০৭:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ০২:৫০:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
  • / 20

নির্বাচন কমিশন

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার দাবিতে আন্দোলনে যেতে পারেন এনআইডি অনুবিভাগের কর্মকর্তারা। তারা তাদের দাবি জানাতে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়েই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের দপ্তরের সামনে জড়ো হয়েছেন।

এনআইডি অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, “এনআইডি সেবা নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে নেওয়ার যে পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তা রুখে দিতে আমাদের এ পদক্ষেপ। যদি আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে প্রথমে অর্ধবেলা কর্মবিরতি পালন করব, এরপর পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি দেব। তাও যদি ফল না আসে, তবে সারা দেশে নির্বাচন কমিশনের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেব।”

জানা গেছে, জন্মনিবন্ধন, এনআইডি এবং পাসপোর্ট সেবা নিয়ে দুর্ভোগ ও জটিলতা নিরসনে একটি স্বতন্ত্র কমিশন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যার নাম ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন), ২০২৫’। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ স্থানীয় সরকার, সুরক্ষা সেবা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত গ্রহণ করছে। এছাড়া, আইনের খসড়া পর্যালোচনার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম সভা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসার জন্য একটি আইন করা হয়েছিল, কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সেই আইন বাতিলের দাবি জানায়। নির্বাচন কমিশনের দাবি অনুযায়ী, যদি আইনটি বাতিল হয়, তাহলে এনআইডি সেবা ফের নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকবে। এর জন্য সরকারকে অধ্যাদেশ জারি করে আইনটি বাতিল ও আগের আইন বহাল করতে হবে।

এ ধারাবাহিকতায়, ১৬ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশনের কাছে রাখার জন্য পাঠানো প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন করেছে, যা সবচেয়ে দ্রুত সময়ে অনুমোদিত হয়েছে।”

এছাড়া, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংস্থা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সংবিধিবদ্ধ সংস্থা প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে সরকারের কাছে। তবে, ২৬ জানুয়ারি সিইসি নাসির উদ্দিন এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেন, “ভোটার এনআইডি কার্ড এবং ভোটার রেজিস্ট্রেশন পরবর্তীতে অন্য কোন অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা যাবে না, কারণ এতে আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। এটি সম্ভব নয়।”

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া সময়োপযোগী। তবে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন না রেখে একটি স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা করা উচিত। এর মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন সনদ, এনআইডি এবং পাসপোর্টের প্রক্রিয়ায় জটিলতা ও দুর্ভোগ কমানো সম্ভব হবে। এজন্য সিভিল রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সুসংহত করতে একটি সংবিধিবদ্ধ, স্বাধীন কমিশন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেয়ার করুন

নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আন্দোলন

সময় ০২:৫০:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার দাবিতে আন্দোলনে যেতে পারেন এনআইডি অনুবিভাগের কর্মকর্তারা। তারা তাদের দাবি জানাতে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়েই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের দপ্তরের সামনে জড়ো হয়েছেন।

এনআইডি অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, “এনআইডি সেবা নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে নেওয়ার যে পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তা রুখে দিতে আমাদের এ পদক্ষেপ। যদি আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে প্রথমে অর্ধবেলা কর্মবিরতি পালন করব, এরপর পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি দেব। তাও যদি ফল না আসে, তবে সারা দেশে নির্বাচন কমিশনের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেব।”

জানা গেছে, জন্মনিবন্ধন, এনআইডি এবং পাসপোর্ট সেবা নিয়ে দুর্ভোগ ও জটিলতা নিরসনে একটি স্বতন্ত্র কমিশন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যার নাম ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন), ২০২৫’। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ স্থানীয় সরকার, সুরক্ষা সেবা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত গ্রহণ করছে। এছাড়া, আইনের খসড়া পর্যালোচনার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম সভা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসার জন্য একটি আইন করা হয়েছিল, কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সেই আইন বাতিলের দাবি জানায়। নির্বাচন কমিশনের দাবি অনুযায়ী, যদি আইনটি বাতিল হয়, তাহলে এনআইডি সেবা ফের নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকবে। এর জন্য সরকারকে অধ্যাদেশ জারি করে আইনটি বাতিল ও আগের আইন বহাল করতে হবে।

এ ধারাবাহিকতায়, ১৬ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশনের কাছে রাখার জন্য পাঠানো প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন করেছে, যা সবচেয়ে দ্রুত সময়ে অনুমোদিত হয়েছে।”

এছাড়া, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংস্থা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সংবিধিবদ্ধ সংস্থা প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে সরকারের কাছে। তবে, ২৬ জানুয়ারি সিইসি নাসির উদ্দিন এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেন, “ভোটার এনআইডি কার্ড এবং ভোটার রেজিস্ট্রেশন পরবর্তীতে অন্য কোন অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা যাবে না, কারণ এতে আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। এটি সম্ভব নয়।”

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া সময়োপযোগী। তবে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন না রেখে একটি স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা করা উচিত। এর মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন সনদ, এনআইডি এবং পাসপোর্টের প্রক্রিয়ায় জটিলতা ও দুর্ভোগ কমানো সম্ভব হবে। এজন্য সিভিল রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সুসংহত করতে একটি সংবিধিবদ্ধ, স্বাধীন কমিশন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।