ঢাকা ১১:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন

পিরোজপুরে মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাহাড়সম অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, পিরোজপুর
  • সময় ০১:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 40

পিরোজপুর জেলা হিসাব রক্ষক

ইলিশ সংরক্ষণে সরকারের নানা কঠোরতার মাঝে পিরোজপুরে এক মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ওই কর্মকর্তা স্থানীয় গুটিকয়েক ব্যবসায়িকে ‘জাটকা’ ধরতে সহায়তা করেছেন।

মো. ফিরোজ হোসেন নামের ওই কর্মকর্তা মৎস্য অধিদপ্তরের পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের হিসাব রক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর তাকে বরিশাল কার্যালয় থেকে এখানে বদলি করা হয়। এবং এই কর্মকর্তার বাড়ি এই জেলাতেই।

 

অভিযোগ উঠেছে, নিজের জেলায় বদলি হয়ে আসার পর এই কর্মকর্তা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। পরিচিত ঠিকাদার ও ব্যবসায়িদের নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাদেরকে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে নিজের পকেটভারী করছেন।

স্থানীয় মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তি তার অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে গত ১২ জানুয়ারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার গত ১৩ অক্টোবর থেকে ২২ দিন নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মো. ফিরোজ হোসেন তখন স্থানীয় কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়িকে অর্থের বিনিময়ে ‘জাটকা’ ধরতে সহায়তা করেন।

নদীতে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়
নদীতে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয় (ফাইল ফটো)

এই কর্মকর্তা জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রকল্পে ঠিকাদারদের মাধ্যমে পোনা মাছ সরবরাহ করেছে। কয়েকটি উপজেলায় পোনার একই দর নির্ধারণ করে এবং ভূয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে নিজেই নিম্নমানের পোনা সরবরাহ করেন। এক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে নিম্নমানের অসুস্থ্য ও দুর্বল পোনা সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে। তাই অধিকাংশ পোনাই মারা যায়।

এমনকি অবৈধ বেহুন্দি এবং চরগড়া সহ বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে জেলেদের মাছ শিকারে সহযোগীতা করারও অভিযোগ রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

এছাড়াও ঠিকাদারদের কাছ থেকে বিলের কমিশন গ্রহণ, উপঢৌকন হিসেবে মাছ ও বিভিন্ন উপহারসামগ্রী গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে মো. ফিরোজ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর জানাতে পারেননি। তিনি জানান, পলাশ নামের একজন ঠিকাদার এই ষড়যন্ত্র করছেন। পলাশ কেন তার সাথে ষড়যন্ত্র করছেন; সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। পরক্ষণে তিনি জানান, তার পদে অন্য আরেকজন কর্মকর্তা আসতে চাচ্ছেন, সে হয়তো এই ষড়যন্ত্র করছেন।

 

জানতে চাইলে পিরোজপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জীব সন্নামত জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। যার প্রধান করা হয়েছে বরগুণা জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে। অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুণা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন জানান, আগামী মাসের মাঝামাঝি তদন্ত শুরু করা হবে।

শেয়ার করুন

অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন

পিরোজপুরে মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাহাড়সম অভিযোগ

সময় ০১:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

ইলিশ সংরক্ষণে সরকারের নানা কঠোরতার মাঝে পিরোজপুরে এক মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ওই কর্মকর্তা স্থানীয় গুটিকয়েক ব্যবসায়িকে ‘জাটকা’ ধরতে সহায়তা করেছেন।

মো. ফিরোজ হোসেন নামের ওই কর্মকর্তা মৎস্য অধিদপ্তরের পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের হিসাব রক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর তাকে বরিশাল কার্যালয় থেকে এখানে বদলি করা হয়। এবং এই কর্মকর্তার বাড়ি এই জেলাতেই।

 

অভিযোগ উঠেছে, নিজের জেলায় বদলি হয়ে আসার পর এই কর্মকর্তা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। পরিচিত ঠিকাদার ও ব্যবসায়িদের নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাদেরকে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে নিজের পকেটভারী করছেন।

স্থানীয় মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তি তার অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে গত ১২ জানুয়ারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার গত ১৩ অক্টোবর থেকে ২২ দিন নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মো. ফিরোজ হোসেন তখন স্থানীয় কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়িকে অর্থের বিনিময়ে ‘জাটকা’ ধরতে সহায়তা করেন।

নদীতে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়
নদীতে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয় (ফাইল ফটো)

এই কর্মকর্তা জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রকল্পে ঠিকাদারদের মাধ্যমে পোনা মাছ সরবরাহ করেছে। কয়েকটি উপজেলায় পোনার একই দর নির্ধারণ করে এবং ভূয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে নিজেই নিম্নমানের পোনা সরবরাহ করেন। এক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে নিম্নমানের অসুস্থ্য ও দুর্বল পোনা সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে। তাই অধিকাংশ পোনাই মারা যায়।

এমনকি অবৈধ বেহুন্দি এবং চরগড়া সহ বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে জেলেদের মাছ শিকারে সহযোগীতা করারও অভিযোগ রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

এছাড়াও ঠিকাদারদের কাছ থেকে বিলের কমিশন গ্রহণ, উপঢৌকন হিসেবে মাছ ও বিভিন্ন উপহারসামগ্রী গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে মো. ফিরোজ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর জানাতে পারেননি। তিনি জানান, পলাশ নামের একজন ঠিকাদার এই ষড়যন্ত্র করছেন। পলাশ কেন তার সাথে ষড়যন্ত্র করছেন; সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। পরক্ষণে তিনি জানান, তার পদে অন্য আরেকজন কর্মকর্তা আসতে চাচ্ছেন, সে হয়তো এই ষড়যন্ত্র করছেন।

 

জানতে চাইলে পিরোজপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জীব সন্নামত জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। যার প্রধান করা হয়েছে বরগুণা জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে। অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুণা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন জানান, আগামী মাসের মাঝামাঝি তদন্ত শুরু করা হবে।