চিন্ময় কৃষ্ণ নয়, টার্গেট মমতা ব্যনার্জি!
- সময় ১০:৫৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
- / 103
৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ইস্যুতে এতটা উত্তাল হতে হয়নি পশ্চিমবঙ্গ। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের ইন্ধনে সাধারণ লোকজনের ব্যানারে আন্দোলন হলেও এবার সুদে আসলে তা ফিরিয়ে দিতে প্রস্তুত রাজ্য বিজেপি। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে বিজেপি যতটা না সক্রিয়, তার চেয়ে বেশি সক্রিয় কিভাবে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা যায়। পরবর্তী নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জিকে ঘায়েল করতেই মাঠে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন বিশেষ করে ইসকন থেকে বহিষ্কৃত ও বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের একজন মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারীর গ্রেফতার নিয়ে তিনি হুংকার দিয়েছেন বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, শুভেন্দুর এই হুংকারের পিছনে মূল রাজনীতি হচ্ছে, মমতা ব্যানার্জিকে চাপে রাখা। কারণ বাংলাদেশ থেকে যারাই পশ্চিমবঙ্গে নানা সময়ে গিয়ে ভোটার হয়েছেন, তাদের অধিকাংশ লোকই মমতা ব্যানার্জিকে ভোট দেয়। এবার সেই ভোটব্যাংকে হানা দিতেই শুভেন্দু নতুন পরিকল্পনায় নেমেছেন। যদিও বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে এতদিন রাজ্য বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী তেমন সরব না হলেও, এবার তিনি মাঠে নেমেছেন। সেখানে বাংলাদেশি হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা যতটা না মূখ্য, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূলকে চাপে রাখা। বিশেষ করে ভোটের মাঠে মমতা ব্যানার্জির দলকে হারাতে কৌশল হিসাবে নেয়া হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ইস্যুটি।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের ছ’টি আসনে বিধানসভার উপনির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে। ছ’টি আসনেই জিতেছে তৃণমূল। উপনির্বাচনে এই ৬-০ ফলাফল নিয়ে এক দিকে যখন শাসকদলের নেতারা বিজেপিকে কটাক্ষ করছেন, তখনই শুভেন্দু অধিকারী মাঠে নেমেছেন চিন্ময় কৃষ্ণ ট্রাম্মকার্ড নিয়ে। ইতিম্যেধই তিনি কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশন অফিসে প্রতিবাদ করেছেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়েছেন।
ভোটের লড়াইয়ে বারবার তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে হেরে বিজেপির শেষ ভরসা এখন শুভেন্দু অধিকারী। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে রাজ্য বিজেপির মূখ্য নেতা হওয়ার সুযোগ এসেছে। এটিকে কাজে লাগাতে তিনি মহাব্যস্ত। ফলে নিয়মিত হুংকার দিচ্ছেন বাংলাদেশর অন্তর্বতীকালীন ড. ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টিকে সামনে রেখে। মমতা ব্যানার্জি এখনো বাংলাদেশের চলমান বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তার দলের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছেন। শুভেন্দু অধিকারীর পরবর্তী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের তরুণ তুর্কি অভিষেক। তাই মমতা ব্যানার্জিও এখনই শুভেন্দুর কথার জবাব না দিয়ে চুপ রয়েছেন বাংলাদেশের চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ইস্যুতে। অভিষেক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে দিল্লিতে গণমাধ্যমকে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকার যা অবস্থান নেবে, তাকেই সমর্থন করবে তৃণমূল। সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার এবং চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লিও। সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত করতে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতেও। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বুধবার বাংলাদেশের উপদূতাবাসে এই সংক্রান্ত স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিতে অভিষেক এখন দিল্লিতে। অধিবেশন শেষে বাংলাদেশ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, ‘এটা বিদেশের ব্যাপার। এটা নিয়ে আমরা কোনও মন্তব্য করব না। তবে তৃণমূলের অবস্থান এ বিষয়ে খুব স্পষ্ট। বিদেশে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে ভারত সরকার যে অবস্থান নেবে, তৃণমূল তাকে সমর্থন করবে। বাংলাদেশে যা হয়েছে, তা দুর্ভাগ্যজনক।’
এদিকে, বাংলাদেশের সাম্প্রাতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা উত্তাল হয়ে উঠেছে। দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সেটির জবাব দিয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার অফিস ঘেরাও করে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য বিজেপির নেতা এবং বিরোধী দলের নেতা শুভেন্ধু অধিকারী। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, এনাফ ইজ এনাফ।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরনের ভিসা বন্ধ করার চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। বাংলাদেশের সনাতন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে কলকাতায় আগুন জ্বালানোর হুমকির পাশাপাশি প্রয়োজনে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরনের ভিসা বন্ধ করার চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশন ঘেরাও অভিযান শেষে এমন ঘোষণা দেন বিজেপি নেতা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর আগের দিনও ইসকনের হিন্দু নেতা (বহিষ্কৃত) অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেপ্তার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিজেপির ওই নেতা। তিনি বলেন এই খবর পেয়ে আমরা বিচলিত এবং চিন্তিত।
বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতন জাগরণী জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে স্মারকলিপি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের বিধায়কদের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার বিকেলে মিশনে আসেন। শুভেন্দু ছাড়াও প্রতিনিধি দলে ছিলেন ড. শঙ্কর ঘোষ, শিখা চ্যাটার্জি, দীপক বর্মন, বুধরাই টুডু, অশোক কীর্তনীয়া, সুব্রত ঠাকুর, নিখিল রঞ্জন দে।
বিজেপির প্রতিনিধি দলটি দেখা করেন দূতাবাস প্রধান সিকদার মোহাম্মদ আশরাফুর রহমানের সঙ্গে। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মিশনের কাউন্সেলর (কনস্যুলার) এএসএম আলমাস হোসেন, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) তুসিতা চাকমা প্রমুখ। প্রতিনিধি দলের বিভিন্ন বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে শোনেন মিশনের কর্মকর্তারা।
মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে গণমাধ্যমের সামনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে বাংলাদেশের বহু মানুষের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এর আগে মুজিবুর রহমানের সরকার দেখেছি, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সরকার দেখেছি, কিন্তু এরকম ভারতবিদ্বেষী মনোভাব বা হিন্দু প্রচারকদের মিথ্যে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো- এই জিনিস আমরা বিগত দিনে দেখিনি। বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে যারা মন্ত্রী পদমর্যাদায় উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের নাবালক হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ’
তার হুঁশিয়ারি ‘এনাফ ইজ এনাফ। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই বা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রবাদী বৈষ্ণব ধর্মালম্বী প্রচারক। বাংলাদেশের পতাকা কাঁধে নিয়ে তিনি সেদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে স্লোগান তুলেছিলেন। তাই তাকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনাই পরিষ্কার যে সেখানে সম্পূর্ণভাবে মৌলবাদী পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।’
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস’কে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি তুলে শুভেন্দু বলেন, ‘রোববারের মধ্যে চিন্ময় দাস’কে মুক্তি দেয়া না হলে, আগামী সোমবার থেকে ভারত-বাংলাদেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোল সীমান্তে অবরোধ শুরু করবে বিজেপি। ওইদিন সকাল ১০ টা থেকে পেট্রাপোল স্থলবন্দরে ভারত থেকে বাংলাদেশগামী সমস্ত পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ করা হবে। আমি নিজে তার নেতৃত্ব দেব। যদিও সেক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে যাত্রীবাহী বাসকে।’
পাশাপাশি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভিসা বন্ধের দাবি তুলে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আগামী দিনে কলকাতার সেক্টর ফাইভে বাংলাদেশের ভিসা সেন্টার গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হবে। পাশাপাশি এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট পারমিট দেয়া বন্ধ করা উচিত।’
এদিকে কর্মসূচিতে যোগ দেয়া বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে সনাতনদের ওপর আক্রমণ চলছে তার জন্য প্রয়োজনে কলকাতায় আগুন জ্বালানো হবে। বিজেপি প্রতিনিধি দলের এই কর্মসূচিকে ঘিরে যাতে কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আটোসাটো করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তবে দিল্লিতে অভিষেক বন্দোপাধায়ের মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই। গত অগস্টে বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের সময়েও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র এ বিষয়ে যা বলবে, রাজ্য তা-ই করবে। অভিষেকও বুধবার সেই অবস্থানই স্পষ্ট করেছেন।
তবে চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি নিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি যেমন দিন দিন উত্তপ্ত হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গেও তার আঁচ এসে লাগছে। বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবাদ আন্দোলন চালাচ্ছে বিজেপি। আগামী দিনেও এই আন্দোলন আরো গতিশীল হতে পারে বলে মনে করেন অনেকে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ জোড়া অশান্তির আবহে বেশ কিছু ধর্মীয় সংগঠন মিলে তৈরি করে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। মঞ্চের মুখপাত্র নির্বাচিত হয়েছিলেন চিন্ময়। তিনি ইসকনের সাবেক পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষও বটে। তাঁর ডাকে চট্টগ্রামে সংখ্যালঘুদের একটি সমাবেশ হয়েছিল। তার পরেই চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করা হয়। বিএনপি নেতার করা সেই মামলাতেই গত সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে চিন্ময়কৃষ্ণকে। তাঁর জামিনের আবেদনও খারিজ করা হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশের হাই কোর্টে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে মামলার শুনানি হয়। চিন্ময়কৃষ্ণের দ্রুত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হয়েছে। মঙ্গলবার এক আইনজীবীর মৃত্যুও হয়েছে। ক্রমশ উত্তাল হচ্ছে প্রতিবেশি রাজ্যের পরিস্থিতি। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরাও বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন। বুধবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে।