জামিনপ্রাপ্ত দুই ভাইকে তুলে নিয়ে বাদীপক্ষের মারধর | Bangla Affairs
১০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামিনপ্রাপ্ত দুই ভাইকে তুলে নিয়ে বাদীপক্ষের মারধর

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
  • সময় ০৮:৩৫:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 98

গাজীপুরে আদালত প্রাঙ্গনে বাদীপক্ষের মারধর

গাজীপুরে জামিনপ্রাপ্ত দুই আসামিকে আদালত প্রাঙ্গণে মারধর করে আইনজীবীদের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যান মামলার বাদী ও তাঁর লোকজন। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা গাজীপুর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর সামনে ঘটে।

পুলিশ জানায়, দুই ভাইকে ধরে নেওয়ার কিছু সময় পর হামলাকারীরা তাদের ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যান।

জামিন পাওয়া দুই আসামি হলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে বাবুল মিয়া ও তাঁর ছোট ভাই মিলন মিয়া (৩৩)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শহীদুল্লাহর ছেলে নাজমুল হক জমিসংক্রান্ত বিরোধের মামলায় বাদী ছিলেন। মামলার আসামিরা জামিন পেলে তারা আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে বাদী ও তাঁর লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে জামিন পাওয়া দুই আসামিকে মারধর শুরু করেন। আইনজীবীরা বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাঁদের ওপরও আক্রমণ করেন। পরে আরও কিছু লোক বাবুল মিয়া ও মিলন মিয়াকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যান। ঘটনাটি উপস্থিত লোকজন ভিডিও করেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

মামলার অপর জামিনপ্রাপ্ত আসামি এনামুল হক বলেন, “আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন পাওয়ার পর পরই সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালান। তারা দা, চাকু, লাঠি, দেশি অস্ত্র নিয়ে আমাদের পথ রোধ করেন। আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদককে জানালে তিনি দুই কর্মচারী পাঠান, কিন্তু তাদের সামনে আমাদের ওপর হামলা হয়।”

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৩ জন অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। আদালত জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর পর বাদী ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু সশস্ত্র লোকজন নিয়ে হামলা চালান। হামলাকারীরা দুই ভাইকে ধরে নিয়ে যান। পরে তাদের রাজবাড়ী মাঠের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পুলিশ খবর পেয়ে দুই ভাইকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

বাবুল মিয়ার স্ত্রী দোলনা আক্তার জানান, জামিন পাওয়ার পর তারা আদালতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বাদী নাজমুল হক ও তার লোকজন এসে তাদের ওপর হামলা চালান এবং একপর্যায়ে দুই ভাইকে ধরে নিয়ে যান।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, হামলাকারীরা বাদীপক্ষের লোকজন ছিল, যারা জামিন পাওয়া দুই ভাইকে মারধর করে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। পরে তাদের পাওয়া গেছে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে হামলা চালানোরা সাধারণ লোক নয়, তারা সন্ত্রাসী। এটি রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের বিষয়। পুলিশ দুপুর থেকেই এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে এবং অভিযুক্তদের ছাড় দেওয়া হবে না।

শেয়ার করুন

জামিনপ্রাপ্ত দুই ভাইকে তুলে নিয়ে বাদীপক্ষের মারধর

সময় ০৮:৩৫:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গাজীপুরে জামিনপ্রাপ্ত দুই আসামিকে আদালত প্রাঙ্গণে মারধর করে আইনজীবীদের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যান মামলার বাদী ও তাঁর লোকজন। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা গাজীপুর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর সামনে ঘটে।

পুলিশ জানায়, দুই ভাইকে ধরে নেওয়ার কিছু সময় পর হামলাকারীরা তাদের ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যান।

জামিন পাওয়া দুই আসামি হলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে বাবুল মিয়া ও তাঁর ছোট ভাই মিলন মিয়া (৩৩)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শহীদুল্লাহর ছেলে নাজমুল হক জমিসংক্রান্ত বিরোধের মামলায় বাদী ছিলেন। মামলার আসামিরা জামিন পেলে তারা আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে বাদী ও তাঁর লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে জামিন পাওয়া দুই আসামিকে মারধর শুরু করেন। আইনজীবীরা বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাঁদের ওপরও আক্রমণ করেন। পরে আরও কিছু লোক বাবুল মিয়া ও মিলন মিয়াকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যান। ঘটনাটি উপস্থিত লোকজন ভিডিও করেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

মামলার অপর জামিনপ্রাপ্ত আসামি এনামুল হক বলেন, “আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন পাওয়ার পর পরই সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালান। তারা দা, চাকু, লাঠি, দেশি অস্ত্র নিয়ে আমাদের পথ রোধ করেন। আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদককে জানালে তিনি দুই কর্মচারী পাঠান, কিন্তু তাদের সামনে আমাদের ওপর হামলা হয়।”

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৩ জন অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। আদালত জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর পর বাদী ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু সশস্ত্র লোকজন নিয়ে হামলা চালান। হামলাকারীরা দুই ভাইকে ধরে নিয়ে যান। পরে তাদের রাজবাড়ী মাঠের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পুলিশ খবর পেয়ে দুই ভাইকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

বাবুল মিয়ার স্ত্রী দোলনা আক্তার জানান, জামিন পাওয়ার পর তারা আদালতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বাদী নাজমুল হক ও তার লোকজন এসে তাদের ওপর হামলা চালান এবং একপর্যায়ে দুই ভাইকে ধরে নিয়ে যান।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, হামলাকারীরা বাদীপক্ষের লোকজন ছিল, যারা জামিন পাওয়া দুই ভাইকে মারধর করে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। পরে তাদের পাওয়া গেছে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে হামলা চালানোরা সাধারণ লোক নয়, তারা সন্ত্রাসী। এটি রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের বিষয়। পুলিশ দুপুর থেকেই এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে এবং অভিযুক্তদের ছাড় দেওয়া হবে না।