ঢাকা ০৩:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টিউলিপের ওপর চাপ বাড়ছেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • সময় ১১:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 17

টিউলিপ সিদ্দিক

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে এবার বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দলের প্রধান। রোববার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম- বিবিসি।

টিউলিপ সিদ্দিকী বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ।  তিনি ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রিসভার সদস্য এবং ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া।

গত ৫ আগষ্ট তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীণ সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। এ নিয়ে তার দল লেবার পার্টির সদস্যরাও বিব্রত।

তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে বলেও গুঞ্জন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরই মাঝে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ টিউলিপের পদত্যাগ চাওয়ায় বিষয়টি আরো বিব্রতকর হয়ে উঠেছে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে কনজারভেটিভ পার্টির এ নেতা বলেছেন: কেয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে।

পোস্টে তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন এবং তিনি নিজেকেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।

ব্যাডেনোচ বলেন, সরকার যে আর্থিক সমস্যাগুলো তৈরি করেছে, তা মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা উচিত হলেও টিউলিপ সিদ্দিক সেই কাজে মনোনিবেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছেন। আর এখন বাংলাদেশ সরকারও শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে তার যোগসূত্র নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

বিবিসি আরো বলছে, টিউলিপের জন্মভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, নিজ খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের উপহারের ফ্ল্যাটে থাকা নিয়ে বিতর্ক চলছে তাকে নিয়ে।

মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন টিউলিপ
মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন টিউলিপ

এছাড়া সম্প্রতি টোরি এমপি রাও টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করেছেন। ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা টিউলিপের উদ্দেশে বলেছেন, ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি যেন ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তির লেনদেনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং ব্যাখ্যা করতে হবে আসলে কী ঘটেছে এবং কেন? যদি তিনি তা না করেন, তবে মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না।

টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য কোনও ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, ‘আমি কোনও ভুল করিনি।’

এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের উপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেছেন, টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত তালিকা নিয়ে যে খবর চাউর হয়েছে তা ‘সম্পূর্ণ অসত্য’।

শেয়ার করুন

টিউলিপের ওপর চাপ বাড়ছেই

সময় ১১:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে এবার বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দলের প্রধান। রোববার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম- বিবিসি।

টিউলিপ সিদ্দিকী বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ।  তিনি ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রিসভার সদস্য এবং ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া।

গত ৫ আগষ্ট তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীণ সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। এ নিয়ে তার দল লেবার পার্টির সদস্যরাও বিব্রত।

তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে বলেও গুঞ্জন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরই মাঝে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ টিউলিপের পদত্যাগ চাওয়ায় বিষয়টি আরো বিব্রতকর হয়ে উঠেছে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে কনজারভেটিভ পার্টির এ নেতা বলেছেন: কেয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে।

পোস্টে তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন এবং তিনি নিজেকেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।

ব্যাডেনোচ বলেন, সরকার যে আর্থিক সমস্যাগুলো তৈরি করেছে, তা মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা উচিত হলেও টিউলিপ সিদ্দিক সেই কাজে মনোনিবেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছেন। আর এখন বাংলাদেশ সরকারও শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে তার যোগসূত্র নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

বিবিসি আরো বলছে, টিউলিপের জন্মভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, নিজ খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের উপহারের ফ্ল্যাটে থাকা নিয়ে বিতর্ক চলছে তাকে নিয়ে।

মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন টিউলিপ
মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন টিউলিপ

এছাড়া সম্প্রতি টোরি এমপি রাও টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করেছেন। ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা টিউলিপের উদ্দেশে বলেছেন, ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি যেন ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তির লেনদেনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং ব্যাখ্যা করতে হবে আসলে কী ঘটেছে এবং কেন? যদি তিনি তা না করেন, তবে মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না।

টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য কোনও ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, ‘আমি কোনও ভুল করিনি।’

এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের উপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেছেন, টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত তালিকা নিয়ে যে খবর চাউর হয়েছে তা ‘সম্পূর্ণ অসত্য’।