গাজার ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ বন্ধ করেছে ইসরায়েল | Bangla Affairs
০১:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজার ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ বন্ধ করেছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • সময় ১২:৫০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / 31

গাজার ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ বন্ধ করেছে ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের গাজার ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। গাজার কর্মকর্তারা আনাদোলু এজেন্সি ও আলজাজিরাকে এ অভিযোগ করেছেন।

বুধবার (৯ এপ্রিল) আলজাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিচ্ছে। যার ফলে ফিলিস্তিনি উপত্যকায় মোট পানি সরবরাহের ৭০ শতাংশ কার্যকরভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

ইসরায়েলি কোম্পানি মেকোরোট গাজায় সিংহভাগ পানি সরবরাহ করে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থার মধ্যস্থতায় কোম্পানিটি খাবার পানি সরবরাহ করে আসছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মেকোরোটে পাইপলাইনে হস্তক্ষেপ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজা পৌরসভার মুখপাত্র হোসনি মেহান্না বলেন, সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে পূর্ব গাজা শহরের শুজাইয়া পাড়ায় অবস্থিত মূল পাইপলাইনে পানি নেই। ফলে সেখান থেকে সাব-সরবরাহ চ্যানেল অকেজো। কোথাও সামান্য সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। সেখান থেকে পানি সংগ্রহে মরিয়া গাজাবাসী। ফলে পুরো পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মেহান্না বলেন, শুজাইয়া পাড়ায় বৃহস্পতিবার থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সামরিক আক্রমণ চালাচ্ছে। পানি সরবরাহ বিঘ্নের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত করছি। এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভারী বোমাবর্ষণের কারণে পাইপলাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না তা আগে যাচাই করছি।

তিনি আরও বলেন, এই স্থগিতাদেশ সরাসরি সামরিক কার্যকলাপের কারণে হতে পারে অথবা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে হতে পারে।

মেহান্নার মতে, কারণ যাই হোক না কেন, এর পরিণতি ভয়াবহ। যদি মেকোরোট থেকে পানি প্রবাহ শিগগিরই পুনরুদ্ধার না করা হয়, তাহলে গাজা একটি পূর্ণাঙ্গ পানি সংকটের মুখোমুখি হবে।

বছরের পর বছর ধরে অবরোধ, অবকাঠামোগত ধস এবং ভূগর্ভস্থ পানি দূষণের কারণে গাজা উপত্যকা ইতোমধ্যেই বিশুদ্ধ পানির দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতিতে ভুগছে। মানবিক পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত থাকায় এখন ব্যাপক পানিশূন্যতার ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলা গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫০,৮১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১৫,৬৮৮ জন আহত হয়েছে। অপরদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের হিসাবে নিহতের সংখ্যাটি ৬১,৭০০ জনেরও বেশি। তাদের দাবি হলো- ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষকে মৃত বলে ধরে নিয়ে ওই তালিকা করা হয়েছে। তাদের মরদেহ উদ্ধার সম্ভব না হওয়ায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা জানা সম্ভব নয়।

শেয়ার করুন

গাজার ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ বন্ধ করেছে ইসরায়েল

সময় ১২:৫০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজার ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। গাজার কর্মকর্তারা আনাদোলু এজেন্সি ও আলজাজিরাকে এ অভিযোগ করেছেন।

বুধবার (৯ এপ্রিল) আলজাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিচ্ছে। যার ফলে ফিলিস্তিনি উপত্যকায় মোট পানি সরবরাহের ৭০ শতাংশ কার্যকরভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

ইসরায়েলি কোম্পানি মেকোরোট গাজায় সিংহভাগ পানি সরবরাহ করে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থার মধ্যস্থতায় কোম্পানিটি খাবার পানি সরবরাহ করে আসছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মেকোরোটে পাইপলাইনে হস্তক্ষেপ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজা পৌরসভার মুখপাত্র হোসনি মেহান্না বলেন, সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে পূর্ব গাজা শহরের শুজাইয়া পাড়ায় অবস্থিত মূল পাইপলাইনে পানি নেই। ফলে সেখান থেকে সাব-সরবরাহ চ্যানেল অকেজো। কোথাও সামান্য সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। সেখান থেকে পানি সংগ্রহে মরিয়া গাজাবাসী। ফলে পুরো পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মেহান্না বলেন, শুজাইয়া পাড়ায় বৃহস্পতিবার থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সামরিক আক্রমণ চালাচ্ছে। পানি সরবরাহ বিঘ্নের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত করছি। এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভারী বোমাবর্ষণের কারণে পাইপলাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না তা আগে যাচাই করছি।

তিনি আরও বলেন, এই স্থগিতাদেশ সরাসরি সামরিক কার্যকলাপের কারণে হতে পারে অথবা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে হতে পারে।

মেহান্নার মতে, কারণ যাই হোক না কেন, এর পরিণতি ভয়াবহ। যদি মেকোরোট থেকে পানি প্রবাহ শিগগিরই পুনরুদ্ধার না করা হয়, তাহলে গাজা একটি পূর্ণাঙ্গ পানি সংকটের মুখোমুখি হবে।

বছরের পর বছর ধরে অবরোধ, অবকাঠামোগত ধস এবং ভূগর্ভস্থ পানি দূষণের কারণে গাজা উপত্যকা ইতোমধ্যেই বিশুদ্ধ পানির দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতিতে ভুগছে। মানবিক পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত থাকায় এখন ব্যাপক পানিশূন্যতার ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলা গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫০,৮১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১৫,৬৮৮ জন আহত হয়েছে। অপরদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের হিসাবে নিহতের সংখ্যাটি ৬১,৭০০ জনেরও বেশি। তাদের দাবি হলো- ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষকে মৃত বলে ধরে নিয়ে ওই তালিকা করা হয়েছে। তাদের মরদেহ উদ্ধার সম্ভব না হওয়ায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা জানা সম্ভব নয়।