ঢাকা ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ রক্তের গ্রুপ যেটি মাত্র ৪৩ জনের শরীরে আছে

আকাশ ইসলাম
  • সময় ০৮:৩৮:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
  • / 266

আমরা সবাই জানি, রক্তের চারটি গ্রুপ রয়েছে। এগুলো হলো- এ, বি, ও এবং এবি। এরপর রয়েছে আরএইচ ফ্যাক্টর। মানে নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্তের পজেটিভ ও নেগেটিভ।

যাদের শরীরে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত রয়েছে, বিপদে পড়লে তা খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হয় পরিবারের সদস্যদের। সাধারণত যে সমস্ত গ্রুপের রক্ত প্রতি এক হাজার জনে এক জনের শরীরে থাকে, সেগুলিকে বিলের রক্ত বলে ব্যাখ্যা করা হয়।

আমেরিকার রেড ক্রসের মতে, ও নেগেটিভ হল তেমনই একটি বিরল রক্তের গ্রুপ। কিন্তু পৃথিবীতে এমনও রক্তের গ্রুপে রয়েছে, যা প্রতি ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে এক জনের আছে।

বিজ্ঞানীরা দুর্লভ এই রক্তের নাম দিয়েছেন, ‘গোল্ডেন ব্লাড’ বা ‘সোনালি রক্ত’। বর্তমানে বিশ্বে মাত্র ৪৩ জনের দেহে এই রক্তের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অবশ্য কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলেন, এই সংখ্যা ৪৯। সর্বোপরি বলা যায়, ৫০ জনেরও কম মানুষের এই গ্রুপের রক্ত আছে।

সাধারণত রক্ত পজেটিভ নাকি নেগেটিভ হবে, তা নির্ভর করে আরএইচ প্রোটিনের ওপর। এটি থাকলে রক্ত পজিটিভ, অন্যথায় নেগেটিভ।

১৯৬০ সালে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর দেহে এক বিশেষ রক্তের খোঁজ পাওয়া যায়। যার আরএইচ প্রোটিন পজেটিভ বা নেগেটিভ; কোনও গ্রুপেই ফেলা যাচ্ছিল না। পরে চিকিৎসকরা এই রক্তের নাম দেন ‘গোল্ডেন ব্লাড’ বা ‘সোনালি রক্ত’। একে আরএইচ নালও বলা হয়।

১৯৭৪ সালে ১০ বছর বয়সী এক শিশু টমাস এক ধরনের ইনফেকশনের জন্য ‘ইউনির্ভাসিটি হসপিটাল অব জেনেভা’ তে রক্ত পরীক্ষার জন্য যায়। রক্ত পরীক্ষার পর দেখা যায় তার রক্ত রক্তের ৩৬টি গ্রুপের কোনটির সাথেই মিল নেই। পরবর্তীতে আরো পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর জানা যায় তার রক্তে আরএইচ-নাল ছিল।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, এটি কোনো রোগ নয়। মূলত জিনগত কারণে কারো কারো রক্ত সোনালি হয়। আগের প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে এই ধারা প্রবাহিত হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য নয়। কয়েক প্রজন্ম পর হঠাৎ একজনের শরীরে তা দেখা যেতে পারে। এতে রক্তের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে।

সমগোত্রীয় অর্থাৎ যাদের শরীরে এই ধরনের রক্ত প্রবাহিত হয় প্রয়োজনে একমাত্র তারাই এ রক্ত দিতে পারবেন। অন্য কারও রক্ত নিলে শরীরে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। যে কারণে এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও দুর্লভ রক্ত বলা হয়।

তবে গোল্ডেন ব্লাডের অধিকারী মানুষ বিশ্বের যে কোনও মানুষকে রক্ত দিতে পারেন। বেশ কয়েকটি বিরল রোগের চিকিৎসায় সোনালি রক্ত কাজে লাগে। তাই প্রকৃতপক্ষেই এটা গোল্ডেন ব্লাড। চিহ্নিত ৪৩ জনের মধ্যে নয়জন নিয়মিত রক্ত দান করেন।

শেয়ার করুন

পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ রক্তের গ্রুপ যেটি মাত্র ৪৩ জনের শরীরে আছে

সময় ০৮:৩৮:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

আমরা সবাই জানি, রক্তের চারটি গ্রুপ রয়েছে। এগুলো হলো- এ, বি, ও এবং এবি। এরপর রয়েছে আরএইচ ফ্যাক্টর। মানে নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্তের পজেটিভ ও নেগেটিভ।

যাদের শরীরে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত রয়েছে, বিপদে পড়লে তা খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হয় পরিবারের সদস্যদের। সাধারণত যে সমস্ত গ্রুপের রক্ত প্রতি এক হাজার জনে এক জনের শরীরে থাকে, সেগুলিকে বিলের রক্ত বলে ব্যাখ্যা করা হয়।

আমেরিকার রেড ক্রসের মতে, ও নেগেটিভ হল তেমনই একটি বিরল রক্তের গ্রুপ। কিন্তু পৃথিবীতে এমনও রক্তের গ্রুপে রয়েছে, যা প্রতি ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে এক জনের আছে।

বিজ্ঞানীরা দুর্লভ এই রক্তের নাম দিয়েছেন, ‘গোল্ডেন ব্লাড’ বা ‘সোনালি রক্ত’। বর্তমানে বিশ্বে মাত্র ৪৩ জনের দেহে এই রক্তের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অবশ্য কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলেন, এই সংখ্যা ৪৯। সর্বোপরি বলা যায়, ৫০ জনেরও কম মানুষের এই গ্রুপের রক্ত আছে।

সাধারণত রক্ত পজেটিভ নাকি নেগেটিভ হবে, তা নির্ভর করে আরএইচ প্রোটিনের ওপর। এটি থাকলে রক্ত পজিটিভ, অন্যথায় নেগেটিভ।

১৯৬০ সালে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর দেহে এক বিশেষ রক্তের খোঁজ পাওয়া যায়। যার আরএইচ প্রোটিন পজেটিভ বা নেগেটিভ; কোনও গ্রুপেই ফেলা যাচ্ছিল না। পরে চিকিৎসকরা এই রক্তের নাম দেন ‘গোল্ডেন ব্লাড’ বা ‘সোনালি রক্ত’। একে আরএইচ নালও বলা হয়।

১৯৭৪ সালে ১০ বছর বয়সী এক শিশু টমাস এক ধরনের ইনফেকশনের জন্য ‘ইউনির্ভাসিটি হসপিটাল অব জেনেভা’ তে রক্ত পরীক্ষার জন্য যায়। রক্ত পরীক্ষার পর দেখা যায় তার রক্ত রক্তের ৩৬টি গ্রুপের কোনটির সাথেই মিল নেই। পরবর্তীতে আরো পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর জানা যায় তার রক্তে আরএইচ-নাল ছিল।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, এটি কোনো রোগ নয়। মূলত জিনগত কারণে কারো কারো রক্ত সোনালি হয়। আগের প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে এই ধারা প্রবাহিত হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য নয়। কয়েক প্রজন্ম পর হঠাৎ একজনের শরীরে তা দেখা যেতে পারে। এতে রক্তের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে।

সমগোত্রীয় অর্থাৎ যাদের শরীরে এই ধরনের রক্ত প্রবাহিত হয় প্রয়োজনে একমাত্র তারাই এ রক্ত দিতে পারবেন। অন্য কারও রক্ত নিলে শরীরে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। যে কারণে এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও দুর্লভ রক্ত বলা হয়।

তবে গোল্ডেন ব্লাডের অধিকারী মানুষ বিশ্বের যে কোনও মানুষকে রক্ত দিতে পারেন। বেশ কয়েকটি বিরল রোগের চিকিৎসায় সোনালি রক্ত কাজে লাগে। তাই প্রকৃতপক্ষেই এটা গোল্ডেন ব্লাড। চিহ্নিত ৪৩ জনের মধ্যে নয়জন নিয়মিত রক্ত দান করেন।