দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত: কে এই রাজনৈতিক নেত্রী?

- সময় ১২:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 31
রাজস্থানের মতো দিল্লিতেও নতুন মুখকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে আনার কৌশল নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজে ও সিপি জোশির মতো হেভিওয়েট নেতাদের সরিয়ে আনকোরা ভজনলাল শর্মাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। এবার দিল্লিতে প্রথমবার বিধায়ক হওয়া রেখা গুপ্তকেই দিল্লির মসনদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
প্রথমবার বিধায়ক, তবুও বিজেপির আস্থার কেন্দ্রবিন্দু
দিল্লির শালিমার বাগ কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত রেখা গুপ্তকে বিজেপি দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঐতিহাসিক রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নেবেন। তার সঙ্গে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরাও শপথ নেবেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবার জয়লাভ করেছেন রেখা। তবে তিনি দিল্লির রাজনীতিতে অপরিচিত নন। তিনবার দিল্লি পৌরসভার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। সর্বশেষ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পৌরসভা নির্বাচনে জিতলেও মেয়র পদে পরাজিত হন। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে অনুষ্ঠিত মেয়র নির্বাচনে আম আদমি পার্টির (আপ) প্রার্থী শেলি ওবেরয়ের কাছে ৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি। তবে ঠিক এক বছর পর, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার রাজনৈতিক জীবনে এক নতুন মোড় এলো—এবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হতে চলেছেন তিনি।
বিধানসভা নির্বাচনে বড় জয়
চলতি বিধানসভা নির্বাচনে শালিমার বাগ আসনে আম আদমি পার্টির তিনবারের বিধায়ক বন্দনা কুমারীকে ২৯ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন রেখা গুপ্ত। এই আসনেই ২০১৫ এবং ২০২০ সালের নির্বাচনে বন্দনার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। তবে এবার সেই পরাজয়ের শোধ তুলেছেন বড় ব্যবধানে।

রেখা গুপ্তের রাজনৈতিক জীবন
১৯৭৪ সালে হরিয়ানার জুলানায় জন্মগ্রহণ করা রেখা গুপ্ত দিল্লির দৌলতরাম কলেজ ও উত্তরপ্রদেশের মেরঠের চরণ সিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি বণিক (বানিয়া) সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। নব্বইয়ের দশকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর নেত্রী ছিলেন।
১৯৯৫ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ১৯৯৬ সালে সভাপতি পদে জয়ী হন। ২০০৭ সালে প্রথমবার দিল্লি পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাজনীতির মূল স্রোতে প্রবেশ করেন। পরে বিজেপি যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বিজেপির নারী মোর্চার অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি।
বিজেপির বড় জয় ও আপের পতন
গত ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ৭০টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৪৮টি আসনে জয়লাভ করে। টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (আপ) বিপর্যস্ত হয়, তারা মাত্র ২২টি আসন পায়।
দিল্লির মসনদে বসতে যাওয়া রেখা গুপ্তের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ থাকলেও, বিজেপির আস্থাভাজন হয়ে তিনি কীভাবে দিল্লির ভবিষ্যৎ গড়ে তোলেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।