ঢাকা ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার ঊর্ধ্বগতি

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১১:১৬:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
  • / 252

বাংলাদেশ, একটি উন্নয়নশীল দেশ যেখানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ শিক্ষার্থী। কিন্তু সম্প্রতিকালে, একটি অন্ধকার ছায়া নেমে এসেছে তরুণ প্রজন্মের উপর।

২০২৩ সালে, ৫১৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন, যাদের মধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি নারী। আরো উদ্বেগের বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের তুলনায় স্কুলমুখী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করেছে তারা। তার পরিমাণ ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ।

সংগঠনটি আরো জানায়, ২০২২ সালে আত্মহত্যা করে ৫৩২ জন শিক্ষার্থী। নারী শিক্ষার্থীদের উপর সামাজিক ও পারিবারিক চাপ এবং বিভিন্ন রকম মানসিক সমস্যা তাদের
আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে প্রেম, পারিবারিক নির্যাতন এবং যৌন হয়রানির মত বিষয়গুলো তাদের মানসিকতাকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

জরিপ অনুযায়ী, আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে ৬৬.৫ শতাংশের বয়স ১৩-১৯ বছর। এটি স্পষ্ট করে যে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করতে অধিকাংশই ব্যর্থ হচ্ছে।

আত্মহত্যার হার ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি, যেখানে ১৪৯ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। চট্টগ্রাম বিভাগে এই সংখ্যা ৮৯ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ৭৭ জন। খুলনা বিভাগের ৬৪ জন শিক্ষার্থী। তালিকার পঞ্চম স্থানে যৌথভাবে রয়েছে বরিশাল ও রংপুর বিভাগের নাম। আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৩ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৬ জন এবং সিলেট বিভাগের ১২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

২০২৩ সালে যে ৫১৩ জন আত্মহত্যা করেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ২২৭ জন স্কুল শিক্ষার্থী, ১৪০ জন কলেজ শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৯৮ জন এবং ৪৮ জন মাদ্রাসা
শিক্ষার্থী।

বিভিন্ন বিভাগের আত্মহত্যার এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় যে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

সংগঠনটি জানিয়েছে, আত্মহননকারীদের মধ্যে প্রায় ১০ ভাগ মানসিক সমস্যার কারণে এই পথ বেছে নিয়েছেন। আর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ গবেষণা বলছে কিশোর-কিশোরীদের প্রায় ১৩ ভাগ মানসিক রোগে আক্রান্ত। আর দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১৮ শতাংশ মানসিক রোগে ভুগছেন।

আঁচল ফাউন্ডেশনের দাবি, ২০২২ সালের সঙ্গে তুলনা করলে ২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সামান্য কম। কিন্তু এটা আসলে কমার কোন প্রবণতা নয়।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চ‚ড়ান্ত হতাশা থেকেই মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এর পেছনে অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও সামাজিক কারণ আছে। সেগুলো এখনও বিদ্যমান। সুতরাং আত্মহত্যা প্রবণতা সামনের দিনগুলোতে আরো বাড়বে।

শেয়ার করুন

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার ঊর্ধ্বগতি

সময় ১১:১৬:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

বাংলাদেশ, একটি উন্নয়নশীল দেশ যেখানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ শিক্ষার্থী। কিন্তু সম্প্রতিকালে, একটি অন্ধকার ছায়া নেমে এসেছে তরুণ প্রজন্মের উপর।

২০২৩ সালে, ৫১৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন, যাদের মধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি নারী। আরো উদ্বেগের বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের তুলনায় স্কুলমুখী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করেছে তারা। তার পরিমাণ ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ।

সংগঠনটি আরো জানায়, ২০২২ সালে আত্মহত্যা করে ৫৩২ জন শিক্ষার্থী। নারী শিক্ষার্থীদের উপর সামাজিক ও পারিবারিক চাপ এবং বিভিন্ন রকম মানসিক সমস্যা তাদের
আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে প্রেম, পারিবারিক নির্যাতন এবং যৌন হয়রানির মত বিষয়গুলো তাদের মানসিকতাকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

জরিপ অনুযায়ী, আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে ৬৬.৫ শতাংশের বয়স ১৩-১৯ বছর। এটি স্পষ্ট করে যে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং চাপের সঙ্গে মোকাবিলা করতে অধিকাংশই ব্যর্থ হচ্ছে।

আত্মহত্যার হার ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি, যেখানে ১৪৯ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। চট্টগ্রাম বিভাগে এই সংখ্যা ৮৯ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ৭৭ জন। খুলনা বিভাগের ৬৪ জন শিক্ষার্থী। তালিকার পঞ্চম স্থানে যৌথভাবে রয়েছে বরিশাল ও রংপুর বিভাগের নাম। আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৩ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৬ জন এবং সিলেট বিভাগের ১২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

২০২৩ সালে যে ৫১৩ জন আত্মহত্যা করেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ২২৭ জন স্কুল শিক্ষার্থী, ১৪০ জন কলেজ শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৯৮ জন এবং ৪৮ জন মাদ্রাসা
শিক্ষার্থী।

বিভিন্ন বিভাগের আত্মহত্যার এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় যে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

সংগঠনটি জানিয়েছে, আত্মহননকারীদের মধ্যে প্রায় ১০ ভাগ মানসিক সমস্যার কারণে এই পথ বেছে নিয়েছেন। আর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ গবেষণা বলছে কিশোর-কিশোরীদের প্রায় ১৩ ভাগ মানসিক রোগে আক্রান্ত। আর দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১৮ শতাংশ মানসিক রোগে ভুগছেন।

আঁচল ফাউন্ডেশনের দাবি, ২০২২ সালের সঙ্গে তুলনা করলে ২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সামান্য কম। কিন্তু এটা আসলে কমার কোন প্রবণতা নয়।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চ‚ড়ান্ত হতাশা থেকেই মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এর পেছনে অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও সামাজিক কারণ আছে। সেগুলো এখনও বিদ্যমান। সুতরাং আত্মহত্যা প্রবণতা সামনের দিনগুলোতে আরো বাড়বে।