০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আবু সাঈদ হত্যার বিবরণ

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • সময় ০৫:১৭:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 50

জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত আবু সাঈদ

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের হত্যার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় গত সেপ্টেম্বর মাসে একটি অনুসন্ধানী দল পাঠায়। এই দলে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ, ফরেনসিক চিকিৎসক এবং অস্ত্র বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যারা আন্দোলনে সংঘটিত প্রাণঘাতী ঘটনাগুলো সম্পর্কে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সূত্রের সাক্ষ্য অনুসারে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিক্ষোভ দমন করতে একাধিক অভিযানের নির্দেশ দেন ও তদারকি করেন। এসব অভিযানে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা করে, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন চালায়।

তদন্তে উঠে এসেছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে এবং বেআইনিভাবে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বা পঙ্গু করার কাজে জড়িত ছিল। এমনকি কিছু ঘটনায় বিন্দু-শূন্য দূরত্ব থেকে গুলি চালানো হয়েছিল।

আবু সাঈদের হত্যার ঘটনা বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের সময় তিনি পুলিশের দিকে দুই বাহু প্রসারিত করে চিৎকার করে বলেন, “আমাকে গুলি করুন।” এই দৃশ্য ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্রে ধারণ করা হয়। ভূ-অবস্থান প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারীরা হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ চিত্র পুনর্গঠন করেন।

ফরেনসিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আবু সাঈদ প্রায় ১৪ মিটার দূরত্ব থেকে ধাতব গুলিবোঝাই শটগানের গুলিতে অন্তত দুবার বিদ্ধ হন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আবু সাঈদ পুলিশের ইচ্ছাকৃত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

শেয়ার করুন

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আবু সাঈদ হত্যার বিবরণ

সময় ০৫:১৭:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের হত্যার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় গত সেপ্টেম্বর মাসে একটি অনুসন্ধানী দল পাঠায়। এই দলে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ, ফরেনসিক চিকিৎসক এবং অস্ত্র বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যারা আন্দোলনে সংঘটিত প্রাণঘাতী ঘটনাগুলো সম্পর্কে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সূত্রের সাক্ষ্য অনুসারে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিক্ষোভ দমন করতে একাধিক অভিযানের নির্দেশ দেন ও তদারকি করেন। এসব অভিযানে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা করে, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন চালায়।

তদন্তে উঠে এসেছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে এবং বেআইনিভাবে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বা পঙ্গু করার কাজে জড়িত ছিল। এমনকি কিছু ঘটনায় বিন্দু-শূন্য দূরত্ব থেকে গুলি চালানো হয়েছিল।

আবু সাঈদের হত্যার ঘটনা বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের সময় তিনি পুলিশের দিকে দুই বাহু প্রসারিত করে চিৎকার করে বলেন, “আমাকে গুলি করুন।” এই দৃশ্য ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্রে ধারণ করা হয়। ভূ-অবস্থান প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারীরা হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ চিত্র পুনর্গঠন করেন।

ফরেনসিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আবু সাঈদ প্রায় ১৪ মিটার দূরত্ব থেকে ধাতব গুলিবোঝাই শটগানের গুলিতে অন্তত দুবার বিদ্ধ হন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আবু সাঈদ পুলিশের ইচ্ছাকৃত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।