ঢাকা ০৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরখাস্ত অব্যাহত থাকলে বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ০৮:২৫:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 18

আন্ত:ক্যাডার পরিষদ

সামান্য অপরাধে ঢালাওভাবে সাময়িক বরখাস্ত শুরু করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এটি অব্যাহত থাকলে চাকরিবিধি মেনে বড় কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের উদ্যোগে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘জনবান্ধব সিভিল সার্ভিস বিনির্মাণে করণীয়: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয় বলে পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে সিভিল সার্ভিস ক্যাডার বহির্ভূতকরণের চিন্তা থেকে বিরত থাকতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনকে আহ্বান করা হয়। রাষ্ট্রের দায়িত্বভার হাতে থাকায় সেটির অপব্যবহার করে সামান্য অপরাধে ঢালাওভাবে সাময়িক বরখাস্ত শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে দেখা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হবে। বরখাস্তের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চাকরি বিধি অনুসরণ পূর্বক বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘সিভিল সার্ভিস তথা জনপ্রশাসনে একটি ক্যাডারের অধিপত্য, কর্তৃত্ব ও প্রভুত্ব চলছে। নিজেদের মেধাবী বলে দাবি করলেও তাদের ব্যর্থতা দেশবাসী বিগত ৫৪ বছর প্রত্যক্ষ করছে। নিজেদের সিঙ্গাপুর ও ভারতের সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে তুলনা করলেও সিঙ্গাপুরের অবস্থান বিশ্বের এক নম্বরে। আর বাংলাদেশের অবস্থান একশর নিচে। তাদের কারণেই মূলত দেশের জনগণ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত।’

তারা আরও বলেন, ‘কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ থেকে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন হবে। সব সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সার্ভিসে পেশাদারিত্ব মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে এবং সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এতে সৃষ্ট অব্যবস্থাপনার ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি বলে দাবি করেন বক্তারা।

সভায় বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত সুপারিশ দেওয়ার আগে কোনো ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন না ২৫ ক্যাডাররা। রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে যেন কোনো গোষ্ঠী কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য পরিষদের সব সদস্য সতর্ক থাকবেন। কিছু গোষ্ঠী পরিষদের সদস্যদের উসকে দিয়ে স্বার্থসিদ্ধি করতে চাচ্ছে, এ বিষয়ে সহনশীল থেকে এবং কোনো ধরনের প্ররোচনায় না গিয়ে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করবে।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। কাউকে আঘাত বা হেয় করে কোনো মন্তব্য না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ থাকায় এ মুহূর্তে বড় কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী এক মাস ভবিষ্যৎ সিভিল সার্ভিসের রূপরেখা বিষয়ে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-জনতার সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হবে।জনবান্ধব রাষ্ট্রগঠনে সিভিল সার্ভিস সংস্কারের জন্য সেমিনার সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে জনগণের মতামত গ্রহণের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক চূড়ান্ত সুপারিশে ২৫ ক্যাডারের মতামতের প্রতিফলন দেখতে চান নেতারা। সে সময় পর্যন্ত সব সদস্যকে ধৈর্য ধারণ করতে আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা বলেন- দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি, পদমর্যাদা ক্রম নির্ধারণসহ সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা বিধান করতে হবে। এক দেশে একটি ক্যাডারের কর্মকর্তা পদ না থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবে, আর অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবে না- এটা কোনো আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থা হতে পারে না। সেজন্য ২৫ ক্যাডারের পক্ষ থেকে এই অনিয়ম দূর করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

তারা আরও বলেন, ২৫ ক্যাডার সরকারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সব ক্ষেত্রের উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদানের পরেও এসব ক্যাডারের কর্মকর্তারা বঞ্চিত। এই বঞ্চনা দূর করতে বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ২৫টি ক্যাডার আহ্বান জানাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দর্শন ধারণ করে তারা একযোগে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।তাই রাষ্ট্র ও জনকল্যাণে কমিশন একটি আধুনিক সেবামূলক সিভিল সার্ভিস গঠনে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব পেশ করবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রশাসনের সব স্তরে অনিয়ম, কোটাবৈষম্য, অসমতা দূর করে একটি গতিশীল জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করতে চান এ পরিষদভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের সদস্যরা। কোটাবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই ২৫ ক্যাডার বর্তমান সরকারের অনুভূতিকে ধারণ করে সব ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে বদ্ধপরিকর।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, কমিশনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়ে অনেকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য প্রচার শুরু করেছে। সিনিয়র সার্ভিস পুলের (উপসচিব পুল) পদগুলো কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারের নয়। সিনিয়র সার্ভিস পুল আদেশ-১৯৭৯ অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে এসব পদে নিয়োগের কথা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে কোটা পদ্ধতি চালু রেখেছে প্রশাসন ক্যাডার। অতঃপর সরকারের পাশে থাকার সুবাদে প্রথমে এসএসপি আইন বাতিল এবং ২০১৮ এর নির্বাচনের পর সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট-১৯৭৫ (যার ওপর ভিত্তি করে এসএসপি চালু হয়) রহিত করে ও ২০২৪ এর নির্বাচনের পর উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদ নিজেদের তফশিলে অন্তর্ভুক্ত করেছে প্রশাসন ক্যাডার, যা মেধাভিত্তিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রগঠনের পথে অন্তরায়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ মো. আরিফ হোসেন। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ফারহানা আক্তার ও ডা. মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সভায় ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সেক্রেটারি, সিনিয়র নেতাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

বরখাস্ত অব্যাহত থাকলে বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

সময় ০৮:২৫:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫

সামান্য অপরাধে ঢালাওভাবে সাময়িক বরখাস্ত শুরু করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এটি অব্যাহত থাকলে চাকরিবিধি মেনে বড় কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের উদ্যোগে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘জনবান্ধব সিভিল সার্ভিস বিনির্মাণে করণীয়: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয় বলে পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে সিভিল সার্ভিস ক্যাডার বহির্ভূতকরণের চিন্তা থেকে বিরত থাকতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনকে আহ্বান করা হয়। রাষ্ট্রের দায়িত্বভার হাতে থাকায় সেটির অপব্যবহার করে সামান্য অপরাধে ঢালাওভাবে সাময়িক বরখাস্ত শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে দেখা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হবে। বরখাস্তের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চাকরি বিধি অনুসরণ পূর্বক বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘সিভিল সার্ভিস তথা জনপ্রশাসনে একটি ক্যাডারের অধিপত্য, কর্তৃত্ব ও প্রভুত্ব চলছে। নিজেদের মেধাবী বলে দাবি করলেও তাদের ব্যর্থতা দেশবাসী বিগত ৫৪ বছর প্রত্যক্ষ করছে। নিজেদের সিঙ্গাপুর ও ভারতের সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে তুলনা করলেও সিঙ্গাপুরের অবস্থান বিশ্বের এক নম্বরে। আর বাংলাদেশের অবস্থান একশর নিচে। তাদের কারণেই মূলত দেশের জনগণ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত।’

তারা আরও বলেন, ‘কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ থেকে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন হবে। সব সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সার্ভিসে পেশাদারিত্ব মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে এবং সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এতে সৃষ্ট অব্যবস্থাপনার ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি বলে দাবি করেন বক্তারা।

সভায় বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত সুপারিশ দেওয়ার আগে কোনো ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন না ২৫ ক্যাডাররা। রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে যেন কোনো গোষ্ঠী কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য পরিষদের সব সদস্য সতর্ক থাকবেন। কিছু গোষ্ঠী পরিষদের সদস্যদের উসকে দিয়ে স্বার্থসিদ্ধি করতে চাচ্ছে, এ বিষয়ে সহনশীল থেকে এবং কোনো ধরনের প্ররোচনায় না গিয়ে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করবে।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। কাউকে আঘাত বা হেয় করে কোনো মন্তব্য না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ থাকায় এ মুহূর্তে বড় কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী এক মাস ভবিষ্যৎ সিভিল সার্ভিসের রূপরেখা বিষয়ে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-জনতার সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হবে।জনবান্ধব রাষ্ট্রগঠনে সিভিল সার্ভিস সংস্কারের জন্য সেমিনার সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে জনগণের মতামত গ্রহণের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক চূড়ান্ত সুপারিশে ২৫ ক্যাডারের মতামতের প্রতিফলন দেখতে চান নেতারা। সে সময় পর্যন্ত সব সদস্যকে ধৈর্য ধারণ করতে আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা বলেন- দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি, পদমর্যাদা ক্রম নির্ধারণসহ সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা বিধান করতে হবে। এক দেশে একটি ক্যাডারের কর্মকর্তা পদ না থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবে, আর অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবে না- এটা কোনো আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থা হতে পারে না। সেজন্য ২৫ ক্যাডারের পক্ষ থেকে এই অনিয়ম দূর করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

তারা আরও বলেন, ২৫ ক্যাডার সরকারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সব ক্ষেত্রের উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদানের পরেও এসব ক্যাডারের কর্মকর্তারা বঞ্চিত। এই বঞ্চনা দূর করতে বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ২৫টি ক্যাডার আহ্বান জানাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দর্শন ধারণ করে তারা একযোগে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।তাই রাষ্ট্র ও জনকল্যাণে কমিশন একটি আধুনিক সেবামূলক সিভিল সার্ভিস গঠনে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব পেশ করবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রশাসনের সব স্তরে অনিয়ম, কোটাবৈষম্য, অসমতা দূর করে একটি গতিশীল জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করতে চান এ পরিষদভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের সদস্যরা। কোটাবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই ২৫ ক্যাডার বর্তমান সরকারের অনুভূতিকে ধারণ করে সব ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে বদ্ধপরিকর।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, কমিশনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়ে অনেকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য প্রচার শুরু করেছে। সিনিয়র সার্ভিস পুলের (উপসচিব পুল) পদগুলো কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারের নয়। সিনিয়র সার্ভিস পুল আদেশ-১৯৭৯ অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে এসব পদে নিয়োগের কথা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে কোটা পদ্ধতি চালু রেখেছে প্রশাসন ক্যাডার। অতঃপর সরকারের পাশে থাকার সুবাদে প্রথমে এসএসপি আইন বাতিল এবং ২০১৮ এর নির্বাচনের পর সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট-১৯৭৫ (যার ওপর ভিত্তি করে এসএসপি চালু হয়) রহিত করে ও ২০২৪ এর নির্বাচনের পর উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদ নিজেদের তফশিলে অন্তর্ভুক্ত করেছে প্রশাসন ক্যাডার, যা মেধাভিত্তিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রগঠনের পথে অন্তরায়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ মো. আরিফ হোসেন। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ফারহানা আক্তার ও ডা. মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সভায় ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সেক্রেটারি, সিনিয়র নেতাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।