ঢাকা ১১:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুইমাস কপালে জুটবে না সুন্দরবনের তাজা কাঁকড়া

মাসুদ রানা, মোংলা (বাগেরহাট)
  • সময় ১০:১১:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 39

সুন্দরবনের বিখ্যাত শিলা কাঁকড়া

সুন্দরবনের তাজা কাঁকড়া মানেই অন্যরকম স্বাদ। সারাদেশেই এর চাহিদা ব্যাপক। রাজধানী ঢাকার অভিজাত রেস্তোরা থেকে শুরু করে স্ট্রিট ফুডের দোকানেও মিলে সুন্দরবনের কাঁকড়া। কিন্তু আগামী দুইমাস কপালে জুটবে না সুন্দরবনের তাজা কাঁকড়া। এমনটাই নিশ্চত হওয়া গেছে।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রজনন মৌসুমে রপ্তানি পন্য বিশ্বখ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়ার বংশ বৃদ্ধিসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনের সব নদ-নদী ও খালে কাঁকড়া আহরণে এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এসময়ে কোন জেলে ও ব্যবসায়ী কাঁকড়া আহরণ, বিক্রি করতে, সংরক্ষণ করতে বা পরিবহন করতে পারবে না।

বন বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করে জানায়, সুন্দরবনে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি এই দুই মাস হচ্ছে কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। এই সময়ে শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া এসময়ে ডিম ছেড়ে বংশ বৃদ্ধি করে। এই প্রজনন মৌসুমে বিশেষভাবে সংবেদনশীল থাকে। সহজেই কাঁকড়া আহনরণ করা যায়। এ অবস্থায় কাঁকড়া ধরা চলতে থাকলে প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হয়ে হুমকির মুখে পড়ে কাঁকড়ার বংশ বিস্তার, যা প্রাকৃতিক ভাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যে ভারসাম্য নষ্ট করে। এ কারণে বন বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি এই দুই মাস কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাকে। কেউ এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে বন আইনে আপরাধের আওতায় জেল বা জরিমানা করে থাকে।

সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে প্রান্তিক জেলে (ফাইল ফটো)
সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে প্রান্তিক জেলে (ফাইল ফটো)

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহম্মদ নূরুল করিম বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন , সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। এরমধ্যে দেশের বিশ্বখ্যাত রপ্তানি পন্য শিলা কাঁকড়া রয়েছে। প্রতিবছর এই ম্যানগ্রোভ বনে পাশ-পারমিট নিয়ে ১০ হাজার জেলে কাঁকড়া আহরণ করে থাকে। সুন্দরবনের কাঁকড়া শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি সুন্দরবনের খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে থাকে। প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া রক্ষা করা না গেলে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে পুরো সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের উপর।

সুন্দরবনে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে জেলেসহ সংশ্লিষ্ট প্রতি বনবিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়। তারপরও কেউ যদি জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি এই দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া আহরণ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে বন আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়।

শেয়ার করুন

দুইমাস কপালে জুটবে না সুন্দরবনের তাজা কাঁকড়া

সময় ১০:১১:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫

সুন্দরবনের তাজা কাঁকড়া মানেই অন্যরকম স্বাদ। সারাদেশেই এর চাহিদা ব্যাপক। রাজধানী ঢাকার অভিজাত রেস্তোরা থেকে শুরু করে স্ট্রিট ফুডের দোকানেও মিলে সুন্দরবনের কাঁকড়া। কিন্তু আগামী দুইমাস কপালে জুটবে না সুন্দরবনের তাজা কাঁকড়া। এমনটাই নিশ্চত হওয়া গেছে।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রজনন মৌসুমে রপ্তানি পন্য বিশ্বখ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়ার বংশ বৃদ্ধিসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনের সব নদ-নদী ও খালে কাঁকড়া আহরণে এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এসময়ে কোন জেলে ও ব্যবসায়ী কাঁকড়া আহরণ, বিক্রি করতে, সংরক্ষণ করতে বা পরিবহন করতে পারবে না।

বন বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করে জানায়, সুন্দরবনে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি এই দুই মাস হচ্ছে কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। এই সময়ে শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া এসময়ে ডিম ছেড়ে বংশ বৃদ্ধি করে। এই প্রজনন মৌসুমে বিশেষভাবে সংবেদনশীল থাকে। সহজেই কাঁকড়া আহনরণ করা যায়। এ অবস্থায় কাঁকড়া ধরা চলতে থাকলে প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হয়ে হুমকির মুখে পড়ে কাঁকড়ার বংশ বিস্তার, যা প্রাকৃতিক ভাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যে ভারসাম্য নষ্ট করে। এ কারণে বন বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি এই দুই মাস কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাকে। কেউ এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে বন আইনে আপরাধের আওতায় জেল বা জরিমানা করে থাকে।

সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে প্রান্তিক জেলে (ফাইল ফটো)
সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে প্রান্তিক জেলে (ফাইল ফটো)

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহম্মদ নূরুল করিম বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন , সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। এরমধ্যে দেশের বিশ্বখ্যাত রপ্তানি পন্য শিলা কাঁকড়া রয়েছে। প্রতিবছর এই ম্যানগ্রোভ বনে পাশ-পারমিট নিয়ে ১০ হাজার জেলে কাঁকড়া আহরণ করে থাকে। সুন্দরবনের কাঁকড়া শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি সুন্দরবনের খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে থাকে। প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া রক্ষা করা না গেলে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে পুরো সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের উপর।

সুন্দরবনে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে জেলেসহ সংশ্লিষ্ট প্রতি বনবিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়। তারপরও কেউ যদি জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি এই দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া আহরণ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে বন আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়।