ঢাকা ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনপ্রশাসন একাডেমির ৭০০ একর বনভূমির লিজ বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ১১:৩৯:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
  • / 46

কক্সবাজার বন

কক্সবাজারে জনপ্রশাসন একাডেমি স্থাপনের জন্য ৭০০ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল করেছে সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন স্থাপনের জন্য এই জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বনভূমির এ বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত ১০ নভেম্বর প্রেরিত পত্রের মাধ্যমে উল্লিখিত বিষয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণপূর্বক ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বরাদ্দ বাতিল করে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন
বরাদ্দ বাতিল করে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্তকৃত কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলার ঝিলংজা মৌজার বিএস ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত বিএস ২৫০০১ নম্বর দাগের ‘পাহাড়’ শ্রেণির ৪০০ একর ও বিএস ২৫০১০ নম্বর দাগের ‘ছড়া’ শ্রেণির ৩০০ একর মোট ৭০০ একর জমি রক্ষিত বনের গেজেটভুক্ত হওয়ায় উক্ত বন্দোবস্ত এতদ্বারা নির্দেশক্রমে বাতিল করা হয়েছে।

২৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখে এবিষয়ে আধা-সরকারি পত্র প্রেরণ করে পরিবেশ উপদেষ্টা। উপদেষ্টার পাঠানো আধাসরকারী পত্রে বলা হয়েছে, বন্দোবস্তকৃত এলাকা ১৯৩৫ সাল থেকে বন আইন ১৯২৭-এর ২৯ ধারার আওতায় রক্ষিত বন হিসেবে ঘোষিত।

এই ২১৪৫.০২ একর ভূমির অংশে গর্জন, চাপালিশ, তেলসুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা এবং হাতি, বানর, বন্য শুকরসহ বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থল রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ সালে এই বনভূমিতে বনায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। রেকর্ডে ‘রক্ষিত বন’ উল্লেখ না থাকায় বন বিভাগ এ বিষয়ে মামলা করে।

পাশাপাশি, ভূমির বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে একটি রিট মামলাও হাইকোর্টে দায়ের করা হয়। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ এ বন্দোবন্তের বিষয়ে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন যা আপীল বিভাগে বহাল রয়েছে। ১৯৯৯ সালে ঝিলংজা ইউনিয়নকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে বনভূমির গাছ কাটাসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন নিষিদ্ধ করা হয়।

৭০০ একর রক্ষিত বনও এই সংকটাপন্ন এলাকার অন্তর্ভুক্ত। সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ এবং জাতিসংঘ জীববৈচিত্র্য সনদে বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার রয়েছে। দেশের বনভূমির পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় এই বন্দোবস্ত জনস্বার্থ বিরোধী।

শেয়ার করুন

জনপ্রশাসন একাডেমির ৭০০ একর বনভূমির লিজ বাতিল

সময় ১১:৩৯:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে জনপ্রশাসন একাডেমি স্থাপনের জন্য ৭০০ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল করেছে সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন স্থাপনের জন্য এই জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বনভূমির এ বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত ১০ নভেম্বর প্রেরিত পত্রের মাধ্যমে উল্লিখিত বিষয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণপূর্বক ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বরাদ্দ বাতিল করে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন
বরাদ্দ বাতিল করে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্তকৃত কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলার ঝিলংজা মৌজার বিএস ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত বিএস ২৫০০১ নম্বর দাগের ‘পাহাড়’ শ্রেণির ৪০০ একর ও বিএস ২৫০১০ নম্বর দাগের ‘ছড়া’ শ্রেণির ৩০০ একর মোট ৭০০ একর জমি রক্ষিত বনের গেজেটভুক্ত হওয়ায় উক্ত বন্দোবস্ত এতদ্বারা নির্দেশক্রমে বাতিল করা হয়েছে।

২৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখে এবিষয়ে আধা-সরকারি পত্র প্রেরণ করে পরিবেশ উপদেষ্টা। উপদেষ্টার পাঠানো আধাসরকারী পত্রে বলা হয়েছে, বন্দোবস্তকৃত এলাকা ১৯৩৫ সাল থেকে বন আইন ১৯২৭-এর ২৯ ধারার আওতায় রক্ষিত বন হিসেবে ঘোষিত।

এই ২১৪৫.০২ একর ভূমির অংশে গর্জন, চাপালিশ, তেলসুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা এবং হাতি, বানর, বন্য শুকরসহ বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থল রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ সালে এই বনভূমিতে বনায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। রেকর্ডে ‘রক্ষিত বন’ উল্লেখ না থাকায় বন বিভাগ এ বিষয়ে মামলা করে।

পাশাপাশি, ভূমির বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে একটি রিট মামলাও হাইকোর্টে দায়ের করা হয়। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ এ বন্দোবন্তের বিষয়ে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন যা আপীল বিভাগে বহাল রয়েছে। ১৯৯৯ সালে ঝিলংজা ইউনিয়নকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে বনভূমির গাছ কাটাসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন নিষিদ্ধ করা হয়।

৭০০ একর রক্ষিত বনও এই সংকটাপন্ন এলাকার অন্তর্ভুক্ত। সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ এবং জাতিসংঘ জীববৈচিত্র্য সনদে বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার রয়েছে। দেশের বনভূমির পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় এই বন্দোবস্ত জনস্বার্থ বিরোধী।