চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তৌহিদ হোসেনের বৈঠক
- সময় ১২:২৪:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
- / 17
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর বৈঠক হয়েছে। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় বেইজিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়। অর্থনীতি, বাণিজ্যসহ নানা ইস্যুতে নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেন তাঁরা।
আলোচনায় গুরুত্ব পায় ঋণ সহায়তার ক্ষেত্রে ছাড়সহ স্বাস্থ্য ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা।
চীনের সঙ্গে সম্পর্কের মাত্রা আরো জোরদার করতে সফরে গেলেন অন্তর্বতী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের আমন্ত্রণে দেশটিতে সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রথম দ্বিপক্ষীয় রাষ্ট্রীয় সফরে চীনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সেখানে গুরুত্ব পাবে বেশ কয়েকটি ইস্যু।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এই রাষ্ট্রীয় সফরে ঋণের সুদ হার কমানো, পানিবিদ্যুৎ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়, চিকিৎসা সহযোগিতার অগ্রগতি এবং মিয়ানমার পরিস্থিতি সমাধানে চীনের ভূমিকা বাড়ানোকে উৎসাহিত করা প্রভৃতি বিষয় গুরুত্ব পাবে।
গত আগস্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এই সফরকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর’ হিসেবে মনে করছেন বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ঢাকার করা আগের অনুরোধে সাড়া দিয়ে পানিবিদ্যুৎ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ে একটি বাস্তবায়ন পরিকল্পনা সই করতে প্রস্তুত বেইজিং।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তিস্তা নদী প্রকল্পে চীনের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়েও এই সফরে আলোচনা করা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরের ক্ষেত্রে চীনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি আগের সরকারগুলোর সঙ্গে একটি দৃশ্যমান পরিবর্তনের স্বাক্ষর। পূর্ববর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সাধারণত ভৌগলিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় তাদের প্রথম সফরকারী দেশ হিসেবে ভারতকেই বেছে নিতেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার বাইরেও উপদেষ্টা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং চায়না ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ও সাংহাই ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে বক্তৃতা দেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, এছাড়াও বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে তিনি সাংহাইয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি চীনের শ্রদ্ধার কথা পুনর্ব্যক্ত করে দেশের স্থিতিশীলতা, সংস্কার, গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
এর আগে সোমবার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিন দিনের সফর শেষে আগামী শুক্রবার তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।