পাকিস্তানের উদীয়মান খাত
- সময় ০৬:৫৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪
- / 253
পাকিস্তানের অস্ত্র বাজার একটি উদীয়মান খাত হিসেবে বিশ্বব্যাপী একটি স্থান করে নিচ্ছে। যদিও তাদের বার্ষিক রপ্তানি মূল্য তুলনামূলকভাবে কম, তবু দেশটি প্রতিনিয়ত তাদের বাজার বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে দেশটি বিনিয়োগকারী হিসেবে পাশে পাচ্ছে পরাশক্তি চীনকে। যৌথভাবে তারা এই খাতে নতুন নতুন প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটিয়ে নিজেদের বাজার বড় করার অনবরত চেষ্টা করে যাচ্ছে।
২০২৩ সালে, দেশটির প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৮.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা তাদের সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। পাকিস্তানের বার্ষিক অস্ত্র রপ্তানি ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কম। যা বৈশ্বিক অস্ত্রের বাজারে খুবই নগণ্য। তবুও দেশটি তার প্রতিরক্ষা শিল্প স¤প্রসারণের চেষ্টা করছে এবং বৈশ্বিক বাজারে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
দেশটির প্রধান সামরিক রপ্তানি পণ্যগুলির মধ্যে ঔঋ-১৭ ফাইটার জেট অন্যতম। এই বিমানগুলি পাকিস্তান ও চীনের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়। পাকিস্তান বর্তমানে উন্নতমানের ব্লক- ৩ সংস্করণের প্রায় ৫০টি বিমান ক্রয়ের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এছাড়াও, পাকিস্তান চীনের সাথে ঋঈ-৩১ মাল্টিরোল বিমান ক্রয়ের আলোচনায় রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা শিল্পে কয়েকটি প্রধান কোম্পানি কাজ করছে, যেমন পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড, অ্যাকোয়ারিয়াস গ্রæপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, ক্রসওয়ার্ল্ড সলিউশনস, ই-ওয়ার্ল্ড (প্রা.) লিমিটেড এবং হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ ট্যাক্সিলা কর্পোরেশন। এছাড়া চেংড়– এয়ারক্রাফ্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি লিমিটেড পাকিস্তানে যুদ্ধবিমান উৎপাদনে বড় ভূমিকা পালন করছে।
বলা হয়ে থাকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছে পাকিস্তান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ৩৬৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করেছে পাকিস্তান। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট মার্কিন কোম্পানি গ্লোবাল মিলিটারি এবং নর্থরপ গ্রু-ম্যানের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়, যার অধীনে পাকিস্তান ওই কোম্পানিগুলোর কাছে ১৫৫ মিলিমিটার শেল বিক্রি করেছে।
পাকিস্তান চীনের সাথে যৌথ উদ্যোগে যেসব সামরিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে, তা ভবিষ্যতে দেশটির বাজার আরো স¤প্রসারণে সাহায্য করবে বলে ধারনা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে ২০২৮ সময়কালে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজারের বার্ষিক বৃদ্ধির হার ২ শতাংশের বেশি হবে বলে ধারনা করছে অর্থনীতিবিদরা। এই বৃদ্ধির পিছনে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে রয়েছে সীমান্ত বিরোধ এবং একটি দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তোলার চেষ্টা।
এছাড়াও দেশটির সরকার তাদেও প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সেই সঙ্গে উন্নত নানা প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম সংগ্রহে মনোযোগ দিয়েছে। তবে এই খাতে বিনিয়োগের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বাজেটের সীমাবদ্ধতা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। যেক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। কেননা দেশটির অর্থনীতি খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই।