দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক | Bangla Affairs
০২:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
  • সময় ০২:২৪:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • / 6

দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। একদিকে দিন-রাত চলছে নতুন পুকুর খননের কাজ, অন্যদিকে এর ফলে ধ্বংস হচ্ছে উর্বর কৃষিজমি। শুধু তাই নয়, এই কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক অবকাঠামোও।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে—or প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করেই—ফসলি জমিকে পুকুরে রূপান্তর করছেন। এদের অনেকেই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী, বিশেষ করে বিএনপি ঘনিষ্ঠ। তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ উঠলেও তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না প্রশাসনকে।

পুকুর খননের পর কাটা মাটি পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে কাঁচা ও পাকা উভয় সড়ক। মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের ভারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কগুলো। কোথাও কোথাও রাস্তায় মাটি পড়ে থাকা ও কর্দমাক্ত অবস্থার কারণে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এর ফলে নষ্ট হচ্ছে সদ্য নির্মিত ও সংস্কার করা গ্রামীণ সড়কগুলো, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক
দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ‘পুকুর সংস্কার’ এর নামে মূলত চলছে নতুন পুকুর খনন। ভেকু মেশিন দিয়ে দিনের আলোতেই ফসলি জমি খনন করা হচ্ছে। এর ফলে কৃষিকাজ হুমকির মুখে পড়ছে।

দুর্গাপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে বর্তমানে চলছে এমন অবৈধ খননের বিস্তার। মাড়িয়া ইউনিয়নের কাশেমপুর ও চৌবাড়িয়ায়, দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের কুশাডাঙ্গা, আমগ্রাম জাগিরপাড়া ও পালশায়, জয়নগর ইউনিয়নের পুরাতন গ্রাম ও নারিকেলবাড়িয়ায়, কিসমতগনকৈড় ইউনিয়নের গোপালপাড়া, বাদইল বিল এবং ঝালুকা ইউনিয়নের কাঠাঁলবাড়ীয়াসহ আরও বহু এলাকায় শত শত বিঘা জমিতে চলছে এই কর্মকাণ্ড।

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী জানান, ফসলি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে যারা নতুন করে পুকুর খনন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা চলবে।”

তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন, যদি অভিযান চলমান থাকে, তাহলে কেন থামানো যাচ্ছে না এই দৌরাত্ম্য? কেনই বা প্রভাবশালী ব্যক্তিরা থেকে যাচ্ছেন আইনের আওতার বাইরে?

বিষয়টি জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা শারমিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন

প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক

সময় ০২:২৪:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। একদিকে দিন-রাত চলছে নতুন পুকুর খননের কাজ, অন্যদিকে এর ফলে ধ্বংস হচ্ছে উর্বর কৃষিজমি। শুধু তাই নয়, এই কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক অবকাঠামোও।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে—or প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করেই—ফসলি জমিকে পুকুরে রূপান্তর করছেন। এদের অনেকেই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী, বিশেষ করে বিএনপি ঘনিষ্ঠ। তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ উঠলেও তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না প্রশাসনকে।

পুকুর খননের পর কাটা মাটি পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে কাঁচা ও পাকা উভয় সড়ক। মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের ভারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কগুলো। কোথাও কোথাও রাস্তায় মাটি পড়ে থাকা ও কর্দমাক্ত অবস্থার কারণে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এর ফলে নষ্ট হচ্ছে সদ্য নির্মিত ও সংস্কার করা গ্রামীণ সড়কগুলো, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক
দুর্গাপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ‘পুকুর সংস্কার’ এর নামে মূলত চলছে নতুন পুকুর খনন। ভেকু মেশিন দিয়ে দিনের আলোতেই ফসলি জমি খনন করা হচ্ছে। এর ফলে কৃষিকাজ হুমকির মুখে পড়ছে।

দুর্গাপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে বর্তমানে চলছে এমন অবৈধ খননের বিস্তার। মাড়িয়া ইউনিয়নের কাশেমপুর ও চৌবাড়িয়ায়, দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের কুশাডাঙ্গা, আমগ্রাম জাগিরপাড়া ও পালশায়, জয়নগর ইউনিয়নের পুরাতন গ্রাম ও নারিকেলবাড়িয়ায়, কিসমতগনকৈড় ইউনিয়নের গোপালপাড়া, বাদইল বিল এবং ঝালুকা ইউনিয়নের কাঠাঁলবাড়ীয়াসহ আরও বহু এলাকায় শত শত বিঘা জমিতে চলছে এই কর্মকাণ্ড।

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী জানান, ফসলি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে যারা নতুন করে পুকুর খনন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা চলবে।”

তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন, যদি অভিযান চলমান থাকে, তাহলে কেন থামানো যাচ্ছে না এই দৌরাত্ম্য? কেনই বা প্রভাবশালী ব্যক্তিরা থেকে যাচ্ছেন আইনের আওতার বাইরে?

বিষয়টি জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা শারমিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।