নারী হাজতখানায় শ্রমিক লীগ নেতা: স্ত্রী-শাশুড়িসহ গ্রেপ্তার ৫

- সময় ০২:৫০:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
- / 20
বগুড়ায় আদালতের নারী হাজতখানায় ঢুকে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সঙ্গে সাক্ষাতের অভিযোগে শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের স্ত্রী, শাশুড়িসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) বিকেলে বগুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এক মামলায় ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত তুফান সরকার আদালতে হাজির হলে তার স্ত্রী ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। অভিযোগ রয়েছে, আদালত পুলিশের সহযোগিতায় নারী হাজতখানার ভেতরে এ সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত প্রাঙ্গণে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আদালত পুলিশের সহকারী টাউন উপপরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্তের জন্য বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম মঈনুদ্দিন জানান, আদালতের নারী হাজতখানায় প্রবেশের অভিযোগে তুফান সরকারের স্ত্রী-শাশুড়িসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট মামলা না থাকায় আপাতত ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন—তুফান সরকারের দ্বিতীয় স্ত্রী আইরিন আকতার, শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, শ্যালক নয়ন আকন্দ, স্ত্রীর বড় বোন আশা খাতুন ও আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার জানান, তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলার নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়ে তুফান সরকারের স্বজনদের সঙ্গে তার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে আদালত এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ দ্রুত তাকে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে ফেরত পাঠায়।
তুফান সরকারের বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যা, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনসহ মোট ১৭টি মামলা রয়েছে। ২০১৭ সালে ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। একাধিক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত থাকায় দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর ২৩ ডিসেম্বর রাতে বগুড়ার চকসূত্রাপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গত বছরের ২৭ নভেম্বর বগুড়ার বিশেষ জজ আদালত তুফান সরকারকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার ১৮২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এই দণ্ড দেওয়া হয়।