“টিন হার্ট থ্রব” জাস্টিন বিবার
- সময় ১২:৫৬:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / 245
জাস্টিন বিবার, একজন কানাডিয়ান গায়ক এবং গীতিকার, যার সঙ্গীত ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল অল্প বয়সেই। বর্তমানে, তিনি পপ মিউজিকের অন্যতম প্রধান তারকা। তার জীবনের প্রতিটি ধাপেই ছিলো সংগ্রাম, উত্থান-পতন এবং এক অবিশ্বাস্য সাফল্যের গল্প।
জাস্টিন বিবারের জন্ম ১ মার্চ, ১৯৯৪ সালে কানাডার অন্টারিও শহরের স্ট্রাটফোর্ডে। শৈশবে বিবার হকি, সকার এবং দাবাতে আগ্রহী ছিলেন। সেসময় তিনি সঙ্গীতের প্রতি উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। বিবার নিজে নিজে গিটার, ড্রাম, পিয়ানো বাজানো শেখেন।
২০০৭ সালে বিবার স্থানীয় এক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। বিবারের মা ম্যালেট বিবারের সেই পরিবেশনা ধারণ করে ইউটিউবে প্রকাশ করেন। ম্যালেট বিবারের অন্যান্য গানও ইউটিউবে প্রকাশ করতে থাকেন এবং ধীরে ধীরে ইউটিউবে বিবারের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
২০০৭ সালে, স্কুটার ব্রাউন নামের একজন মার্কিন মিউজিক ম্যানেজার জাস্টিনের ইউটিউব ভিডিও দেখে মুগ্ধ হন। ব্রাউন তাকে অ্যাটলান্টায় নিয়ে যান এবং তাকে আর অ্যান্ড বি গায়ক উশার রেমন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। ২০০৯ সালে, বিবার তার প্রথম সিঙ্গেল “ওয়ান টাইম” রিলিজ করেন, যা তাৎক্ষণিকভাবে হিট হয়ে যায়।
এরপর ২০০৯ সালের শেষের দিকে তার প্রথম এক্সটেন্ডেড প্লে মাই ওয়ার্ল্ড মুক্তি দেয়। যা তাকে রাতারাতি আন্তর্জাতিক তারকায় পরিণত করে তোলে। বিবারের গান কিশোরী মেয়েদের মাঝে জনপ্রিয়তা ছিল অতুলনীয়, যার ফলে তাকে “টিন হার্ট থ্রব” বলা হত।
বিবারের এই অ্যালবামটি যুক্তরাষ্ট্রে প্লাটিনাম স্বীকতি লাভ করে। বিবার-ই প্রথম শিল্পী যার প্রথম অ্যালবামের সাতটি গান বিলবোর্ড হট ১০০ তালিকায় স্থান করে নেয়।
বিবারের প্রথম পূর্ণ অ্যালবাম মাই ওয়ার্ল্ড ২.০। যা ২০১০ সালের মার্চে রিলিজ হয়। অ্যালবামটি বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য অর্জন করে এবং বেশ কয়েকটি দেশে শীর্ষ দশে স্থান করে নেয়। এটিও যুক্তরাষ্ট্রে প্লাটিনাম সনদে ভূষিত হয়। আপএই অ্যালবামের বেবি গানটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ইউটিউবের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সর্বাধিক প্রদর্শিত, আলোচিত এবং পছন্দিত ভিডিওগুলোর একটি হলো এই গানটির মিউজিক ভিডিও।
বিবারের পরবর্তী অ্যালবাম নেভার সে নেভার দ্য রিমিক্সেস। এটি প্রকাশিত হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১। তার দ্বিতীয় স্টুডিও অ্যালবাম ছিল আন্ডার দ্য মিসলটো যা মুক্তি পায় ২০১১ সালের নভেম্বরে।
এক বছর পর ২০১২ সালে জাস্টিন বিবার প্রকাশ করে তার তৃতীয় স্টুডিও অ্যালবাম বিলিভ। তার চতুর্থ অ্যালবাম পারপাস ২০১৫ সালের নভেম্বরে মুক্তি পায়। যুক্তরাষ্ট্রে তার অ্যালবাম ও গানের মোট বিক্রি সংখ্যা ৪৪.৭ মিলিয়ন।
২০১০ অ্যামেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস-এ বিবার বর্ষসেরা শিল্পীর পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি ৫৩তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডস-এ শ্রেষ্ঠ নবীন শিল্পী ও বেস্ট পপ ভোকাল অ্যালবাম পুরস্কার দুইটির জন্য মনোনীত হন।
সাফল্যের সাথে সাথে সমালোচনাও আসে। তিনি বেশ কিছু আইনি ঝামেলায় পড়েন এবং তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মিডিয়ায় বিভিন্ন গুজব ছড়াতে থাকে। তবে, সব কিছুর পরেও তিনি নিজের সঙ্গীতকে সর্বাগ্নে রাখেন। ২০১৫ সালে, তার অ্যালবাম “পারপাস” মুক্তি পায়, যা তাকে আরও বড় তারকায় পরিণত করে।
বিগত বছরগুলোতে, বিবার তার ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক পরিবর্তন এনেছেন। ২০১৮ সালে, তিনি মডেল হেইলি বল্ডউইনকে বিয়ে করেন, যা তার জীবনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
বিবার তার খ্যাতি এবং সম্পদ কেবল নিজের জন্য নয়, অন্যদের সহায়তার জন্যও ব্যবহার করেছেন। তার প্রকাশিত গান ‘স্টাক উইথ ইউ’ তোমার সাথে আটকে আছি করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শিশুদের শিক্ষা বৃত্তি দান করবে।