নরসিংদীতে ওসির বিরুদ্ধে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির প্রমাণ মিলেছে | Bangla Affairs
০১:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নরসিংদীতে ওসির বিরুদ্ধে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির প্রমাণ মিলেছে

সিনিয়র প্রতিবেদক, নরসিংদী
  • সময় ০৭:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / 16

নরসিংদীতে ওসির বিরুদ্ধে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির প্রমাণ মিলেছে

নরসিংদীতে জব্দ করা ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির ঘটনায় জেলার গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামানসহ ছয়জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অপরাধের প্রমাণ মিলেছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহকে এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে জমা দেওয়া রিপোর্টে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা গত ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার একটি লটকন বাগান থেকে উদ্ধার করা ৯৬ কেজি গাঁজা আদালতে জমা না দিয়ে গোপনে বিক্রি করে দেন। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে ডিবি ওসি মো. কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনের নাম উঠে আসে।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্যের বাজারমূল্য গড়ে ২৫ হাজার টাকা হলেও, ওসি কামরুজ্জামান ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে গাঁজা মায়া প্রধান নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর কাছে প্রায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে এই অর্থ সংশ্লিষ্টদের মাঝে ভাগ করে নেওয়া হয়।

ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ওসি কামরুজ্জামান ও ওসি জাকির হোসেনকে নরসিংদী পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয় এবং পরে তাদের ঢাকা রেঞ্জ অফিসে বদলি করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উঠে আসে, মাদক ধ্বংসের বিষয়ে আদালতের আদেশ থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং আদালতের নথিতে দেখানো হয়েছে—জব্দ মাদক ধ্বংস করা হয়েছে। অথচ তদন্তে দেখা যায়, তা বাস্তবে হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কামরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, “আমার অফিসার গাঁজা জব্দ করেছেন এবং যথাযথভাবে তা কোর্টে পাঠানো হয়েছে। কোর্ট যদি ধ্বংসের নির্দেশ দেয়, সেটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব তো ম্যাজিস্ট্রেটের।”

তিনি দাবি করেন, “আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। যদি আমি বিক্রি করেই থাকি, তাহলে আদালত গাঁজা ধ্বংস করল কীভাবে?”

অন্যদিকে কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেছিলেন, “আমি শুধু দায়িত্বে ছিলাম। আলামত আমার হাতে আসেনি। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয়েছে। আমি কোনো অন্যায় করিনি, তবুও বলির পাঠা বানানো হয়েছে।”

শেয়ার করুন

নরসিংদীতে ওসির বিরুদ্ধে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির প্রমাণ মিলেছে

সময় ০৭:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

নরসিংদীতে জব্দ করা ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির ঘটনায় জেলার গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামানসহ ছয়জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অপরাধের প্রমাণ মিলেছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহকে এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে জমা দেওয়া রিপোর্টে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা গত ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার একটি লটকন বাগান থেকে উদ্ধার করা ৯৬ কেজি গাঁজা আদালতে জমা না দিয়ে গোপনে বিক্রি করে দেন। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে ডিবি ওসি মো. কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনের নাম উঠে আসে।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্যের বাজারমূল্য গড়ে ২৫ হাজার টাকা হলেও, ওসি কামরুজ্জামান ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে গাঁজা মায়া প্রধান নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর কাছে প্রায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে এই অর্থ সংশ্লিষ্টদের মাঝে ভাগ করে নেওয়া হয়।

ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ওসি কামরুজ্জামান ও ওসি জাকির হোসেনকে নরসিংদী পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয় এবং পরে তাদের ঢাকা রেঞ্জ অফিসে বদলি করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উঠে আসে, মাদক ধ্বংসের বিষয়ে আদালতের আদেশ থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং আদালতের নথিতে দেখানো হয়েছে—জব্দ মাদক ধ্বংস করা হয়েছে। অথচ তদন্তে দেখা যায়, তা বাস্তবে হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কামরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, “আমার অফিসার গাঁজা জব্দ করেছেন এবং যথাযথভাবে তা কোর্টে পাঠানো হয়েছে। কোর্ট যদি ধ্বংসের নির্দেশ দেয়, সেটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব তো ম্যাজিস্ট্রেটের।”

তিনি দাবি করেন, “আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। যদি আমি বিক্রি করেই থাকি, তাহলে আদালত গাঁজা ধ্বংস করল কীভাবে?”

অন্যদিকে কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেছিলেন, “আমি শুধু দায়িত্বে ছিলাম। আলামত আমার হাতে আসেনি। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয়েছে। আমি কোনো অন্যায় করিনি, তবুও বলির পাঠা বানানো হয়েছে।”