পরকীয়া ছাড়ার শর্তে টাকা নিয়েও স্ত্রীকে ব্লেড দিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া

সময় ০৩:২২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
/ 48

স্ত্রীকে ব্লেড দিয়ে কেটে হত্যা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পরকীয়ার অভিযোগ করায় স্ত্রী সাথি খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সীমান্ত (৩০)-এর বিরুদ্ধে। এর আগে পরকয়ী ছেড়ে দেয়ার শর্ত মেনে শ্বশুরের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকাও নিয়েছিল সীমান্ত।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের করাতকান্দি গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে পুলিশ সাথির মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত সাথি খাতুন মালিয়াট গ্রামের মনছুর শেখের মেয়ে।

স্বজনদের অভিযোগ, স্বামী সীমান্ত পরকীয়ার জেরে সাথিকে রাতভর পিটিয়ে ও ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করেছেন। পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে সীমান্ত পালিয়ে যান।

প্রায় আট বছর আগে মতিয়ার শেখের ছেলে সীমান্তের সঙ্গে সাথির বিয়ে হয়। তাদের নাহিদ (৬) ও আফসানা (৪ মাস) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। এক বছর আগে সীমান্ত তার খালাতো বোনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। বিষয়টি মীমাংসার জন্য পরিবার একাধিকবার সালিসি বৈঠক করে এবং সাত দিন আগে সীমান্তকে পরকীয়া ছাড়ার শর্তে শ্বশুর মনছুর শেখ ৯০ হাজার টাকা দেন।

কিন্তু রবিবার সীমান্ত পুনরায় তার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে যান। রাতে সাথি বিষয়টি জানতে চাইলে সীমান্ত ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। লাঠি দিয়ে মারধর ও ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের পর তিনি সাথিকে হত্যা করেন এবং পরে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়ে যান।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে কুমারখালী থানা চত্বরে সাথির মরদেহ রাখা হয়। এ সময় স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিহতের শিশু সন্তান নাহিদ জানায়, সে নিজ চোখে দেখেছে তার বাবা তার মাকে লাঠি দিয়ে মারধর করেছে এবং ব্লেড দিয়ে হাত-পা কেটেছে।

সাথির বড় ভাই সবুজ অভিযোগ করে বলেন, “আমরা ৯০ হাজার টাকা দিয়েও আমার বোনকে রক্ষা করতে পারলাম না। আমার বোনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই এবং থানায় মামলা করব।”

ঘটনার পর সীমান্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন। কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক বিপ্লব বিশ্বাস জানান, সাথির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পুলিশ সীমান্তকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে।