ঢাকা ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে বেড়েছে নৌ ডাকাতি, প্রশাসনের তৎপরতা

এম জি রাব্বুল ইসলাম পাপ্পু, কুড়িগ্রাম
  • সময় ০১:২৮:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 45

কুড়িগ্রামে বেড়েছে নৌ ডাকাতি, প্রশাসনের তৎপরতা

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী-রাজিবপুর নৌপথে একের পর এক নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। নৌ ডাকাতির ঘটনায় জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীগুলো তৎপর ভূমিকায় রয়েছে।

গত দশ দিনে এই পথে দুটি বড় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি চিলমারী উপজেলার কড়াইবরিশাল খেয়াঘাটে সশস্ত্র ডাকাতরা দুটি যাত্রীবাহী নৌকায় হামলা করে, যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা লুট করে এবং গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার পরও ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

নৌকা মাঝি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ডাকাতরা তার নৌকাতেও হামলা চালায় এবং ৫৭ হাজার টাকা লুট করে। তিনি অভিযোগ করেন যে, সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা নির্বিকার ছিলেন এবং তাদের কোনও সহায়তা করেননি। কড়াইবরিশাল এলাকার বাসিন্দা আজম মিয়া জানান, স্থানীয়রা দ্রুত ডাকাতদের ধাওয়া করলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেননি।

চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাহেদ খান জানান, তিনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন এবং আরও বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে। রাজশাহী নৌপুলিশের সুপার নুরুজ্জামান বলেন, তাদের ফোর্সের সংখ্যা সীমিত, তবে তারা জেলা পুলিশ সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

এ পর্যন্ত কুড়িগ্রামের চিলমারী এলাকায় একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৯ জানুয়ারির ডাকাতি এবং গত বছরের ২১ ডিসেম্বরের ডাকাতির ঘটনাও উল্লেখযোগ্য। এই ধারাবাহিক ডাকাতি যাত্রীদের জন্য বড় ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং নৌযাত্রাকে ভয়ংকর করে তুলেছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী থানাধীন রমনা নৌ-বন্দর ফেরিঘাটে কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা ও পুলিশ সুপার মোঃ মাহাফুজুর রহমান উপস্থিতিতে নৌ ডাকাতি রোধে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদী সহ কুড়িগ্রাম জেলার সকল নদী সমূহে ডাকাতি প্রতিরোধকল্পে করণীয় বিষয় সম্পর্কে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় স্থানীয় জনসাধারণ নৌ পুলিশের জনবল বৃদ্ধি, নৌ পুলিশের জন্য একটি শক্তিশালী স্পিডবোট বরাদ্দ, চিলমারী জোড়গাছ হাটের দিন করে পুলিশি টহল বৃদ্ধি, ডাকাতদল কে দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় আনা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দাবি উপস্থাপন করা হয়।

কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ শক্তিদিয়ে কাজ করে যাবে। সেই সাথে তিনি অত্র চিলমারী উপজেলার স্থানীয় এলাকাবাসীর সহাযোগীতা কামনা করেন। সকলের সহযোগীতায় এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে সকলকে একাগ্রচিত্তে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার পরামর্শ প্রদান করেন। পুলিশ বাহিনী তাদের দায়িত্ব যথারীতি পালন করে যাবে মর্মে জানান। এছাড়াও জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন বিগত দিনে যে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে সেটা সত্যি অত্যন্ত দুঃখজনক, ভবিষ্যতে চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদে এরকম ডাকাতির ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করবেন বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন জনসাধারণ ইচ্ছে করলে সব কিছুই করা সম্ভব, জনগণ যদি আমাদের সহায়তা করে তাহলে ব্রহ্মপুত্র নদে আর কোন ডাকাতি হবে না বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার সম্মানিত জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা, পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান, নাগেশ্বরী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (সহকারী পুলিশ সুপার, ফুলবাড়ী ও নাগেশ্বরী সার্কেল এবং চলতি দায়িত্বে উলিপুর, চিলমারী সার্কেল) মোঃ মোজাম্মেল হক, চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক, ডিআইও-১ মোঃ আলমগীর হোসেন, চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুশাহেদ খান, ঢুষমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশরাফুল ইসলাম, ইনচার্জ চিলমারী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি মোঃ ইমতিয়াজ কবির, সাবেক,সাধারণ সম্পাদক চিলমারী উপজেলা বিএনপি মোঃ মতিন শিরিন সরকার, সদস্য,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখা মোঃ আব্দুর রহমান সহ চিলমারী উপজেলার নাগরিবৃন্দ।

শেয়ার করুন

কুড়িগ্রামে বেড়েছে নৌ ডাকাতি, প্রশাসনের তৎপরতা

সময় ০১:২৮:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী-রাজিবপুর নৌপথে একের পর এক নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। নৌ ডাকাতির ঘটনায় জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীগুলো তৎপর ভূমিকায় রয়েছে।

গত দশ দিনে এই পথে দুটি বড় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি চিলমারী উপজেলার কড়াইবরিশাল খেয়াঘাটে সশস্ত্র ডাকাতরা দুটি যাত্রীবাহী নৌকায় হামলা করে, যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা লুট করে এবং গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার পরও ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

নৌকা মাঝি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ডাকাতরা তার নৌকাতেও হামলা চালায় এবং ৫৭ হাজার টাকা লুট করে। তিনি অভিযোগ করেন যে, সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা নির্বিকার ছিলেন এবং তাদের কোনও সহায়তা করেননি। কড়াইবরিশাল এলাকার বাসিন্দা আজম মিয়া জানান, স্থানীয়রা দ্রুত ডাকাতদের ধাওয়া করলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেননি।

চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাহেদ খান জানান, তিনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন এবং আরও বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে। রাজশাহী নৌপুলিশের সুপার নুরুজ্জামান বলেন, তাদের ফোর্সের সংখ্যা সীমিত, তবে তারা জেলা পুলিশ সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

এ পর্যন্ত কুড়িগ্রামের চিলমারী এলাকায় একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৯ জানুয়ারির ডাকাতি এবং গত বছরের ২১ ডিসেম্বরের ডাকাতির ঘটনাও উল্লেখযোগ্য। এই ধারাবাহিক ডাকাতি যাত্রীদের জন্য বড় ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং নৌযাত্রাকে ভয়ংকর করে তুলেছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী থানাধীন রমনা নৌ-বন্দর ফেরিঘাটে কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা ও পুলিশ সুপার মোঃ মাহাফুজুর রহমান উপস্থিতিতে নৌ ডাকাতি রোধে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদী সহ কুড়িগ্রাম জেলার সকল নদী সমূহে ডাকাতি প্রতিরোধকল্পে করণীয় বিষয় সম্পর্কে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় স্থানীয় জনসাধারণ নৌ পুলিশের জনবল বৃদ্ধি, নৌ পুলিশের জন্য একটি শক্তিশালী স্পিডবোট বরাদ্দ, চিলমারী জোড়গাছ হাটের দিন করে পুলিশি টহল বৃদ্ধি, ডাকাতদল কে দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় আনা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দাবি উপস্থাপন করা হয়।

কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ শক্তিদিয়ে কাজ করে যাবে। সেই সাথে তিনি অত্র চিলমারী উপজেলার স্থানীয় এলাকাবাসীর সহাযোগীতা কামনা করেন। সকলের সহযোগীতায় এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে সকলকে একাগ্রচিত্তে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার পরামর্শ প্রদান করেন। পুলিশ বাহিনী তাদের দায়িত্ব যথারীতি পালন করে যাবে মর্মে জানান। এছাড়াও জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন বিগত দিনে যে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে সেটা সত্যি অত্যন্ত দুঃখজনক, ভবিষ্যতে চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদে এরকম ডাকাতির ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করবেন বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন জনসাধারণ ইচ্ছে করলে সব কিছুই করা সম্ভব, জনগণ যদি আমাদের সহায়তা করে তাহলে ব্রহ্মপুত্র নদে আর কোন ডাকাতি হবে না বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার সম্মানিত জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা, পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান, নাগেশ্বরী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (সহকারী পুলিশ সুপার, ফুলবাড়ী ও নাগেশ্বরী সার্কেল এবং চলতি দায়িত্বে উলিপুর, চিলমারী সার্কেল) মোঃ মোজাম্মেল হক, চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক, ডিআইও-১ মোঃ আলমগীর হোসেন, চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুশাহেদ খান, ঢুষমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশরাফুল ইসলাম, ইনচার্জ চিলমারী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি মোঃ ইমতিয়াজ কবির, সাবেক,সাধারণ সম্পাদক চিলমারী উপজেলা বিএনপি মোঃ মতিন শিরিন সরকার, সদস্য,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখা মোঃ আব্দুর রহমান সহ চিলমারী উপজেলার নাগরিবৃন্দ।