চুল ও ত্বকের যত্নে কুমড়ার বীজ
- সময় ১১:০১:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
- / 267
কুমড়া, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বহুল ব্যবহৃত একটি সবজি। এর বীজ থেকে যে তেল পাওয়া যায় তা শুধুমাত্র রান্নার জন্যই নয়, ত্বক এবং চুলের যত্নেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কুমড়া বীজের তেল সমৃদ্ধ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন ঊ যা ত্বক এবং চুলের জন্য আশ্চর্যজনক উপকার নিয়ে আসে।
কুমড়া বীজের তেল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বককে মসৃণ করে তোলে। এতে থাকা ভিটামিন ত্বকের বয়সের লক্ষণ কমাতে সহায়তা করে, যেমন বলিরেখা ও ফাইন লাইন। ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে কুমড়া বীজের তেল অনন্য।
২০১৯ সালে ‘ইউএস ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত ইরানের ইস্ফাহান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্স’য়ের করা গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, স্যাচ্যুরেটেড ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ কুমড়ার বীজের তেল ব্যবহার চুলের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
কুমড়ার বীজে ভিটামিন এ, বি এবং সি-সহ নানান রকম পুষ্টি উপাদান যেমন- ম্যাগ্নেসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও দস্তা সমৃদ্ধ। কুমড়া বীজের তেলে থাকা ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড চুলকে স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল রাখে। এছাড়া খুশকির সমস্যা দূর করতে এই তেল অত্যন্ত কার্যকর।
কুমড়ার বীজে থাকা ফাইটো কেমিকেল যৌগ চুল পড়া সৃষ্টিকারী হরমোন ‘ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন’ বা ডিএইচটি’য়ের উৎপাদন হ্রাস করে। ফলে চুল পড়ার প্রবণতা কমে আর চুলের ফলিকল নিরাপদ থাকে।
কুমড়া বীজের তেল ব্যবহারের পদ্ধতিও সহজ। ত্বকে সরাসরি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা যায়, বা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে মিশিয়ে ফেস মাস্ক বানানো যেতে পারে। চুলের জন্য স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করতে পারেন বা হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
জিংক কুমড়ার বীজে পাওয়া যায়। এই প্রয়োজনীয় খনিজ চুলের বৃদ্ধিতে ও ক্ষয়পূরণে সহায়তা করে। এটা হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে, কোষ বিভাজন ও প্রোটিন সংশ্লেষে সহায়তা করে। এই প্রক্রিয়া চুলের নতুন ফলিকল গঠন করে।
এছাড়াও এই বীজে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা এটি গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কুমড়োর বীজের ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।
এই বীজের ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগিসারাইডও কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। এই বীজ প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় ক্ষুধা নিবারণ করার পাশাপাশি খাওয়ার প্রবৃত্তি কমায়। ওজন কমাতে চাইলে খাদ্যতালিকায় এটিও হতে পারে অন্যতম উপাদান।
এই বীজে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকায় এটি বোন ডেনসিটি বৃদ্ধি করে হাড়কেও মজবুত করে। যা প্রাচীনকাল থেকেই আয়ূবেদিক চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে।