ঢাকা ০৬:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেত্রকোনায় ফুলকপি নিয়ে লোকসানের মুখে ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, নেত্রকোনা
  • সময় ০২:৪৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 25

নেত্রকোনায় ফুলকপি ব্যবসায়ী

নেত্রকোনা জেলা শহরের সবচেয়ে বড় আড়ৎ সুপার মার্কেটের সামনে ফুলকপি খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ খুশি হলেও ক্রয়মূল্য অপেক্ষা কম দামে বিক্রি করায় লোকসান গুনতে হচ্ছে জানান বিক্রেতারা। আবহাওয়া খারাপ বলে ক্রেতার সংখ্যা ও কম।তাই বাধ্য হয়ে কম মূল্যে ফুলকপি বিক্রি করতে হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, জেলা শহরের সুপার মার্কেটের সামনে ফুটপাতে ফুলকপির কয়েকটি স্তুপ।দোকানের সামনে ক্রেতা নেই বললেই চলে। সকালে ঘন কুয়াশার কারণে পাইকারি ও খুচরা উভয় প্রকার ক্রেতার সংখ্যা খুবই নগণ্য। প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। গত শুক্রবারেও প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৩৫/৪০ টাকা কেজি দরে।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার পরাণগঞ্জ থেকে আসা সবজি ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন জানান, তিনি ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত বোররচর থেকে ২০ টাকা কেজি দরে ফুলকপি কিনে এনেছেন। পরিবহন ভাড়াসহ প্রতি কেজি ফুলকপির দাম পড়েছে ২২ টাকা কেজির ওপরে। ঘন কুয়াশা ও ক্রেতাদের সংখ্যা কম থাকায় বাধ্য হয়ে প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি করতে হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। এই কপির চালানে তার অন্তত ২০ /৩০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। আর ও দাম কমে গেলে লোকসান গুনতে হবে কৃষকদের।

বাজারে দেখা গেছে, ফুলকপির স্তুপের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বিক্রেতা ও তাদের শ্রমিকরা। ক্রেতাদের আনাগোনা একেবারেই হাতেগোনা কয়েকজন। শনিবার বিকাল পর্যন্ত আমদানি করা অর্ধেক ফুলকপি ও বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। স্তুপীকূত কফি এভাবে থাকলে নষ্ট হয়ে যাবে বলে ও জানান কফি ব্যবসায়ীরা। দোকানে খুচরা ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও পাইকারি বাজারে বিক্রি করতে হয়েছে ১৫ টাকা কেজি দরে।

ক্রেতা মুজিবুর রহমান জানান, এত ফুলকপি একত্রে বাজারে উঠেছে দেখলে অবাক হতে হয়। বাজারে আমদানি বেশি বলে দাম ও হাতের নাগালে। ময়মনসিংহ চর এলাকা থেকে এসেছে। কপিগুলো দেখতে ও বেশ তাজা। দুই কেজি ফুলকপি ৪০ টাকা দিয়ে কিনেছি।তবে আরো দাম কমে গেলে ফুলকপি চাষীদের মাথায় হাত উঠে যাবে। তখন তাদের উৎপাদন খরচ অপেক্ষা কম দামে কফি বিক্রি করে লোকসান গুনতে হবে।

নেত্রকোনায় ফুলকপি
নেত্রকোনায় ফুলকপি

সুপার মার্কেটের ভেতরে দু’একজন ব্যবসায়ীকে ফুলকফিসহ সিম ও নতুন আলু বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। যেসব ক্রেতা ফুটপাতের দোকানগুলোতে যায় না তাদের নিকট থেকে অতিরিক্ত দামে আড়তের ভেতরে সবজি বিক্রি করে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ক্রেতাদের দাবি দেশী ও টাটকা বলে এসব সবজি বেশি দামে বিক্রি করছেন তারা। এভাবে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করছেন তারা।

এদিকে, মোক্তার পাড়া সড়কের পাশে প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত জমে উঠে অপরিকল্পিত কাঁচাবাজার। এ বাজার সংলগ্ন আছে আঞ্জুমান সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। আছে কয়েকটি বেসরকারি কেজি স্কুল ও ক্লিনিক। যে জন্য এ কাঁচাবাজার জমে উঠার ফলে যানজট নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলাকাবাসীর চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে সঠিক নজরদারি না থাকায় শাকসবজি ফলমূল অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

সুপার মার্কেটের ক্রেতা সজল তালুকদার জানান, বাজারে মাঝেমধ্যে প্রশাসনিক অভিযান হলে ও তা নিয়মিত হচ্ছে না। বাজার তদারকি সুষ্ঠভাবে চলমান রাখতে হবে। তাহলে কাঁচাবাজারে সব্জির মূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে।তা না হলে এর চাপ পড়বে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের ওপর।এর প্রভাব পড়বে শ্রমজীবী অসংখ্য মানুষের ওপর।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ফাঁকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করে থাকে। এ ক্ষেত্রে ক্রেতা ও সচেতন মহলকে আরো সচেতন হতে আহ্বান জানাচ্ছি।এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

নেত্রকোনায় ফুলকপি নিয়ে লোকসানের মুখে ব্যবসায়ীরা

সময় ০২:৪৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

নেত্রকোনা জেলা শহরের সবচেয়ে বড় আড়ৎ সুপার মার্কেটের সামনে ফুলকপি খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ খুশি হলেও ক্রয়মূল্য অপেক্ষা কম দামে বিক্রি করায় লোকসান গুনতে হচ্ছে জানান বিক্রেতারা। আবহাওয়া খারাপ বলে ক্রেতার সংখ্যা ও কম।তাই বাধ্য হয়ে কম মূল্যে ফুলকপি বিক্রি করতে হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, জেলা শহরের সুপার মার্কেটের সামনে ফুটপাতে ফুলকপির কয়েকটি স্তুপ।দোকানের সামনে ক্রেতা নেই বললেই চলে। সকালে ঘন কুয়াশার কারণে পাইকারি ও খুচরা উভয় প্রকার ক্রেতার সংখ্যা খুবই নগণ্য। প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। গত শুক্রবারেও প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৩৫/৪০ টাকা কেজি দরে।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার পরাণগঞ্জ থেকে আসা সবজি ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন জানান, তিনি ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত বোররচর থেকে ২০ টাকা কেজি দরে ফুলকপি কিনে এনেছেন। পরিবহন ভাড়াসহ প্রতি কেজি ফুলকপির দাম পড়েছে ২২ টাকা কেজির ওপরে। ঘন কুয়াশা ও ক্রেতাদের সংখ্যা কম থাকায় বাধ্য হয়ে প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি করতে হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। এই কপির চালানে তার অন্তত ২০ /৩০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। আর ও দাম কমে গেলে লোকসান গুনতে হবে কৃষকদের।

বাজারে দেখা গেছে, ফুলকপির স্তুপের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বিক্রেতা ও তাদের শ্রমিকরা। ক্রেতাদের আনাগোনা একেবারেই হাতেগোনা কয়েকজন। শনিবার বিকাল পর্যন্ত আমদানি করা অর্ধেক ফুলকপি ও বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। স্তুপীকূত কফি এভাবে থাকলে নষ্ট হয়ে যাবে বলে ও জানান কফি ব্যবসায়ীরা। দোকানে খুচরা ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও পাইকারি বাজারে বিক্রি করতে হয়েছে ১৫ টাকা কেজি দরে।

ক্রেতা মুজিবুর রহমান জানান, এত ফুলকপি একত্রে বাজারে উঠেছে দেখলে অবাক হতে হয়। বাজারে আমদানি বেশি বলে দাম ও হাতের নাগালে। ময়মনসিংহ চর এলাকা থেকে এসেছে। কপিগুলো দেখতে ও বেশ তাজা। দুই কেজি ফুলকপি ৪০ টাকা দিয়ে কিনেছি।তবে আরো দাম কমে গেলে ফুলকপি চাষীদের মাথায় হাত উঠে যাবে। তখন তাদের উৎপাদন খরচ অপেক্ষা কম দামে কফি বিক্রি করে লোকসান গুনতে হবে।

নেত্রকোনায় ফুলকপি
নেত্রকোনায় ফুলকপি

সুপার মার্কেটের ভেতরে দু’একজন ব্যবসায়ীকে ফুলকফিসহ সিম ও নতুন আলু বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। যেসব ক্রেতা ফুটপাতের দোকানগুলোতে যায় না তাদের নিকট থেকে অতিরিক্ত দামে আড়তের ভেতরে সবজি বিক্রি করে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ক্রেতাদের দাবি দেশী ও টাটকা বলে এসব সবজি বেশি দামে বিক্রি করছেন তারা। এভাবে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করছেন তারা।

এদিকে, মোক্তার পাড়া সড়কের পাশে প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত জমে উঠে অপরিকল্পিত কাঁচাবাজার। এ বাজার সংলগ্ন আছে আঞ্জুমান সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। আছে কয়েকটি বেসরকারি কেজি স্কুল ও ক্লিনিক। যে জন্য এ কাঁচাবাজার জমে উঠার ফলে যানজট নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলাকাবাসীর চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে সঠিক নজরদারি না থাকায় শাকসবজি ফলমূল অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

সুপার মার্কেটের ক্রেতা সজল তালুকদার জানান, বাজারে মাঝেমধ্যে প্রশাসনিক অভিযান হলে ও তা নিয়মিত হচ্ছে না। বাজার তদারকি সুষ্ঠভাবে চলমান রাখতে হবে। তাহলে কাঁচাবাজারে সব্জির মূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে।তা না হলে এর চাপ পড়বে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের ওপর।এর প্রভাব পড়বে শ্রমজীবী অসংখ্য মানুষের ওপর।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ফাঁকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করে থাকে। এ ক্ষেত্রে ক্রেতা ও সচেতন মহলকে আরো সচেতন হতে আহ্বান জানাচ্ছি।এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।