ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতলে সমর্থন হারাবে ইউনূস সরকার!
- সময় ০৭:৩৮:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪
- / 302
আন্তর্জাতিক রাজনীতির চাপে বাংলাদেশ এখন এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচন অনেকটা প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু আসলেই কীভাবে এই প্রভাব পড়বে? বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাংলাদেশেও আলোচনার ঝড় তুলেছে। বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের উপর পশ্চিমা সমর্থন নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে। বিশেষ করে, বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গঠিত বর্তমান সরকারের জন্য পশ্চিমা সমর্থন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা তারা পেয়েও গেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখতে পারে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ। এই নিয়ে দুই শিবিরে চলছে উত্তেজনা।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক্স বার্তা আলোচনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।
তিনি বার্তায় দাবি করেছেন, বাংলাদেশে এখন অরাজকতা চলছে। যা অনেকটা আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সঙ্গেই মিলে যায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও বলেছেন, ভারত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ভালো বন্ধু। এই বন্ধুত্ব বাংলাদেশে আগামীতে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ।
এর আগেই মোদি বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন নিয়ে আলোচনা করেছিলেন, যদিও সেক্ষেত্রে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাননি বাইডেন প্রশাসন থেকে। এখন ট্রাম্পের বার্তায় মোদির বক্তব্যের সমর্থন নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫২ লাখ হিন্দু জনগোষ্ঠী বাস করেন। এদের মধ্যে প্রায় ২৬ লাখ ভোটার। যদিও তারা সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করে থাকেন, এবারের জরিপে দেখা যাচ্ছে কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তা তাদের মধ্যে কমছে। কার্নেগি এনডোম্যান্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের জরিপ বলছে, বাইডেন যেখানে ২০২০ সালে ৬১ শতাংশ হিন্দু ভোট পেয়েছিলেন, এবার কমলা অনেক কম ভোট পাবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হলে তুলসি গ্যাবার্ডকে সেক্রেটারি অব স্টেট করা হতে পারে। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অনেকটা পাল্টাতে পারে। গ্যাবার্ড একজন ডানপন্থী কট্টর হিন্দুত্ববাদী হিসেবে পরিচিত। ফলে ভারতীয় নীতির পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আরও দৃঢ় হতে পারে।
২০১৯ সালে প্রিয়া সাহা যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশ থেকে ৩৭ মিলিয়ন সংখ্যালঘুর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন তাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ বিষয়ক নীতি কি নতুন মেরুকরণের দিকে যেতে পারে?
বাংলাদেশি আমেরিকানরা সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের সমর্থক হলেও এই নির্বাচনে তারা বিভক্ত। আওয়ামী লীগ সমর্থকরা বিশ্বাস করেন, বাইডেন প্রশাসন বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। ট্রাম্পের প্রতি তাদের আস্থা তৈরি হয়েছে।
আবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য। তাই অনেকেই মনে করছেন ট্রাম্প জয়ী হলে এটি আওয়ামী লীগের জন্য আশীর্বাদ হতে পারে।
প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, কে জিতবে এবং তার প্রভাব কীভাবে পড়বে বাংলাদেশে? যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির এই পরিবর্তনের দিকে বাংলাদেশের অনেকেই তাকিয়ে রয়েছেন। কেমন হবে এই প্রভাব, তা সময়ই বলে দেবে।