প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, পাল্টা হুমকি নেতানিয়াহুর

- সময় ১১:০১:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
- / 36
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং একে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
একই সঙ্গে নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি তারা ইসরায়েলের অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তবে ইসরায়েল গাজার বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
স্থানীয় সময় সোমবার (৩ মার্চ) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক রেকর্ডেড বক্তৃতায় নেতানিয়াহু বলেন, গাজা উপত্যকায় হামাস যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, সেটি আমরা গ্রহণ করব না। এটি আমাদের জন্য একেবারে অগ্রহণযোগ্য। খবর আল জাজিরা।
তিনি আরও জানান, ইসরায়েল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে উপস্থাপিত একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং ৫০ দিনের জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। তবে, তিনি দাবি করেন, হামাস এখনো পর্যন্ত এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা মেনে নিয়েছে, কিন্তু হামাস তা প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত আছি। নেতানিয়াহু একদিকে শান্তির পক্ষে কথা বললেও, অন্যদিকে বলেন, হামাস যদি আমাদের জিম্মিদের আটকে রাখে, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আরও শক্ত পদক্ষেপ নেব।
অপরদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করবে না। তারা চায় যুদ্ধবিরতির সব ধাপ সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হোক। যার মধ্যে রয়েছে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তবে, নেতানিয়াহু একাধিকবার হুমকি দিয়ে বলেছেন, আমরা ক্ষুধাকে হামাসের বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছি। এখানে বিনামূল্যে খাবার থাকবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, তার বাহিনী আবারও যুদ্ধ শুরু করতে পারে এবং গাজার জন্য ‘নরকের দরজা’ খুলে যাবে।
গাজা উপত্যকা নিয়ে এই পরিস্থিতির মধ্যে রোববার (২ মার্চ) থেকে গাজার মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে, কারণ ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে গাজার ফিলিস্তিনিরা রমজানে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছে না এবং মানবিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং গাজার জনগণের জন্য সহায়তা পাঠানোর দাবি তোলা হয়েছে।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮,৩৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১,১১,৭৮০ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি গণমাধ্যম জানাচ্ছে, মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০৯ জন হতে পারে, কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু ফিলিস্তিনি আটকে রয়েছেন, যারা মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি গাজা এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং পরিস্থিতি কবে শান্ত হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।