ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপে যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা
![](https://banglaaffairs.com/storage/2024/09/Png-250-200.png)
- সময় ০১:৪৫:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 26
তিন বছর আগে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, গোটা বিশ্বই এর প্রভাব অনুভব করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন, যদি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকেন, তবে এই যুদ্ধ কখনও শুরু হতো না, এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি একদিনেই যুদ্ধ থামিয়ে দিতে পারতেন।
গত ২০ জানুয়ারি, ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের পদে ফেরার পর তার সহযোগীরা বলছিলেন যে যুদ্ধ বন্ধ করতে কয়েক মাস সময় লাগবে, তবে বুধবার ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক ঘণ্টাব্যাপী ফোনালাপের পর ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বিবিসির খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প বলেছেন পুতিনের সঙ্গে তার ফোনালাপটি ‘বেশ গঠনমূলক’ ছিল। তিনি বলেছেন, “এই অযৌক্তিক যুদ্ধ বন্ধ হওয়া দরকার।” পুতিনের অফিসও জানিয়েছে, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় তারা সমর্থন জানিয়েছেন এবং দুই দেশ একসঙ্গে কাজ শুরু করতে পারবে।
এদিকে, ট্রাম্পের পুতিনের সঙ্গে কথার পর, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কির সঙ্গেও ফোনালাপ করেছেন। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা শুরু করার পর, রাশিয়া দেশটিতে সামরিক অভিযান চালায়, যা এখনো চলমান। এই যুদ্ধের ফলে ইউরোপের উন্নত দেশগুলি থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল দেশগুলোও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিন বছরে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, ৪০ লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছে এবং ৬৮ লাখেরও বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছে।
যুদ্ধ বন্ধের জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হলেও, কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলি পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। এই যুদ্ধের জন্য, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে প্রায় ১২ হাজার কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে, এবং ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে সেই ব্যয় কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছেন।
![ট্রাম্প ক্ষমতায়, জেলেনস্কির গলার সুর নরম](https://banglaaffairs.com/storage/2025/01/DT_1737434448.jpg)
পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর, ট্রাম্প টুইটারে লিখেছেন, “যুদ্ধ বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। এই মৃত্যু, ধ্বংস পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয়। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মানুষের ওপর স্রষ্টার করুণা বর্ষিত হোক।” ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
পুতিনও ট্রাম্পকে মস্কোতে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছেন, দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা দ্রুত শুরু হতে পারে। এর পরপরই জেলেনস্কি জানান, তার সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা সফল হয়েছে, এবং তাঁরা দীর্ঘস্থায়ী শান্তির বিষয়ে কথা বলেছেন।
তবে জেলেনস্কি কিছুটা হতাশ হয়েছেন ট্রাম্পের একটি মন্তব্যে। ট্রাম্প ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা এখন না থাকার কথা জানিয়েছেন। এর ফলে, ইউক্রেন সরকারের জন্য পরিস্থিতি কিছুটা কঠিন হয়ে উঠেছে, কারণ তারা ন্যাটোতে যোগদানের চেষ্টা করে আসছিল।
আগামী শুক্রবার মিউনিখে ইউক্রেন নিয়ে একটি নিরাপত্তা সম্মেলন হবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে জেলেনস্কির আলাপ হবে।
এখনও পর্যন্ত, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত না নিলে, কিয়েভের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। যদিও জেলেনস্কি বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠা ইউক্রেনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তির পথে এগিয়ে যেতে চায়।