ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় বিক্রম মিশ্রি, রাতেই ফিরে যাচ্ছেন দিল্লি

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১১:০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 49

ঢাকায় বিক্রম মিশ্রি

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে পৌঁছান তিনি। তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া অণু বিভাগ) ইশরাত জাহান। এবারের সফরটি ব্যস্ত এবং সংক্ষিপ্ত হবে বলে জানা গেছে। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বৈঠক শেষ করে তিনি রাতেই ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রথমবারের মতো উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও ভারত। সোমবার সফরের শুরুতেই বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সাথে বৈঠকে যোগ দেবেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।

এরপর তিনি প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। আজ রাতেই ঢাকা ছেড়ে দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে বিক্রম মিশ্রির। ঢাকা ও দিল্লির উভয় পক্ষের আশা, এর মধ্য দিয়ে চলমান উত্তেজনা কমানোর পথ সহজ হতে পারে।

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। সেপ্টেম্বরে সীমান্তে দুইজন হত্যার বিষয়ে দিল্লিকে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতের বক্তব্যেরও কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গত দেড় দশকে ঢাকার এরকম ভূমিকা দেখেনি দিল্লি।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈঠকে অপপ্রচার বন্ধ আর একটি দলের ওপর নির্ভরশীলতা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর-এমন বার্তাই যাবে ভারতের কাছে।

বাংলাদেশ-ভারত
বাংলাদেশ-ভারত

এছাড়া আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসবে বলেও মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ভারত আমাদের প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের ভাষাগত, ইতিহাস ও সংস্কৃতিগত যোগাযোগ রয়েছে। অভিন্ন অনেক নদী রয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার বিষয় রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিটি বিষয়ই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের সঙ্গে করা ‘অসম’ চুক্তির বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনা হবে কি না, এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় মনে করে, ভারতের সঙ্গে আগামীতে কী ধরনের সম্পর্ক হবে তা ভবিষ্যত বলতে পারে। তবে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো ছাড়া অসম যেসব চুক্তি রয়েছে তা নিয়ে ভবিষ্যতে অবশ্যই আলোচনা হবে। এটি সামনে বোঝা যাবে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রি
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রি

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোকে ‘মিথ্যাচার’ না করে বাংলাদেশে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। এ বিষয়েও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের কাছে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হবে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আমরা তাদের বলতে পারি, আপনারা আসেন। এসে মাঠে থেকে রিপোর্ট করে যান। ঘটনাস্থলে না এসে কারও মুখের কথায় কোনো প্রতিবেদনে সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায় না। সেজন্য আমরা তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কারণ, আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী। বিশ্বাস করি যে, তারা এখানে এলে ভারতের টিভি ও গণমাধ্যমে যে ‘অপতথ্য’ ছড়ানো হচ্ছে তা অনেকাংশে দূর হবে।

শেয়ার করুন

ঢাকায় বিক্রম মিশ্রি, রাতেই ফিরে যাচ্ছেন দিল্লি

সময় ১১:০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে পৌঁছান তিনি। তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া অণু বিভাগ) ইশরাত জাহান। এবারের সফরটি ব্যস্ত এবং সংক্ষিপ্ত হবে বলে জানা গেছে। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বৈঠক শেষ করে তিনি রাতেই ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রথমবারের মতো উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও ভারত। সোমবার সফরের শুরুতেই বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সাথে বৈঠকে যোগ দেবেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।

এরপর তিনি প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। আজ রাতেই ঢাকা ছেড়ে দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে বিক্রম মিশ্রির। ঢাকা ও দিল্লির উভয় পক্ষের আশা, এর মধ্য দিয়ে চলমান উত্তেজনা কমানোর পথ সহজ হতে পারে।

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। সেপ্টেম্বরে সীমান্তে দুইজন হত্যার বিষয়ে দিল্লিকে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতের বক্তব্যেরও কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গত দেড় দশকে ঢাকার এরকম ভূমিকা দেখেনি দিল্লি।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈঠকে অপপ্রচার বন্ধ আর একটি দলের ওপর নির্ভরশীলতা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর-এমন বার্তাই যাবে ভারতের কাছে।

বাংলাদেশ-ভারত
বাংলাদেশ-ভারত

এছাড়া আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসবে বলেও মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ভারত আমাদের প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের ভাষাগত, ইতিহাস ও সংস্কৃতিগত যোগাযোগ রয়েছে। অভিন্ন অনেক নদী রয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার বিষয় রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিটি বিষয়ই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের সঙ্গে করা ‘অসম’ চুক্তির বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনা হবে কি না, এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় মনে করে, ভারতের সঙ্গে আগামীতে কী ধরনের সম্পর্ক হবে তা ভবিষ্যত বলতে পারে। তবে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো ছাড়া অসম যেসব চুক্তি রয়েছে তা নিয়ে ভবিষ্যতে অবশ্যই আলোচনা হবে। এটি সামনে বোঝা যাবে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রি
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রি

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোকে ‘মিথ্যাচার’ না করে বাংলাদেশে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। এ বিষয়েও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের কাছে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হবে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আমরা তাদের বলতে পারি, আপনারা আসেন। এসে মাঠে থেকে রিপোর্ট করে যান। ঘটনাস্থলে না এসে কারও মুখের কথায় কোনো প্রতিবেদনে সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায় না। সেজন্য আমরা তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কারণ, আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী। বিশ্বাস করি যে, তারা এখানে এলে ভারতের টিভি ও গণমাধ্যমে যে ‘অপতথ্য’ ছড়ানো হচ্ছে তা অনেকাংশে দূর হবে।