০১:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামালপুরের ২৮ শতাংশ প্রাথমিক স্কুল প্রধান শিক্ষক শূন্য

শেখ ফজলে রাব্বি, জামালপুর
  • সময় ১২:০৯:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 62

২৮ শতংশ স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই

জামালপুরে জেলার প্রায় ২৮ শতাংশ (২৭ দশমিক৮৩) প্রাথমিক স্কুলেই প্রধান শিক্ষক নেই। ফলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চালাতে হচ্ছে বিদ্যালয়গুলো। বছরের পর বছর ধরেই এমনটা হলেও এর জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে শুরু করে উপজেলাগুলোর গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

জামালপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কার্যালয় জানিয়েছে, জেলায় ১ হাজার ১৬৪টি অনুমোদিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩২৪টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এদের মধ্যে সরিষাবাড়ীতে ৫৫টি, মেলান্দহে ২৪. দেওয়ানগঞ্জে ৩৫, বকশীগঞ্জে ৬২, সদরে ৮৩. ইসলামপুরে ২৬ এবং মাদারগঞ্জে ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় মামলা জটিলতায় আরও ১৫ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়েছে।

কোনো কোনো বিদ্যালয়ে ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। অবসরের কারণে একের পর এক শূন্য হচ্ছে পদ। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। তাই প্রতিবছরই বাড়ছে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য স্কুলের সংখ্যা। অন্য শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম৷ ফলে এসব বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

সরকারি বিধি অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষকের পদগুলোর ৬৫ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ৩৫ ভাগ সরাসরি নিয়োগের বিধান রয়েছে।

একাধিক শিক্ষক জানান, শহর এলাকায় বা শহরতলীর স্কুলগুলোতে অবসরের কারণে পদ শূন্য হলে অন্য এলাকা থেকে বদলি হয়ে গেল পূরণ করা হয়ে থাকে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার আমখাওয়া পূর্বপাড়া আজিজুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রায় সাত বছর এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষক নূর হোসেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘নূর হোসেনকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে হয় আবার ক্লাসও নিতে হয়।

প্রতিটি শিক্ষককে প্রতিদিন কমপক্ষে তিনটি ক্লাস নিতে হয়। প্রশাসনিক কাজে বা বিভিন্ন সভায় যোগদান করতে তাকে প্রতি মাসেই যেতে হয় উপজেলা সদরে। তখন তিনি ক্লাস নিতে পারেন না। এর ফলে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হয়।’

সদর উপজেলার চালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে যান গত বছর৷ এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী শিক্ষক আউলিয়া আক্তারকে।

এভাবেই ৩২৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর শূন্য হয়ে পড়ছে পদগুলো। সেখানে সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন খান জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সহকারী শিক্ষকদের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদোন্নতি শুরু হলেই সংকট দূর হবে।

শেয়ার করুন

জামালপুরের ২৮ শতাংশ প্রাথমিক স্কুল প্রধান শিক্ষক শূন্য

সময় ১২:০৯:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জামালপুরে জেলার প্রায় ২৮ শতাংশ (২৭ দশমিক৮৩) প্রাথমিক স্কুলেই প্রধান শিক্ষক নেই। ফলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চালাতে হচ্ছে বিদ্যালয়গুলো। বছরের পর বছর ধরেই এমনটা হলেও এর জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে শুরু করে উপজেলাগুলোর গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

জামালপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কার্যালয় জানিয়েছে, জেলায় ১ হাজার ১৬৪টি অনুমোদিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩২৪টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এদের মধ্যে সরিষাবাড়ীতে ৫৫টি, মেলান্দহে ২৪. দেওয়ানগঞ্জে ৩৫, বকশীগঞ্জে ৬২, সদরে ৮৩. ইসলামপুরে ২৬ এবং মাদারগঞ্জে ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় মামলা জটিলতায় আরও ১৫ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়েছে।

কোনো কোনো বিদ্যালয়ে ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। অবসরের কারণে একের পর এক শূন্য হচ্ছে পদ। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। তাই প্রতিবছরই বাড়ছে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য স্কুলের সংখ্যা। অন্য শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম৷ ফলে এসব বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

সরকারি বিধি অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষকের পদগুলোর ৬৫ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ৩৫ ভাগ সরাসরি নিয়োগের বিধান রয়েছে।

একাধিক শিক্ষক জানান, শহর এলাকায় বা শহরতলীর স্কুলগুলোতে অবসরের কারণে পদ শূন্য হলে অন্য এলাকা থেকে বদলি হয়ে গেল পূরণ করা হয়ে থাকে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার আমখাওয়া পূর্বপাড়া আজিজুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রায় সাত বছর এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষক নূর হোসেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘নূর হোসেনকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে হয় আবার ক্লাসও নিতে হয়।

প্রতিটি শিক্ষককে প্রতিদিন কমপক্ষে তিনটি ক্লাস নিতে হয়। প্রশাসনিক কাজে বা বিভিন্ন সভায় যোগদান করতে তাকে প্রতি মাসেই যেতে হয় উপজেলা সদরে। তখন তিনি ক্লাস নিতে পারেন না। এর ফলে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হয়।’

সদর উপজেলার চালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে যান গত বছর৷ এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী শিক্ষক আউলিয়া আক্তারকে।

এভাবেই ৩২৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর শূন্য হয়ে পড়ছে পদগুলো। সেখানে সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন খান জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সহকারী শিক্ষকদের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদোন্নতি শুরু হলেই সংকট দূর হবে।