ক্ষুব্ধ হিজবুল্লাহ: নওয়াফ সালাম লেবাননের প্রধানমন্ত্রী
- সময় ০৩:২০:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
- / 16
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের প্রধান নওয়াফ সালামকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করা জন্য তলব করেছেন।
সোমবার লেবাননের পার্লামেন্টের ১২৮ জন আইনপ্রণেতার মধ্যে ৮৪ জন সালামকে প্রধানমন্ত্রী করার পক্ষে সমর্থন জানান।
রয়টার্স লিখেছে, এটি লেবাননের প্রভাবশালী শিয়া রাজনৈতিক সংগঠন হিজবুল্লাহর জন্য একটি বড় ধাক্কা। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া থেকে তাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ হিজবুল্লাহর। সালামকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া লেবাননের সাম্প্রদায়িক উপদলগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইরান সমর্থিত শিয়া মুসলিম গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং প্রতিবেশী সিরিয়ায় তাদের মিত্র বাশার আল আসাদের পতনে লেবাননের রাজনৈতিক আবহে তার প্রভাব পড়েছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, সালাম পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতার সমর্থন নিশ্চিত করার পর প্রেসিডেন্ট আউন তাকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য তলব করেছেন।
সালাম লেবাননের বাইরে আছেন। মঙ্গলবার তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তিনি লেবাননের পার্লামেন্টের খ্রিস্টান ও দ্রুজ উপদল এবং বিশিষ্ট সুন্নি মুসলিম এমপিদের সমর্থন পেয়েছেন। এসব সুন্নি মুসলিম এমপিদের মধ্যে হিজবুল্লাহর মিত্র ও বিরোধীরাও আছেন।
কিন্তু পার্লামেন্টে শিয়াদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলোর হিজবুল্লাহ ও তাদের শিয়া মিত্র দল আমল মুভমেন্টের এমপিরা সালামের বিপরীতে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কারও নাম প্রস্তাব করেনি বা সালামের পক্ষেও সমর্থন দেয়নি। এতে তারা আপাতত সালামের সরকারে যোগ দিতে চায় না বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
পার্লামেন্টের শিয়া ব্লক যদি লেবাননের মন্ত্রিসভার বাইরে রয়ে যায় তাহলে একটি সাম্প্রদায়িক বিভেদের সম্ভাবনা বাড়তে থাকবে। হিজবুল্লাহ চায়, দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি তার পদে থাকুক।
হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা মোহাম্মদ রাদ অভিযোগ করে বলেছেন, হিজবুল্লাহর বিরোধীরা কাজ করছে বর্জন ও বিভক্তকরণের জন্য। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহ জোসেফ আউনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার জন্য হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পর ওই হাতই কাটা পড়ল। যাই হোক, সহাবস্থানের সঙ্গে মতভেদকারী কোনো সরকারের কোনো বৈধতা নেই।
গত সপ্তাহে হওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লেবাননের সেনাবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল আউন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এই পদে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের সমর্থন পেয়েছেন। এতে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, কয়েক বছর আগে যে দেশটিতে ইরান ও হিজবুল্লাহ প্রভাব বিস্তার করেছিল সেখানে এখন সৌদি আরবের প্রভাব পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে লেবাননের কোনো রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন না এবং পূর্ণ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মন্ত্রিসভাও ছিল না।