ঢাকা ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার ১০ আসামি বিস্ফোরক মামলাতেও গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
  • সময় ১২:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 18

আইনজীবী সাইফুল

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে বিস্ফোরক আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম কাজী শরীফুল ইসলাম বুধবার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

মহানগর আদালতের পিপি মফিজুল হক ভুঁইয়া বলেন, “আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার ১০ আসামিকে কোতায়ালি থানার আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিল পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছে।”

নিহত আইনজীবী আলিফের ভাই খানে আলম গত ৩০ নভেম্বর ১১৬ জনের নামে বিস্ফোরক আইনের এ মামলা দায়ের করেন।

আসামিরা হলেন- চন্দন দাস, আমান দাশ, রুমিত দাশ, নয়ন দাশ, গগন দাশ, বিশাল দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য, দুলর্ভ দাশ, সুমিত দাশ ও সনু মেথর।

আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে বিস্ফোরক আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার
আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে বিস্ফোরক আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পিপি মো. রায়হাদুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলা এবং ২৬ নভেম্বর পুলিশের ওপর হামলার অন্য দুটি মামলাতেও ওই দশজনকে আগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এদিন সকালে কড়া পুলিশ প্রহরায় আসামিদের আদালত প্রাঙ্গণে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় এক আসামি উচ্চঃস্বরে বলেন, “আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ন্যায় বিচারের প্রার্থনা করছি, ন্যায় বিচার। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।”

গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। এরপর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন।

পুলিশ পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাসকে কারাগারে নিয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা তখন আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে।

এক পর্যায়ে আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।

ওই ঘটনায় ২৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়।

আইনজীবীদের ওপর হামলা, বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন আলিফের ভাই খানে আলম।

এর বাইরে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাংচুর ও পুলিশের কাজে বাধার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। ওই তিন মামলায় মোট ৭৬ জনের নামসহ অজ্ঞাত ১ হাজার ৪০০ জনকে আসামি করা হয়।

আদালত এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় সবশেষ ৩ ডিসেম্বর মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ২৯ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন।

আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত আসামি চন্দন দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য ও রিপন দাশ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শেয়ার করুন

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার ১০ আসামি বিস্ফোরক মামলাতেও গ্রেপ্তার

সময় ১২:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে বিস্ফোরক আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম কাজী শরীফুল ইসলাম বুধবার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

মহানগর আদালতের পিপি মফিজুল হক ভুঁইয়া বলেন, “আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার ১০ আসামিকে কোতায়ালি থানার আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিল পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছে।”

নিহত আইনজীবী আলিফের ভাই খানে আলম গত ৩০ নভেম্বর ১১৬ জনের নামে বিস্ফোরক আইনের এ মামলা দায়ের করেন।

আসামিরা হলেন- চন্দন দাস, আমান দাশ, রুমিত দাশ, নয়ন দাশ, গগন দাশ, বিশাল দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য, দুলর্ভ দাশ, সুমিত দাশ ও সনু মেথর।

আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে বিস্ফোরক আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার
আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে বিস্ফোরক আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পিপি মো. রায়হাদুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলা এবং ২৬ নভেম্বর পুলিশের ওপর হামলার অন্য দুটি মামলাতেও ওই দশজনকে আগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এদিন সকালে কড়া পুলিশ প্রহরায় আসামিদের আদালত প্রাঙ্গণে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় এক আসামি উচ্চঃস্বরে বলেন, “আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ন্যায় বিচারের প্রার্থনা করছি, ন্যায় বিচার। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।”

গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। এরপর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন।

পুলিশ পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাসকে কারাগারে নিয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা তখন আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে।

এক পর্যায়ে আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।

ওই ঘটনায় ২৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়।

আইনজীবীদের ওপর হামলা, বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন আলিফের ভাই খানে আলম।

এর বাইরে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাংচুর ও পুলিশের কাজে বাধার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। ওই তিন মামলায় মোট ৭৬ জনের নামসহ অজ্ঞাত ১ হাজার ৪০০ জনকে আসামি করা হয়।

আদালত এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় সবশেষ ৩ ডিসেম্বর মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ২৯ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন।

আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত আসামি চন্দন দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য ও রিপন দাশ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।