নোয়াখালীর এক প্রতারকের গল্প সিনেমাকেও হার মানায়
- সর্বশেষ আপডেট ০৬:১৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
- / 649
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের রাজুল্লাপুর গ্রামের মোজাম্মেল হক সেলিম, স্থানীয়ভাবে “এসি সেলিম” নামে পরিচিত, দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সেলিমের বাবা ছিলেন গাড়ি চালক। স্কুলের শিক্ষাজীবন সম্পন্ন না হলেও, ঢাকায় এসে তিনি এসি মেরামতের একটি দোকানে চাকুরি গ্রহণ করেন। পরে নিজেই এসি পার্টসের দোকান চালাতে শুরু করেন। তবে “নজরুল এসি” নামে যে দোকানটি ভাড়া নেন, সেখানে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে দোকানের মালিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেই দোকানের মালিকানা দখল করে নেন।
দোকানের মালিকরা অভিযোগ করেন, তারা বুঝতেই পারেননি সেলিম এতো ধূর্ত ও প্রতারক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেলিম সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে এনে তাদের প্রলোভনে ফেলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন। তিনি নিজেকে মন্ত্রনালয়ের সচিব, পুলিশ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও খ্যাতিমান ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ বলে উপস্থাপন করেন। চাকুরি দেয়ার, ব্যবসায়িক সুযোগ বা রাজনৈতিক পদ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে।
ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি নোয়াখালীর এক পুলিশ কর্মকর্তা থেকে পোস্টিং দেখানোর নাম করে সেলিম ৭ লাখ টাকা নেন, তবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি এখন এড়িয়ে চলছেন। এছাড়া, ট্যাক্স মওকুপের অজুহাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক কর্মকর্তাকে দেখিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল হুদা থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ এখন সম্ভব নয়।
এছাড়া, এলাকার মানুষকে চাকুরি দেয়ার অঙ্গীকার দেখিয়ে সেলিম মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন। স্থানীয় মানিক মোল্লার ছেলে কৃষি মন্ত্রনালয়ে চাকরি পাবেন বলে ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন, কিন্তু যোগাযোগ নেই।
জেলা বিএনপির এক নেতাকে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে অর্থ গ্রহণের ঘটনা এবং আবদুল জলিল নামের একজনকে চোরাই গাড়ি সরবরাহের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা হাতানোও অভিযোগের অন্তর্ভুক্ত।
সেলিম ঢাকায় দোকান চালালেও মূলত প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেন। স্কুলপড়ুয়া না হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক দেখিয়ে স্থানীয় ও ঢাকার মানুষদের প্রলোভনে ফেলেন।
ভূক্তভোগীরা মোজাম্মেল হক সেলিম ওরফে এসি সেলিমকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। অভিযুক্ত সেলিমকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি এবং মোবাইলে কল করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।






























