইতোমধ্যে সামান্য ঝড়ের সাথে অনেকগুলো পিলার বাকা হয়ে যাচ্ছে, অনেকগুলো পিলার পড়ে যাচ্ছে। এর ফলে স্থানীয়দের জানমালের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, এই পিলারগুলো এতো দ্রুত নষ্ট কিংবা পড়ে যাওয়ার কথা না। মূলত এখানে হয়তো বা কোন অসাধু কার্যকলাপে জড়িত থাকতে পারে।

আবার নিঝুম দ্বীপে সাব মেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সেই তারগুলো মাটির উপর ঝুকিপূর্ণভাবে পড়ে আছে। বিষয়টি তদন্ত করার দাবি জানান তিনি।

শেয়ার করুন

হাতিয়া-কুতুবদিয়া-নিঝুমদ্বীপ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পে দুর্নীতি!

সময় ০৩:২৯:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার এবং নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, নিঝুমদ্বীপ ও কুতুবদিয়ায় শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে নেয়া প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি’র অভিযোগ উঠেছে। ২০২১ সালে নেয়া এই প্রকল্প এখনও চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ব্যয় ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৬৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ উচ্ছাস ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পটির অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় কুতুবদিয়াকে জাতীয় গ্রিডের সাথে যুক্ত করতে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে দুই লেনে ৬ কিলোমিটার সাবমেরিন কেবল বসানো হয়, প্রথম দিকে এই কাজের জন্য বাজেট ধরা হয়েছিল ছয় কোটি টাকার সামান্য বেশি। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেই বাজেট বেড়ে দাড়ায় ৭ কোটি টাকার বেশি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় নিঝুমদ্বীপ ও জাহাজমারা এলাকায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। সেগুলোর উপর দিয়ে নিয়মিত সাকো হিসেবে পাড়াপাড় করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান উদ্দিন জানান, ক্যাবলগুলো মাটি চাপা দেয়া হয়েছিল। নদীর পার হওয়ায় মাটি সরে গিয়েছে। আর পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় ক্যাবেলগুলো স্থায়ীভাবে ঢেকে দেয়া যায়নি।

দুর্নীতি

১২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন উপকেন্দ্রে ১৪৮৬ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়। হাতিয়াতে ১১৬৫ কি.মি. নিঝুমদ্বীপে ৮৭কি.মি. কুতুবদিয়া ২৩৪ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা কথা রয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে তিনটি সাবস্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে।

হাতিয়া থেকে ১১ কেভি সাবমেরিন লাইনের মাধ্যমে নিঝুম দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ সাইড এবং জাহাজমারা ঘাটের উভয় পার্শ্বের সুইচিং স্টেশনের মেশিন অকেজো হয়ে পরে আছে। অভিযোগ আছে, নিম্নমানের যন্ত্রাংশ দিয়ে সুইচিং স্টেশনের কাজ সম্পন্ন করেছে। শুধু তাই না; যে কোম্পানির কাছ থেকে মালামাল সরবরাহ করা হয়েছিল, সে কোম্পানি এখন আর তা চেইঞ্জ করে দিচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ঠিকাদার নতুন এক কোম্পানির মাধ্যমে সেসব মালামাল চেইঞ্জ করে দেয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান। তিনি জানান, ‘এজন্য ওই ঠিকাদারের বিল আটকে রাখা হয়েছে।

প্রকল্পের জন্য ইলেকট্রিক পোল বরাদ্দ ২৩ হাজার পিচ। হাতিয়ায় বিশ হাজার পিচ, কুতুবদিয়া তিন হাজার পিচ পোল বরাদ্দ রয়েছে। থিকনেস কম দিয়ে কোনো মতে রং করা ১২০ কোটি টাকার নিম্নমানের বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্রয় করে। এখানেও পছন্দের ঠিকাদারের সাথে ভাগবাটোয়ারাতে মেতে ওঠে। বছর না ঘুরতেই সেসব ইলেকট্রিক পোলের অধিকাংশ উপরে পড়েছে। যা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন স্থানীয়রা।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিয়া-কুতুবদিয়ার ৬০ শতাংশ বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে সিমেন্টের কোনো ঢালাই দেওয়া নাই। ৭০ শতাংশ খুঁটিতে কোন আর্থিং নাই। যা আছে তাও অকেজো, প্রতিনিয়ত গরু ছাগল মারা যাচ্ছে। কাজ শেষ না করেই তার বাল্য বন্ধু দুই ঠিকাদারকে ১০০ শতাংশ বিল প্রদান করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতি নিম্নমানের ৩ কোটি টাকার বৈদ্যুতিক দুই হাজার পিচ সার্কিট ব্রেকার ক্রয় করেন যা রোদবৃষ্টিতে ভিজে ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। ভাউচারে বেশি দাম দেখিয়ে কিনেছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার নিম্ন মানের ব্রেকার। কোনটাই ব্যবহার করতে পারে নাই। যা হাতিয়া কুতুবদিয়ায় এলোমেলো ভাবে ফেলে রেখেছেন। ১৫০ কোটি টাকার যেসব বৈদ্যুতিক ক্যাবল ক্রয় করেছেন তা যেনো সুভংকরের ফাঁকি। যাতে নিম্নমানের আয়রন মিশ্রিত এ্যালুমেনিয়াম ও কপার ব্যবহার করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের বোঝা সম্ভব নয়।

হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর মালিকানাধীন এম আলী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি বিল্ডিং করেছেন, যেগুলোতে পুরনো ব্রিজ ভাঙ্গা রড ব্যবহার করায় নতুন বিল্ডিং এর ছাঁদ ভেঙ্গে পানি পরছে। ভবন দুটিতে কোটি টাকার ফার্নিচার ক্রয় করেছে, যেগুলো কাঠের নয় একধরনের কাগজের তৈরি, নিম্নমানের সোফা, চেয়ার খাট।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী রায়হান জানান, ছাদ থেকে পানি পড়ছে বিষয়টি সঠিক নয়; তবে ভবনের ছাদের এক কোনায় পলেস্তারা খসে গিয়েছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে পলেস্তারা খসে যাওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

অভিযোগ রয়েছে প্রকল্প পরিচালক ফারুক আহমেদ তার বাল্য বন্ধুর মালিকানাধীন ইন্টু করপোরেশন এবং ইস্ট্রান ইলেকট্রিক দুইটা কোম্পানি এই প্রকল্পের মালামাল সরবরাহের কাজ করেন। কাজ ৩০ শতাংশ অসম্পূর্ণ থাকা সত্বেও ১০০ শতাংশ বল প্রদান করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি টাঙ্গাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মকালীন সময়ে ২ ট্রাক সরকারি ইলেকট্রিক ক্যাবল ট্রান্সফরমার চুরি করে বিক্রির দায়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ইএডিতে মামলা হয়। শাস্তি হিসেবে তাঁর ইনক্রিমেন্ট ও সিনিয়রিটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সদ্য সাবেক বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ২ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে ইএনডি মামলা থেকে অব্যাহতি নিয়ে নেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রকল্প পরিচালক ফারুক আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালক্ষেপন করেন। কোন মন্তব্য করেননি।

দুর্নীতি
স্থানীয় সুশিল সমাজের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম

ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে স্থানীয় সুশিল সমাজের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম জানান, এখানে যে বিদ্যুৎ এসেছে তার সাথে সাধারণ মানুষের আবেগ জড়িত। কিন্তু বিদ্যুতের খুটি স্থাপন করা হয়েছে, সেটি যথেষ্ট মানসম্পন্ন হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। কারন, ইতোমধ্যে সামান্য ঝড়ের সাথে অনেকগুলো পিলার বাকা হয়ে যাচ্ছে, অনেকগুলো পিলার পড়ে যাচ্ছে। এর ফলে স্থানীয়দের জানমালের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, এই পিলারগুলো এতো দ্রুত নষ্ট কিংবা পড়ে যাওয়ার কথা না। মূলত এখানে হয়তো বা কোন অসাধু কার্যকলাপে জড়িত থাকতে পারে।

আবার নিঝুম দ্বীপে সাব মেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সেই তারগুলো মাটির উপর ঝুকিপূর্ণভাবে পড়ে আছে। বিষয়টি তদন্ত করার দাবি জানান তিনি।