দুদু-রিজভীর অভিন্ন সুর

- সময় ০৫:৪৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 62
জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচন চাওয়া নিয়ে অভিন্ন সুরে কথা বলেছেন বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে পৃথক আলোচনায় বলেছেন কথা।
শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীদের রুখতে গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য এখন সময়ের দাবি। তিনি মনে করেন, যারা রাজনীতিবিদদের ছোট করতে চায়, তারা আসলে দেশকেই সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশের বর্তমান সংকট ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলনের অর্জন সংরক্ষণ করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হয়, ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। দুদু বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনার পতনের মাস্টারমাইন্ড খুঁজে বের করা সম্ভব হলেও, অন্তর্বর্তী সরকার ছয় মাসেও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগেই যারা স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করতে চায়, তারাই একসময় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। এছাড়া, পাঁচ আগস্টের পর ব্যাংক ও হাসপাতাল দখলে নেওয়ার জন্যও তিনি একটি বিশেষ চক্রকে দায়ী করেন।
জাতীয় নির্বাচন আগে হওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ শনিবার স্থপতি ইন্সটিটিউটের আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ দাবি জানান।
রিজভী বলেন, “স্থানীয় নির্বাচন নয়, জাতীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত। নির্বাচন যদি দেরি হয়, তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শেষ ১৭ বছরে যে ভয়ংকর পরিণতি আমরা দেখেছি, তা কখনো হওয়ার কথা ছিল না। ৯০-এর আন্দোলনের যে স্পিরিট ছিল, সেটি থেকে হোঁচট খেয়ে আবারো পিছিয়ে যাওয়া তা তো কেউ প্রত্যাশা করেনি। বরং এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে বিগত ১৭ বছরে যা বিস্ময়কর। একতরফা নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার, ভোট কেন্দ্রগুলোর সামনে জন্তুদের পদচারণ, এবং ভোটারদেরকে ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা—এই ধরনের নির্বাচন বিগত ১৬-১৭ বছরে আমরা দেখেছি।”
রিজভী আরও বলেন, “যারা বিরোধী দলের মনোনয়ন পেয়েছেন, তাদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ও বাধা দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার সূত্রপাত ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া, গ্রেপ্তার করা এবং হামলা করা—এই সব কিছুই হয়েছে।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্বেচ্ছায় সরকারের অধীনে চলে যেতে আগ্রহী হয়ে ওঠে, যা নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করে। তাই সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রয়োগ করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এহসানুল হক হুদা, ইথুন বাবু, আহসান উদ্দিন খান শিপন প্রমুখ।