মন্দিরে হামলা: কলকাতা ইসকনের দাবি সত্য নয়
- সময় ১১:৩০:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 57
রাজধানীর তুরাগের ইসকনের মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে সত্য, কিন্তু সেটি ইসকনের মন্দির নয় বলে নিশ্চিত করেছে ইসকন বাংলাদেশের নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রভু বিমলা প্রসাদ দাস। বাংলা অ্যাফেয়ার্সের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, শনিবার মধ্যরাতের পর তুরাগে একটি মন্দিরে হামলা অগ্নি সংযোগ হয়েছে, এটা যেমন সত্যি। তেমনি মন্দিরটি ইসকনের নয়, সেটি আরো বড় সত্য। পাশাপাশি দুইটি মন্দির থাকায়, কোনটি ইসকনের মন্দির আর কোনটি ব্যক্তিগত মন্দির সেটা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু ঢাকার ইসকনে ফের হামলা এমন অভিযোগ করলেন কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণা কনসাসনেস-এর (ইসকন) সহ-সভাপতি রাধারমন দাস ৷ শুধু মন্দিরই নয়, ভিতরে থাকা বিগ্রহে অগ্নিসংযোগ দুষ্কৃতীদের ৷ শনিবার সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে রাধারমন দাস জানান, বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের উপর আক্রমণের কোনও বিরাম নেই ৷ হামলা চলছেই ৷
এদিন সকালে বাংলাদেশের নামহট্টে ইসকন-এর মন্দিরের ভিতরে মূর্তি ভাঙচুর করার পাশাপাশি তাতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কলকাতা ইসকন-এর উচ্চাধিকারিক ৷ এই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের ঢাকায় নামহট্টে ইসকনের কেন্দ্রটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ মন্দিরের ভিতরে বিগ্রহ এবং অন্য সব জিনিসপত্র সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে ৷”
এদিকে, পুরো শনিবার দিনই ভারতীয় গণমাধ্যমে তুরাগের মন্দিরটিকে ইসকনের মন্দির বলে প্রচার করা হয়। বিশেষ করে কলকাতা ইসকনের দায়ত্বশীল রাধারমন দাসের বক্তব্যকে গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হয়।
বাংলা অ্যাফেয়ার্সের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে ইসকন বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রভু বিমলা প্রসাদ দাস দায়িত্ব নিয়েই বলেছেন, বিষয়টি অনভিপ্রেত। আমরা শনিবার দুপুরের পর ভাংচুরের শিকার মন্দিরটি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। আমরা সেখানে যাওয়ার পর পুলিশের পক্ষ থেকে উপ কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পিবিআই, সিআইডি’র সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাস্থলের আলামত সংগ্রহ করেছেন তারা।
বিমলা প্রভু আরো বলেন, তুরাগের যে মন্দিরে হামলা হয়েছে সেটির নাম শ্রীশ্রী লক্ষী জনার্দন মন্দির। এটি মূলত আমাদের ইসকন ভক্ত (দীক্ষিত) রসিকানন্দ দাসের পারিবারিক মন্দির। ঠিক এই মন্দিরের পাশেই বাংলাদেশ ইসকনের একটি নামহট্ট শাখা মন্দির রয়েছে। সেখানে কোনো ধরণের আক্রমণ করেনি দুস্কৃতিকারীরা।
মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রসাশন যথেষ্ট আন্তরিক বলেও জানান ইসকন বাংলাদেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রভু বিমলা দাস।
ইসকন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, আমরা সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবো সময় মতো। তবে প্রকৃত সত্যটা জানার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের আরো দায়িত্বশীল আচরণ করা প্রয়োজন। যাচাই বাছাই করে প্রকৃত ঘটনা প্রচার ও প্রকাশ করা জরুরি।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোররাতে ২টা থেকে ৩ টার মধ্যে দুষ্কৃতীরা শ্রীশ্রী লক্ষী জনার্দন মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয় ৷ এই মন্দিরটি ঢাকা জেলার তুরাগ থানার আওতায় ধৌর গ্রামের হরে কৃষ্ণ নামহট্ট সংঘের অধীনে ছিল বলে দাবি করা হয়েছে৷ কিন্তু সেটি ব্যক্তিগত পারিবারিক মন্দির। পারিবারিক মন্দিরের পিছন দিকে টিনের ছাউনি দেওয়া ৷ সেটি খুলে মন্দিরের ভিতরে পেট্রল বা দাহ্য কোনও তরল পদার্থ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এমনকি, এ অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই রাত ৪ টার মধ্যে ঘটনাস্থলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি টিম পৌঁছে ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে তারা এ ঘটনায় বেশ আতঙ্কিত রয়েছেন।