ঢাকা ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বান্দরবানের লুকানো ধন

আকাশ ইসলাম
  • সময় ০৭:৩৬:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 247

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান। এই অপরূপ পাহাড়ি অঞ্চলটি শুধু তার মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের জন্যই নয় বরং এর গর্ভে লুকিয়ে থাকা মূল্যবান খনিজ সম্পদের জন্যও বিশেষভাবে পরিচিত। যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জিপসাম, এক ধরনের নরম খনিজ, যা সাদা বা ধূসর রঙের হয়। কখনও কখনও এটি স্বচ্ছ বা ক্রিস্টাল আকারেও পাওয়া যায়।

বান্দরবানের থানচি এবং রুমা উপজেলায় প্রধানত জিপসামের খনি পাওয়া যায়, যেখানে স্থানীয় শ্রমিকরা খনন ও উত্তোলনের কাজ করে থাকে। বান্দরবানে জিপসামের মজুদ প্রথম আবিষ্কৃত হয় কয়েক দশক আগে। যার গুণগত মান অত্যন্ত উচ্চ।

জিপসাম, যা ক্যালসিয়াম সালফেট ডাই হাইড্রেটের সমন্বয়ে গঠিত একটি খনিজ। ধারণা করা হচ্ছে, বান্দরবানের ১ থেকে ২ মিলিয়ন টন জিপসামের মজুদ রয়েছে।

খনির কার্যক্রম শুরু হয় ভূতাত্ত্বিক জরিপের মাধ্যমে। এরপর ড্রিলিং এবং বিস্ফোরণের মাধ্যমে পাথরের মধ্যে থেকে জিপসাম আলাদা করা হয়। বগ বড় জিপসাম পাথর লোডার বা বুলডোজার দিয়ে পরিবহন করা হয় এবং প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশে চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং অন্যান্য অঞ্চলে জিপসাম প্রক্রিয়াকরণ ফ্যাক্টরি রয়েছে। এসব ফ্যাক্টরিতে জিপসামকে পিষে গুঁড়ো বা দানাদার আকারে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। প্রক্রিয়াজাতকরণ শেষে, এই জিপসাম বিভিন্ন নির্মাণ ও কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

জিপসাম বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। নির্মাণ শিল্পে এটি প্লাস্টার, ড্রাইওয়াল এবং সিমেন্টের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কৃষি ক্ষেত্রে জিপসাম মাটি কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং এটি মাটির পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এছাড়াও, জিপসাম ব্ল্যাকবোর্ড চক এবং অন্যান্য পণ্যের প্রাথমিক উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

বান্দরবানের জিপসাম খনি স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছড়াও, এটি ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং অন্যান্য বড় শহরে পরিবহন করা হয় এবং রপ্তানি করা হয় আন্তর্জাতিক বাজারে। যার বার্ষিক বাজার মূল্য আনুমানিক ৩০ কোটি থেকে ৫৫ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের জিপসাম বাজার দ্রæত বাড়ছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ডলারের জিপসাম পণ্য দেশে ও বিদেশে বিক্রি হয়। বর্তমানে এই শিল্পে কয়েক হাজার লোক কর্মরত। গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী জিপসাম বাজার ২০২৮ সালের মধ্যে ৫৯.৩৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।

ভবিষ্যতের দিকে তাকালে, বান্দরবানের জিপসামের খনি এলাকার লুকানো সম্ভাবনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়ায়।

শেয়ার করুন

বান্দরবানের লুকানো ধন

সময় ০৭:৩৬:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান। এই অপরূপ পাহাড়ি অঞ্চলটি শুধু তার মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের জন্যই নয় বরং এর গর্ভে লুকিয়ে থাকা মূল্যবান খনিজ সম্পদের জন্যও বিশেষভাবে পরিচিত। যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জিপসাম, এক ধরনের নরম খনিজ, যা সাদা বা ধূসর রঙের হয়। কখনও কখনও এটি স্বচ্ছ বা ক্রিস্টাল আকারেও পাওয়া যায়।

বান্দরবানের থানচি এবং রুমা উপজেলায় প্রধানত জিপসামের খনি পাওয়া যায়, যেখানে স্থানীয় শ্রমিকরা খনন ও উত্তোলনের কাজ করে থাকে। বান্দরবানে জিপসামের মজুদ প্রথম আবিষ্কৃত হয় কয়েক দশক আগে। যার গুণগত মান অত্যন্ত উচ্চ।

জিপসাম, যা ক্যালসিয়াম সালফেট ডাই হাইড্রেটের সমন্বয়ে গঠিত একটি খনিজ। ধারণা করা হচ্ছে, বান্দরবানের ১ থেকে ২ মিলিয়ন টন জিপসামের মজুদ রয়েছে।

খনির কার্যক্রম শুরু হয় ভূতাত্ত্বিক জরিপের মাধ্যমে। এরপর ড্রিলিং এবং বিস্ফোরণের মাধ্যমে পাথরের মধ্যে থেকে জিপসাম আলাদা করা হয়। বগ বড় জিপসাম পাথর লোডার বা বুলডোজার দিয়ে পরিবহন করা হয় এবং প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশে চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং অন্যান্য অঞ্চলে জিপসাম প্রক্রিয়াকরণ ফ্যাক্টরি রয়েছে। এসব ফ্যাক্টরিতে জিপসামকে পিষে গুঁড়ো বা দানাদার আকারে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। প্রক্রিয়াজাতকরণ শেষে, এই জিপসাম বিভিন্ন নির্মাণ ও কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

জিপসাম বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। নির্মাণ শিল্পে এটি প্লাস্টার, ড্রাইওয়াল এবং সিমেন্টের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কৃষি ক্ষেত্রে জিপসাম মাটি কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং এটি মাটির পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এছাড়াও, জিপসাম ব্ল্যাকবোর্ড চক এবং অন্যান্য পণ্যের প্রাথমিক উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

বান্দরবানের জিপসাম খনি স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছড়াও, এটি ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং অন্যান্য বড় শহরে পরিবহন করা হয় এবং রপ্তানি করা হয় আন্তর্জাতিক বাজারে। যার বার্ষিক বাজার মূল্য আনুমানিক ৩০ কোটি থেকে ৫৫ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের জিপসাম বাজার দ্রæত বাড়ছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ডলারের জিপসাম পণ্য দেশে ও বিদেশে বিক্রি হয়। বর্তমানে এই শিল্পে কয়েক হাজার লোক কর্মরত। গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী জিপসাম বাজার ২০২৮ সালের মধ্যে ৫৯.৩৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।

ভবিষ্যতের দিকে তাকালে, বান্দরবানের জিপসামের খনি এলাকার লুকানো সম্ভাবনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়ায়।