ট্রাম্পের হাত ধরেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!

- সময় ০৭:৩৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
- / 37
যেকোনো সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা করে বসতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন সময়ের হুমকিতে এমন বার্তাই প্রকাশ পেয়েছে। ফলে ক্ষমতা গ্রহণের পর যে তৃতীয় বিশ্ব এড়াতে চান বলে মন্তব্য করেছিলেন রিপাবলিকান ট্রাম্প, তার হাত ধরেই শুরু হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এমনটাই মনে করছেন আন্তজার্তিক বিশ্লেষকরা।
গত কয়েকদিন ধরে ভারত মহাসাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি সেই শঙ্কাকে আরও উসকে দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ইরানে হামলার আগে নিজেদের যুদ্ধ সক্ষমতা ঝালিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য ইরানের মিত্র ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে একের পর এক হামলাও চালাচ্ছে ওয়াশিংটন।
তবে ইরান আক্রান্ত হলে রাশিয়া এবং চীন দেশটির পক্ষ নিবে বলেই মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি তিনটি দেশ নৌ মহড়া করেছে একসঙ্গে।
লন্ডনভিত্তিক ইরানি গণমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ভারত মহাসাগরের কৌশলগত বিমানঘাঁটি ডিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সঙ্গে বাগযুদ্ধ আর ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মার্কিন অ্যাকশনের মধ্যেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।

ব্রিটিশ এই অঞ্চলটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানেই গেল দুই দিনে বি-টু স্টেলথ বম্বার, সি-১৭ কার্গো বিমান ও ১০টি অ্যারিয়াল রিফুয়েলিং ট্যাংকার মোতায়েন করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র যে সেখানে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, তার খবর প্রকাশ্যে এনেছে প্রতিরক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ারজোনও।
ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, ডিয়েগো গার্সিয়ায় যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। অতীতে একাধিকবার মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন হামলার সময় এই ঘাঁটি ব্যবহার করেছে ওয়াশিংটন। এমনকি ২০০১ সালে আফগানিস্তান ও ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের সূচনাও এই ঘাঁটি থেকেই করা হয়েছিল। এখন এই ঘাঁটিতে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি যুদ্ধের আশঙ্কাকে তীব্র করছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডাটা ও স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে এই ঘাঁটিতে অন্তত পাঁচটি বি-টু স্পিরিট স্টেলথ বম্বারস পৌঁছানো বা ট্রানজিটের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই বোমারু বিমান ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকার বাস্টার বোমার বহনে উপযুক্ত। মাটির খুব গভীরে কিংবা সুরক্ষিত জায়গায় তাণ্ডব চালাতে পারে এই বোমা। এছাড়া ২০ হাজার পাউন্ড ওজনের মাদার অব অল বম্ব বহনের সক্ষমতাও রয়েছে এই বোমারু বিমানের।
এমন এক সময় ট্রাম্প প্রশাসন তার সামরিক বাহিনীকে এই ঘাঁটিতে জড়ো করছে, যখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের সম্পর্কে আরও টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে লোহিত সাগরে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের চলমান হামলা এবং ইরানের পরমাণু উচ্চাভিলাষ নিয়ে শঙ্কায় আছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি শোনা যাচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে ইরানকে দুই মাসের সময়ও বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই সময়ের মধ্যে ইরান নিজেদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হলে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে এত কিছুর মধ্যেও থেমে নেই ইরান। নতুন আরেকটি মিসাইল সিটি প্রকাশ্যে এনেছে দেশটি। ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের মিসাইল সক্ষমতা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে বলেও জানিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী।
এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বললেও ওয়াশিংটনের পদক্ষেপ বলে দিচ্ছে, তারা সামরিকভাবেও প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ কারো জন্যই ভালো হবেনা বলে সতর্ক করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্ব রাজনীতির এক নতুন কৌশলগত অধ্যায়ের সূচনা করছে তিন পরাশক্তি – চীন, রাশিয়া এবং ইরান। যৌথ সামুদ্রিক মহড়ার মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক শক্তির মঞ্চে এক নতুন বার্তা দিচ্ছে।
এই মহড়ার মূল লক্ষ্য কী? পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সমুদ্র নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করা। ইরানের চাবাহার বন্দরে শুরু হতে চলা এই মহড়া শুধু একটি সামরিক অনুশীলন নয়, বরং একটি সুস্পষ্ট বার্তা- আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করবে এই তিন দেশ।
রাশিয়া, চীন এবং ইরানের নৌবাহিনী এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ, কমব্যাট ভেসেল এবং লজিস্টিক জাহাজ নিয়ে। আন্তর্জাতিক সমুদ্র বাণিজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, জলদস্যুতা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম – এসবই এই মহড়ার অন্তর্ভুক্ত।
তিন দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও মজবুত করতে এই মহড়ার গুরুত্ব অনেক। প্রশিক্ষণ চলছে রেসকিউ অপারেশন, কৌশলগত যুদ্ধ পরিকল্পনা এবং বাস্তবসম্মত সামরিক অনুশীলনের মাধ্যমে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মহড়া শুধু সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শক্তিশালী বার্তাও দিচ্ছে। পশ্চিমা আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানানো এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে স্বাধীন উদ্যোগ গ্রহণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে এই তিন দেশ।

বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ চীন, শক্তিশালী সামরিক শক্তি রাশিয়া এবং ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইরান – এই তিন দেশের একসঙ্গে কাজ করা বৈশ্বিক সামরিক কৌশলে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
এই যৌথ মহড়া শুধু প্রশিক্ষণ নয়, এটি ভবিষ্যৎ সামুদ্রিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি রূপরেখা। তাদের লক্ষ্য, একটি অভিন্ন সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা।
চাবাহার বন্দর, ওমান উপসাগরের কাছে অবস্থিত একটি কৌশলগত অঞ্চল। উত্তর ভারত মহাসাগরের এই অংশে এই মহড়ার আয়োজনের অর্থ সুস্পষ্ট – বৈশ্বিক শক্তিগুলোর সামুদ্রিক উপস্থিতির ইঙ্গিত এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জোরদার করা।
এই মহড়া নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব কী ভাবছে? অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এটি একটি সুস্পষ্ট বার্তা যে চীন, রাশিয়া এবং ইরান তাদের সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করছে।
তিনটি দেশই যুক্তরাষ্ট্রের রোশানলে রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা, কূটনৈতিক চাপ এবং সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে এই দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এই মহড়া সেই ভূরাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
এই মহড়া কবে শেষ হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এটি যে বিশ্ব রাজনীতির চিত্র পাল্টে দিচ্ছে, তা নিশ্চিত। ভবিষ্যতে আমরা দেখতে পাবো এই তিন পরাশক্তির মধ্যে আরও গভীর সহযোগিতা এবং নতুন কৌশলগত পদক্ষেপ।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি থামাতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ করে, তাহলে এই আক্রমণের প্রভাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলেই মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
শেয়ার করুন

ট্রাম্পের হাত ধরেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!

যেকোনো সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা করে বসতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন সময়ের হুমকিতে এমন বার্তাই প্রকাশ পেয়েছে। ফলে ক্ষমতা গ্রহণের পর যে তৃতীয় বিশ্ব এড়াতে চান বলে মন্তব্য করেছিলেন রিপাবলিকান ট্রাম্প, তার হাত ধরেই শুরু হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এমনটাই মনে করছেন আন্তজার্তিক বিশ্লেষকরা।
গত কয়েকদিন ধরে ভারত মহাসাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি সেই শঙ্কাকে আরও উসকে দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ইরানে হামলার আগে নিজেদের যুদ্ধ সক্ষমতা ঝালিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য ইরানের মিত্র ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে একের পর এক হামলাও চালাচ্ছে ওয়াশিংটন।
তবে ইরান আক্রান্ত হলে রাশিয়া এবং চীন দেশটির পক্ষ নিবে বলেই মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি তিনটি দেশ নৌ মহড়া করেছে একসঙ্গে।
লন্ডনভিত্তিক ইরানি গণমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ভারত মহাসাগরের কৌশলগত বিমানঘাঁটি ডিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সঙ্গে বাগযুদ্ধ আর ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মার্কিন অ্যাকশনের মধ্যেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।

ব্রিটিশ এই অঞ্চলটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানেই গেল দুই দিনে বি-টু স্টেলথ বম্বার, সি-১৭ কার্গো বিমান ও ১০টি অ্যারিয়াল রিফুয়েলিং ট্যাংকার মোতায়েন করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র যে সেখানে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, তার খবর প্রকাশ্যে এনেছে প্রতিরক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ারজোনও।
ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, ডিয়েগো গার্সিয়ায় যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। অতীতে একাধিকবার মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন হামলার সময় এই ঘাঁটি ব্যবহার করেছে ওয়াশিংটন। এমনকি ২০০১ সালে আফগানিস্তান ও ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের সূচনাও এই ঘাঁটি থেকেই করা হয়েছিল। এখন এই ঘাঁটিতে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি যুদ্ধের আশঙ্কাকে তীব্র করছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডাটা ও স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে এই ঘাঁটিতে অন্তত পাঁচটি বি-টু স্পিরিট স্টেলথ বম্বারস পৌঁছানো বা ট্রানজিটের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই বোমারু বিমান ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকার বাস্টার বোমার বহনে উপযুক্ত। মাটির খুব গভীরে কিংবা সুরক্ষিত জায়গায় তাণ্ডব চালাতে পারে এই বোমা। এছাড়া ২০ হাজার পাউন্ড ওজনের মাদার অব অল বম্ব বহনের সক্ষমতাও রয়েছে এই বোমারু বিমানের।
এমন এক সময় ট্রাম্প প্রশাসন তার সামরিক বাহিনীকে এই ঘাঁটিতে জড়ো করছে, যখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের সম্পর্কে আরও টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে লোহিত সাগরে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের চলমান হামলা এবং ইরানের পরমাণু উচ্চাভিলাষ নিয়ে শঙ্কায় আছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি শোনা যাচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে ইরানকে দুই মাসের সময়ও বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই সময়ের মধ্যে ইরান নিজেদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হলে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে এত কিছুর মধ্যেও থেমে নেই ইরান। নতুন আরেকটি মিসাইল সিটি প্রকাশ্যে এনেছে দেশটি। ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের মিসাইল সক্ষমতা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে বলেও জানিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী।
এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বললেও ওয়াশিংটনের পদক্ষেপ বলে দিচ্ছে, তারা সামরিকভাবেও প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ কারো জন্যই ভালো হবেনা বলে সতর্ক করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্ব রাজনীতির এক নতুন কৌশলগত অধ্যায়ের সূচনা করছে তিন পরাশক্তি – চীন, রাশিয়া এবং ইরান। যৌথ সামুদ্রিক মহড়ার মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক শক্তির মঞ্চে এক নতুন বার্তা দিচ্ছে।
এই মহড়ার মূল লক্ষ্য কী? পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সমুদ্র নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করা। ইরানের চাবাহার বন্দরে শুরু হতে চলা এই মহড়া শুধু একটি সামরিক অনুশীলন নয়, বরং একটি সুস্পষ্ট বার্তা- আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করবে এই তিন দেশ।
রাশিয়া, চীন এবং ইরানের নৌবাহিনী এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ, কমব্যাট ভেসেল এবং লজিস্টিক জাহাজ নিয়ে। আন্তর্জাতিক সমুদ্র বাণিজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, জলদস্যুতা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম – এসবই এই মহড়ার অন্তর্ভুক্ত।
তিন দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও মজবুত করতে এই মহড়ার গুরুত্ব অনেক। প্রশিক্ষণ চলছে রেসকিউ অপারেশন, কৌশলগত যুদ্ধ পরিকল্পনা এবং বাস্তবসম্মত সামরিক অনুশীলনের মাধ্যমে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মহড়া শুধু সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শক্তিশালী বার্তাও দিচ্ছে। পশ্চিমা আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানানো এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে স্বাধীন উদ্যোগ গ্রহণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে এই তিন দেশ।

বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ চীন, শক্তিশালী সামরিক শক্তি রাশিয়া এবং ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইরান – এই তিন দেশের একসঙ্গে কাজ করা বৈশ্বিক সামরিক কৌশলে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
এই যৌথ মহড়া শুধু প্রশিক্ষণ নয়, এটি ভবিষ্যৎ সামুদ্রিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি রূপরেখা। তাদের লক্ষ্য, একটি অভিন্ন সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা।
চাবাহার বন্দর, ওমান উপসাগরের কাছে অবস্থিত একটি কৌশলগত অঞ্চল। উত্তর ভারত মহাসাগরের এই অংশে এই মহড়ার আয়োজনের অর্থ সুস্পষ্ট – বৈশ্বিক শক্তিগুলোর সামুদ্রিক উপস্থিতির ইঙ্গিত এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জোরদার করা।
এই মহড়া নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব কী ভাবছে? অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এটি একটি সুস্পষ্ট বার্তা যে চীন, রাশিয়া এবং ইরান তাদের সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করছে।
তিনটি দেশই যুক্তরাষ্ট্রের রোশানলে রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা, কূটনৈতিক চাপ এবং সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে এই দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এই মহড়া সেই ভূরাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
এই মহড়া কবে শেষ হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এটি যে বিশ্ব রাজনীতির চিত্র পাল্টে দিচ্ছে, তা নিশ্চিত। ভবিষ্যতে আমরা দেখতে পাবো এই তিন পরাশক্তির মধ্যে আরও গভীর সহযোগিতা এবং নতুন কৌশলগত পদক্ষেপ।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি থামাতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ করে, তাহলে এই আক্রমণের প্রভাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলেই মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।