ঢাকা ০২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হুমকিতে ব্রিজ, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি

বিএনপি নেতাদের অবৈধভাবে বালু তোলার মহোৎসব

শেখ ফজলে রাব্বি, জামালপুর
  • সময় ১০:০৬:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 76

অবৈধ বালু ব্যবসা

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের মাদারদহ নদীতে ভেকু মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে ওই এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল কোন প্রকার ইজারা ছাড়াই বালু উত্তোলন করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। এতদিন আওয়ামী লীগের লোকজন এ ব্যবসা করলেও এখন বিএনপির নেতাদের দখলে চলে গেছে অবৈধ বালু ব্যবসা। সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন স্থানীয়রা।

এ নিয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার ফরহাদ হোসেন মিন্টু ও নুনু স্থানীয় ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মাদারদহ নদী থেকে ইজারা ছাড়াই ভেকু মেশিন বসিয়ে লাখ লাখ টাকা বালু উত্তোলন করে দেদারছে বিক্রি করছে প্রতিনিয়ত।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে। ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বালু উত্তোলন করছে। প্রশাসন থাকতে কিভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলে? বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে সরকারি স্থাপনাসহ এই জনপদ ধ্বংস হয়ে যাবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী নুনু নেতৃত্বে মাদারদহ নদী বালু উত্তোলন হয়। দীর্ঘদিন ধরে নুনু বালু ব্যবসা করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারেন না।

স্থানীয় আরও কয়েকজন কৃষক জানান, এখানে বালু ব্যবসা করছেন সব প্রভাবশালী। তাদের কিছু বলা যায় না। আর এই বালুর কারণে তারা কোনো ফসলই আবাদ করতে পারছেন না। সব জমি আস্তে আস্তে বালু ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছেন। এ রকম চলতে থাকলে কিছুদিন পর আর চাষযোগ্য জমি থাকবে না।

এ পথে নিয়মিত চলাচল করে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তাদের মধ্যে রুবেল বলেন, বালু ব্যবসার কারণে মারাত্মক ভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ধুলাবালির মধ্যে দিয়ে তাদের কলেজে যেতে হয়। ধুলাবালি নাক-মুখ দিয়ে শরীরের ভেতরে ‍ঢুকে নানা রকম রোগের সৃষ্টি করে।

চিনিতোলা বাজারের এক ব্যবসায়ী  বলেন, বালুবাহী ট্রাকের ধুলায় আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। ধুলাবালির কারণে ঠিকমত ব্যবসা করতে পারছি না। দোকানের জিনিসপত্র ধুলায় নোংরা হয়ে যাচ্ছে। জামাকাপড় নষ্ট হচ্ছে ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

নুনু বলেন, দৈনিক আমাকে ১ হাজার টাকা করে মুজুরী দেয়। এজন্য বালুর ঘাটে থাকি। এ বিষয়ে কুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন মিন্টু বলেন, ‘প্রতিবছরই ওখান থেকে বালু উঠে, এবারো জমির মালিকরা বালু বিক্রি করছে, আমরা কিনে সড়িয়ে দিচ্ছি। এতদিন আওয়ামী লীগ কাটছে, অনেকদিন পর এবার আমরা একটু গেছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভেকু মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

হুমকিতে ব্রিজ, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি

বিএনপি নেতাদের অবৈধভাবে বালু তোলার মহোৎসব

সময় ১০:০৬:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের মাদারদহ নদীতে ভেকু মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে ওই এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল কোন প্রকার ইজারা ছাড়াই বালু উত্তোলন করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। এতদিন আওয়ামী লীগের লোকজন এ ব্যবসা করলেও এখন বিএনপির নেতাদের দখলে চলে গেছে অবৈধ বালু ব্যবসা। সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন স্থানীয়রা।

এ নিয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার ফরহাদ হোসেন মিন্টু ও নুনু স্থানীয় ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মাদারদহ নদী থেকে ইজারা ছাড়াই ভেকু মেশিন বসিয়ে লাখ লাখ টাকা বালু উত্তোলন করে দেদারছে বিক্রি করছে প্রতিনিয়ত।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে। ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বালু উত্তোলন করছে। প্রশাসন থাকতে কিভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলে? বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে সরকারি স্থাপনাসহ এই জনপদ ধ্বংস হয়ে যাবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী নুনু নেতৃত্বে মাদারদহ নদী বালু উত্তোলন হয়। দীর্ঘদিন ধরে নুনু বালু ব্যবসা করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারেন না।

স্থানীয় আরও কয়েকজন কৃষক জানান, এখানে বালু ব্যবসা করছেন সব প্রভাবশালী। তাদের কিছু বলা যায় না। আর এই বালুর কারণে তারা কোনো ফসলই আবাদ করতে পারছেন না। সব জমি আস্তে আস্তে বালু ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছেন। এ রকম চলতে থাকলে কিছুদিন পর আর চাষযোগ্য জমি থাকবে না।

এ পথে নিয়মিত চলাচল করে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তাদের মধ্যে রুবেল বলেন, বালু ব্যবসার কারণে মারাত্মক ভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ধুলাবালির মধ্যে দিয়ে তাদের কলেজে যেতে হয়। ধুলাবালি নাক-মুখ দিয়ে শরীরের ভেতরে ‍ঢুকে নানা রকম রোগের সৃষ্টি করে।

চিনিতোলা বাজারের এক ব্যবসায়ী  বলেন, বালুবাহী ট্রাকের ধুলায় আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। ধুলাবালির কারণে ঠিকমত ব্যবসা করতে পারছি না। দোকানের জিনিসপত্র ধুলায় নোংরা হয়ে যাচ্ছে। জামাকাপড় নষ্ট হচ্ছে ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

নুনু বলেন, দৈনিক আমাকে ১ হাজার টাকা করে মুজুরী দেয়। এজন্য বালুর ঘাটে থাকি। এ বিষয়ে কুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন মিন্টু বলেন, ‘প্রতিবছরই ওখান থেকে বালু উঠে, এবারো জমির মালিকরা বালু বিক্রি করছে, আমরা কিনে সড়িয়ে দিচ্ছি। এতদিন আওয়ামী লীগ কাটছে, অনেকদিন পর এবার আমরা একটু গেছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভেকু মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।