জামালপুরে অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকে সয়লাব
- সময় ০৭:৫৭:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 14
জামালপুরে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ছড়াছড়ি। এর মধ্যে সরকারের অনুমোদন বা লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করা হাসপাতাল-ক্লিনিক যেমন আছে, তেমনি আছে অনেক অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান। এদের সেবা কার্যক্রম নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। সরকারি হাসপাতালে যে পরীক্ষা-টেস্ট করাতে লাগে ৫০ টাকা বেসরকারি হাসপাতালে সেটি করাতে লাগে ৫০০ টাকা। প্রায় দশ- বারো গুণ টাকা প্রকাশ্যে বেশি নেওয়ার অভিযোগ বেসরকারি হাসপাতাল গুলোর বিরুদ্ধে।
জেলায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে লাইসেন্সের কপি না টানানো, মাত্রাঅতিরিক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার খরচ সরকারি হাসপাতালের ১০-১২ গুন বেশি টেস্ট বাণিজ্য করে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন দালালরা চার্জ নেয়া, হাসপাতাল ভর্তি ঔষধ কোম্পানীর রিপেজেন্টিভদের অবস্থান, জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকা, ২৪ ঘন্টা জরুরি সেবা কার্যক্রম না থাকা সহ বিভিন্ন অনিয়ম অভিযোগ উঠে এসেছে।
সাধারণ রোগী ও তাদের আন্তীয় স্বজনরা এমন বেশ কিছু অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছেন লাইসেন্সবিহীন ও যথাসময়ে লাইসেন্স নবায়ন না করাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা নিবে।
গতকাল শহরের বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিশেষ করে লাইসেন্স পাওয়া বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনেস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকগুলোতে সুনির্ধারিত ভৌত সুবিধা, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, ডিপেস্লামাধারী নার্স ও ওয়ার্ডবয়সহ প্রয়োজনীয় জনবল এবং যন্ত্রপাতি ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ না থাকা এবং চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য অত্যাবশকীয় ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স, ফার্মেসি পরিচালনার জন্য লাইসেন্স, পরিবেশ লাইসেন্স, পরমাণুবিক শক্তি কমিশন লাইসেন্স, মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট লাইসেন্স, নারকোটিকস লাইসেন্স, পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিং না নিয়েও অনেক বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে।
এছাড়াও কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার দালালের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে এনে নির্বিচারে কমিশন ও টেস্ট বাণিজ্য করে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন। সার্টিফিকেটবিহীন অদক্ষ টেকনিশিয়ান দিয়ে রোগ নির্ণয় করে সাধারণ রোগীদের ভুল চিকিৎসার মুখে ঠেলে দেওয়া, আইসিইউ, ভেন্টিলেশন সাপোর্ট ও সেন্ট্রাল অক্সিজেনের নামে ছলচাতুরি ও রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করাসহ নানাভাবে হয়রানি করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও বেশির ভাগ চিকিৎসকে অ্যাপ্রোন না পরেই চিকিৎসা সেবা দিতে দেখা গিয়েছে।
এপ্যোলো হাসপাতাল, সেন্টাল হাসপাতাল ও এভার গ্রীন বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের গায়ে নেই অ্যাপ্রোন। জরুরি বিভাগে একজন করে চিকিৎসক দিয়েই পরিচালিত হচ্ছে হাসপাতাল গুলো।
জামালপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল গুলোর অনেক খরচ, পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি গুলোর অনেক দাম, স্টাফ ও টেকনিশিয়ানদের অনেক বেতন দিতে হয়। তাই বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে সরকারি হাসপাতালের তুলনায় খরচ একটু বেশি।
জামালপুরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. ফজলুল হক জানান, বেসরকারি হাসপাতালের পরীক্ষা নিরীক্ষার মূল্য ঠিক করে তাদের মালিক সমিতি। আমরা ইতিমধ্যে আশেপাশের জেলার সাথে পরীক্ষা নিরীক্ষার ফির সামনজস্য রেখে একটা চিঠি আমরা ডিসি অফিসে জমা দিয়েছি। অন্যদিকে প্রাইভেট হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো নবায়নের জন্য হাসপাতালগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যথা সময়ে নবায়ন না করলে পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।