ঢাকা ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোকা কোলার অজানা অধ্যায়, কোকা কোলা আসলে কোন দেশী পণ্য

আকাশ ইসলাম
  • সময় ০৮:১৪:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪
  • / 259

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে বিশ্ব জুড়ে কোমলপানীয় ব্র্যান্ড কোকা কোলা বয়কটের ডাক দিয়েছিল বিভিন্ন দেশের মুসলিম নাগরিকরা। সঙ্গে তাল মিলিয়েছে বাংলাদেশের মুসলিম ধর্মপ্রাণরাও।

এবার কোকা কোলা নিজেই একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করে সেই বয়কটের আগুনে ঘি ঢেলেছে। বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর বয়কটের ডাকে আবারও এখন সরব সোশ্যাল মিডিয়া। ‘যেই দোকানে থাকবে কোক সেই দোকান-ই বয়কট হোক’ এমন অভিনব স্লোগানে কোকা কোলা বয়কটের ডাক দিচ্ছেন নেটিজেনরা। বিজ্ঞাপনে অভিনয় করা শিল্পিদেরও বয়কটের ডাকও দিচ্ছেন তাঁরা।

প্রচার করা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে কোকা কোলা কোম্পানীর বিনিয়োগকারিদের বড় একটি অংশ ইসরাইলকে সমর্থণ জোগাচ্ছে। শুধু তাই না; কোকা কোলা থেকে অর্জিত মুনফার বড় একটি অংশ ফিলিস্তিনের নিরিহ জনগনের ওপর হামলায় খরচ করা হচ্ছে।

কোকা কোলার প্রচারিত বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, কোককে সবাই যে দেশের পণ্য মনে করছে, আসলে সেই দেশের পণ্য নয় কোকাকোলা। অর্থাৎ ইসরাইলের পণ্য নয় কোকা কোলা। ১৯০টি দেশের মানুষ কোক খায়। এমনকি ফিলিস্তিনে কোকা কোলার ফ্যাক্টরি রয়েছে।

কোকাকোলার এই বিজ্ঞাপনের প্রতিক্রিয়ায় অনেকে বলছেন, ধর্মীও অনুভূতি কাজে লাগাতে মিথ্যাচার করছে প্রতিষ্ঠানটি। ফিলিস্তিনে কোকা কোলা ফ্যাক্টরি করতে গিয়ে সেখানকার সাধারণ জনগনের জায়গা দখল করেছে কোম্পানিটি।

এছাড়া কোকাকোলা কোম্পানিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ থাকা তিন কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথওয়ে, ভ্যানগার্ড গ্রুপ, ব্ল্যাকরক প্রত্যক্ষভাবে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব এবং ফিলিস্তিনে গণহত্যাকে সমর্থন করছে বলে অভিযোগ তুলছেন কেউ কেউ।

১৩৮ বছর আগে ১৮৮৬ সালে কোকা-কোলার উৎপত্তি হয়েছিলো একটি ওষুধ হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের কলম্বাসে অবস্থিত ইগল ড্রাগ এন্ড ক্যামিক্যাল কোম্পানিতে এই ফমুর্ লা আবিস্কার করেন জন পেম্বারটন নামক একজন রসায়নবিদ। এর প্রকৃত নাম ছিলো কোকা ওয়াইন, যাকে বলা হতো ফ্রেঞ্চ ওয়াইন কোকা।

১৮৮৬ সালের ৮ মে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ি আসা গ্রিগস ক্যান্ডেলার এটি বাজারজাত করেন। এটি প্রথমে বিক্রি হয়েছিলো একটি পেটেন্টভুক্ত ওষুধ হিসেবে। প্রতি গ্লাস ৫ সেন্ট দামে।

পেম্বারটন দাবি করেছিলেন, কোকা-কোলা অনেক রোগের প্রতিকার করে। যেমন: মরফিন আসক্তি, বদহজম বা অজীর্ণ, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, মাথাব্যথা, ধ্বজভঙ্গ প্রভৃতি। বাজারজাতকরণের প্রথম বছরে কোকা-কোলা বিক্রয় হয়েছিল মাত্র নয় গ্লাস । বর্তমানে ২০০ টিরও বেশি দেশে প্রতিদিন প্রায় ১৬০ কোটি গ্লাস কোকা কোলা বিক্রি হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে তাদের প্রধান কারখানা। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪৪ সালের ২৭ মার্চ থেকে দ্য কোকা-কোলা কোম্পানির রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক রয়েছে। বাজারজাতকরণ কৌশলেই কারনে কোকা-কোলা বিশ্বের কোমল পানীয়র বাজারে একটি প্রভাবশালী ও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দী হিসেবে চিহ্নিত।

শেয়ার করুন

কোকা কোলার অজানা অধ্যায়, কোকা কোলা আসলে কোন দেশী পণ্য

সময় ০৮:১৪:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে বিশ্ব জুড়ে কোমলপানীয় ব্র্যান্ড কোকা কোলা বয়কটের ডাক দিয়েছিল বিভিন্ন দেশের মুসলিম নাগরিকরা। সঙ্গে তাল মিলিয়েছে বাংলাদেশের মুসলিম ধর্মপ্রাণরাও।

এবার কোকা কোলা নিজেই একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করে সেই বয়কটের আগুনে ঘি ঢেলেছে। বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর বয়কটের ডাকে আবারও এখন সরব সোশ্যাল মিডিয়া। ‘যেই দোকানে থাকবে কোক সেই দোকান-ই বয়কট হোক’ এমন অভিনব স্লোগানে কোকা কোলা বয়কটের ডাক দিচ্ছেন নেটিজেনরা। বিজ্ঞাপনে অভিনয় করা শিল্পিদেরও বয়কটের ডাকও দিচ্ছেন তাঁরা।

প্রচার করা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে কোকা কোলা কোম্পানীর বিনিয়োগকারিদের বড় একটি অংশ ইসরাইলকে সমর্থণ জোগাচ্ছে। শুধু তাই না; কোকা কোলা থেকে অর্জিত মুনফার বড় একটি অংশ ফিলিস্তিনের নিরিহ জনগনের ওপর হামলায় খরচ করা হচ্ছে।

কোকা কোলার প্রচারিত বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, কোককে সবাই যে দেশের পণ্য মনে করছে, আসলে সেই দেশের পণ্য নয় কোকাকোলা। অর্থাৎ ইসরাইলের পণ্য নয় কোকা কোলা। ১৯০টি দেশের মানুষ কোক খায়। এমনকি ফিলিস্তিনে কোকা কোলার ফ্যাক্টরি রয়েছে।

কোকাকোলার এই বিজ্ঞাপনের প্রতিক্রিয়ায় অনেকে বলছেন, ধর্মীও অনুভূতি কাজে লাগাতে মিথ্যাচার করছে প্রতিষ্ঠানটি। ফিলিস্তিনে কোকা কোলা ফ্যাক্টরি করতে গিয়ে সেখানকার সাধারণ জনগনের জায়গা দখল করেছে কোম্পানিটি।

এছাড়া কোকাকোলা কোম্পানিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ থাকা তিন কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথওয়ে, ভ্যানগার্ড গ্রুপ, ব্ল্যাকরক প্রত্যক্ষভাবে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব এবং ফিলিস্তিনে গণহত্যাকে সমর্থন করছে বলে অভিযোগ তুলছেন কেউ কেউ।

১৩৮ বছর আগে ১৮৮৬ সালে কোকা-কোলার উৎপত্তি হয়েছিলো একটি ওষুধ হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের কলম্বাসে অবস্থিত ইগল ড্রাগ এন্ড ক্যামিক্যাল কোম্পানিতে এই ফমুর্ লা আবিস্কার করেন জন পেম্বারটন নামক একজন রসায়নবিদ। এর প্রকৃত নাম ছিলো কোকা ওয়াইন, যাকে বলা হতো ফ্রেঞ্চ ওয়াইন কোকা।

১৮৮৬ সালের ৮ মে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ি আসা গ্রিগস ক্যান্ডেলার এটি বাজারজাত করেন। এটি প্রথমে বিক্রি হয়েছিলো একটি পেটেন্টভুক্ত ওষুধ হিসেবে। প্রতি গ্লাস ৫ সেন্ট দামে।

পেম্বারটন দাবি করেছিলেন, কোকা-কোলা অনেক রোগের প্রতিকার করে। যেমন: মরফিন আসক্তি, বদহজম বা অজীর্ণ, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, মাথাব্যথা, ধ্বজভঙ্গ প্রভৃতি। বাজারজাতকরণের প্রথম বছরে কোকা-কোলা বিক্রয় হয়েছিল মাত্র নয় গ্লাস । বর্তমানে ২০০ টিরও বেশি দেশে প্রতিদিন প্রায় ১৬০ কোটি গ্লাস কোকা কোলা বিক্রি হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে তাদের প্রধান কারখানা। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪৪ সালের ২৭ মার্চ থেকে দ্য কোকা-কোলা কোম্পানির রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক রয়েছে। বাজারজাতকরণ কৌশলেই কারনে কোকা-কোলা বিশ্বের কোমল পানীয়র বাজারে একটি প্রভাবশালী ও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দী হিসেবে চিহ্নিত।