০৩:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাসের পর ট্রলারে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ০১:০১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 68

বাসের পর ট্রলারে গৃহবধূ ধর্ষণ

রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস্ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির সময় দুই নারীকে ধর্ষণের ঘটনার পর এবার মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট এলাকায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে এক গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

ভুক্তভোগী জানান, শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রলারে ওঠার পর তিন যুবক তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় পদ্মা সেতু উত্তর থানায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ইয়ামিন মুন্সী (১৯), জামাল মোল্লা (২৩) ও জব্বার শেখকে (১৮) গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার রাতে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে বৃহস্পতিবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী গৃহবধূ তার স্বামীর সঙ্গে পদ্মা সেতু উত্তর থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাৎক্ষণিক তদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে মামলা রুজু করে।

১৮ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত জামাল মোল্লাকে পদ্মা নদীর পাড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে পদ্মা সেতু সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপর দুই আসামি ইয়ামিন ও জব্বারকে আটক করা হয়।

মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, ভুক্তভোগী গৃহবধূ ফেরিঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিক ও জামাল মোল্লা তাকে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ট্রলারে তোলে। পথে অপর দুই অভিযুক্ত ইয়ামিন ও জব্বার ট্রলারে ওঠে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ট্রলারটি পদ্মা নদীর ডোমরাখালী চরে গিয়ে থামে। জনমানবহীন ওই স্থানে ভয়ভীতি দেখিয়ে চারজন মিলে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। পরে রাত ৯টার দিকে মাওয়া পুরাতন কোস্ট গার্ড স্টেশনের পাশে নামিয়ে দিয়ে কাউকে কিছু না বলার হুমকি দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, অভিযুক্ত তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ঘটনায় ব্যবহৃত ট্রলার এবং আলামত হিসেবে একটি জিও ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং তার ব্যবহৃত জামাকাপড় আলামত হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং পলাতক অপর অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিককে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

এদিকে, গাবতলী থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে বাসের চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নাটোরের পুলিশ।

বড়াইগ্রাম থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বহস্পতিবার দুপুরে বড়াইগ্রাম থানার মোড় এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন—বাসচালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) এবং সহকারী মাহবুব আলম (২৮)।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১০টায় গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় নতুন কিছু যাত্রী ওঠার পর টাঙ্গাইল এলাকায় পৌঁছালে ৮-১০ জনের একটি দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করে এবং দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। পরে মির্জাপুর এলাকায় বাস থামিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

বাসযাত্রী মজনু আকন্দ বলেন, “গাবতলী থেকে বাস ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। তারা আমাদের সব মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নেয় এবং দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে।”

শেয়ার করুন

বাসের পর ট্রলারে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

সময় ০১:০১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস্ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির সময় দুই নারীকে ধর্ষণের ঘটনার পর এবার মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট এলাকায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে এক গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

ভুক্তভোগী জানান, শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রলারে ওঠার পর তিন যুবক তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় পদ্মা সেতু উত্তর থানায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ইয়ামিন মুন্সী (১৯), জামাল মোল্লা (২৩) ও জব্বার শেখকে (১৮) গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার রাতে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে বৃহস্পতিবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী গৃহবধূ তার স্বামীর সঙ্গে পদ্মা সেতু উত্তর থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাৎক্ষণিক তদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে মামলা রুজু করে।

১৮ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত জামাল মোল্লাকে পদ্মা নদীর পাড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে পদ্মা সেতু সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপর দুই আসামি ইয়ামিন ও জব্বারকে আটক করা হয়।

মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, ভুক্তভোগী গৃহবধূ ফেরিঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিক ও জামাল মোল্লা তাকে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ট্রলারে তোলে। পথে অপর দুই অভিযুক্ত ইয়ামিন ও জব্বার ট্রলারে ওঠে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ট্রলারটি পদ্মা নদীর ডোমরাখালী চরে গিয়ে থামে। জনমানবহীন ওই স্থানে ভয়ভীতি দেখিয়ে চারজন মিলে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। পরে রাত ৯টার দিকে মাওয়া পুরাতন কোস্ট গার্ড স্টেশনের পাশে নামিয়ে দিয়ে কাউকে কিছু না বলার হুমকি দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, অভিযুক্ত তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ঘটনায় ব্যবহৃত ট্রলার এবং আলামত হিসেবে একটি জিও ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং তার ব্যবহৃত জামাকাপড় আলামত হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং পলাতক অপর অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিককে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

এদিকে, গাবতলী থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে বাসের চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নাটোরের পুলিশ।

বড়াইগ্রাম থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বহস্পতিবার দুপুরে বড়াইগ্রাম থানার মোড় এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন—বাসচালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) এবং সহকারী মাহবুব আলম (২৮)।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১০টায় গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় নতুন কিছু যাত্রী ওঠার পর টাঙ্গাইল এলাকায় পৌঁছালে ৮-১০ জনের একটি দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করে এবং দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। পরে মির্জাপুর এলাকায় বাস থামিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

বাসযাত্রী মজনু আকন্দ বলেন, “গাবতলী থেকে বাস ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। তারা আমাদের সব মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নেয় এবং দুই নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে।”